কে এইচ এম:
রোববার রাত থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, সেই সাথে দিনকে দিন তাপমাত্রা কমছে। বাতাসের গতি বেগও বাড়ছে। হঠাৎ এই আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। গত কয়েকদিনে নগরীর শিশু হাসপাতালের ঠান্ডাজনিত কারণে শিশুরা ডায়ারিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও মেডিসিন ইউনিটেও আগের তুলনায় প্রতিদিন ১০-১৫ জন বেশি রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
খুলনা আবহাওয়াবীদ আমিরুল আজাদ সোমবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও আকাশ মেঘলা থাকায় তাপমাত্রা দিনকে দিন কমে আসছে। ফলে শীতের প্রভাবটা পরতে শুরু করেছে। গত তিন দিনে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৬ ডিঃ সেঃ কমেছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিটে সহকারি রেজিস্ট্রার ডাঃ শৈলান্দ্র নাথ বিশ্বাস সোমবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদককে বলেন, ঠান্ডাজনিত কারণে শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করা নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ঠান্ডাজনিত কারণে শিশুরা নিউমোনিয়া, ডায়ারিয়া, বর্ণকিউলাইটিস, সর্দি, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া ঠান্ডায় বয়স্করা এ্যাজমা, বর্নকাইটিস ও সিওপিডি, হার্টের করনীয় রোগ বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এ সময় শিশুদের গরম কাপড়, ঠিকমত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রাখা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, বিশুদ্ধা পানি পান এবং বড়দের জন্য বিশেষ করে যাদের এ্যাজমা ও অন্যান্য শ্বাসকষ্টোজনিত রোগ আছে তাদেরকে সালবিউটামল জাতীয় ব্রংকোডায়লেটর জাতীয় খাবার খাওয়া উপদেশ দেন। এতে যদি শ্বাসকষ্টো না কমে তাহলে সাথে সাথে চিকিৎসার সরান্নপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে নিউমোনিয়া ও ডায়ারিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন অন্যান্য তুলনায় ১০-১৫ জন রোগী বেশি চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। তিি
জান্নাতুল ফেরদৌস। বয়স ১৫ মাস। গত শুক্রবার থেকে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হন। মংলা দিগরাজ এলাকার বাসিন্দা বাবা মোঃ আঃ রহিম বলেন, নিউমোনিয়ার আক্রান্ত হওয়ার পর রোববার রাতে পাতলা পায়খানার পাশাপাশি বমি শুরু করে। স্থানীয় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ডায়ারিয়া কমতে সময় লাগবে, তাই দেরি না করেই সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই হাসপাতালে ৫ মাসের বয়সী আঃ রহিম নিউমোনিয়া জনিতকারণে সোমাবর ওই হাসপাতালে পি-৪ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। বরিশালের বাসিন্দা বাবা বজলুর শিকাদার বলেন, হঠাৎ ঠান্ডায় নিউমোনিয়া আক্রান্ত হন।
ওই ওয়ার্ডে সিনিয়র স্টাফ নার্স লাকি ইয়াসমিন সোমবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমানে শিশুরা ডায়ারিয়ার পাশাপাশি নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীর চাপ বেশি থাকছে। কেবিনেও খালি থাকছে না। দিনে বেলায় দুপুরের পর অনেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছে, আবার সন্ধ্যার পর থেকে চাপ বেড়ে যায়। তিনি বলেন, গত ৩-৪ দিনে মেডিসিন ওয়ার্ডে নিউমোনিয়ার শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ডায়ারিয়া ওয়ার্ডেরও একই অবস্থা।
খুলনা আবহাওয়াবীদ আমিরুল আজাদ বলেন, ২৮ অক্টোবর সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ২১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ ছিল ৩১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলিসিয়াস, গত ২৯ অক্টোবর খুলনায় সর্বনি¤œ তাপামাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেঃ, সর্বোচ্চ ছিল ৩০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ৩০ অক্টোবর সর্বনি¤œ ছিল ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেঃ ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি বলেন, সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ঘন্টায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ২ কিলোমিটার। ওই দিনই দুপুর ৩টায় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় দুই কিলোমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৪ কিলোমিটারে দাড়ায়। ##