এস আহমেদ:
ডেটলাইন ১৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যা গড়িয়ে ঘড়ির কাটায় তখন পৌণে আটটা বেজেছে। ডালমিল মোড়স্থ নিজস্ব অফিসের সামনে দাড়িয়ে ছিলেন ১৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসান শেখ। হত্যার উদ্দেশ্যেই একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী এসে তার ওপর অতর্র্কিত হামলা চালায়। পাঁচটি মোটরসাইকেলযোগে ওরা মোট ১২জন এই কিলিং মিশনে আসে। মোটরসাইকেল থেকে নামতেই সন্ত্রাসীরা একেকজন চাপাতি, সামুরাই, রামদা সহ নানান অস্ত্র বের করে হাসানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ধারালো অস্ত্রের কোপে এসময় হাসানের পিঠে একাধীক স্থানে গভীর ক্ষত সৃৃষ্টি হয়। প্রাণ রক্ষার্থে সে দৌড়ে পাশ্বর্র্র্তী এক বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ে। এরপরও প্রায় ১০মিনিট সন্ত্রাসীরা ওই বাড়ির সামনে অবস্থান নেয় এবং এলাকাবাসীর ভীড় বাড়লে তারা কেটে পড়ে। আহত হাসানকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
শুক্রবার দুপুরে খুুলনাটাইমস’র এই প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই লোমহর্র্ষক ঘটনার বর্ণনা দেন মোঃ হাসান শেখ। এসময় তিনি বলেন, মূলত: কিলিং মিশন নিয়েই সন্ত্রাসীরা তার ওপর আক্রমণ করে। তবে তারা সকলেই ভাড়াটে সন্ত্রাসী। স্থানীয় শেখপাড়া এলাকার লোহাপট্টিতে তাদের বসবাস। তাদের অনেককেই সনাক্ত করা গেছে। তার মতে, হামলায় অংশ নেয়া দূূর্বৃত্তরা টাকার বিনিময়েই এসব সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ডে অংশ নিয়ে থাকে।
এই যুবলীগ নেতা আরও বলেন, এই হামলার নেপথ্যে বাগানবাড়ির ‘ইয়াকুব রাজা’ নামের এক ব্যবসায়ীসহ একাধীক ব্যক্তির সম্পৃৃক্ততা থাকতে পারে। তাছাড়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে নিজ দলের কতিপয় ব্যক্তি এই হামলা চালাতে পারে। পাশাপাশি ১৫ আগস্টে চাঁদাবাজির অভিযোগে ‘সুজন’ নামের একজনকে গত ১৪ আগস্ট পুলিশে সোর্পদ করা হয়। হামলার দিন বৃহস্পতিবার সেই ব্যক্তি তিন দফায় ফোন করে হাসানের অবস্থান জানার চেষ্টা করে। হাসান আরও জানান, সন্দেহজনক ব্য্যক্তিদের নাম আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে জানানো হয়েছে। দ্রæতই হামলাকারী ও তার নেপথ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন সে।
হাসপাতালে কর্র্তৃব্যরত ইন্টানি চিকিৎসক খুলনাটাইমসকে জানিয়েছে, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার পিঠে গভীর ক্ষত সৃৃষ্টি হয়েছে। সেখানে ১৮টি সেলাই দেয়া হয়েছে। তাকে টানা বিশ্রামের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমতাজুল হক খুলনাটাইমস’র কাছে জানান, লিখিত কোন অভিযোগ না পাওয়ায় এই ঘটনায় কোন আইনি পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে হামলায় জড়িতদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তি ইয়াকুব রাজা খুলনাটাইমসকে বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করছে। আদৌ এই ঘটনার সাথে তিনি জড়িত নন।
উল্লেখ্য, হাসান শেখকে সম্প্রতি খুলনা মহানগর যুবলীগের ১৯নং ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। তবে নানান অভিযোগে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।