লবনচরা হাজী আব্দুল মালেক ছালেহিয়া দারুচ্ছুন্নাহ এতিমখানা নিবাসীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

0
1093

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
খুলনা মহানগরীর লবনচরাস্থ হাজী আব্দুল মালেক ছালেহিয়া দারুচ্ছুন্নাহ এতিমখানায় অনিয়ম দূর্নীতি রয়েছে বহাল তবিয়তে দেখার কেউ নেই। খুলনা মহানগরীর শিপইয়ার্ড লবনচরা এলাকায় ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ এতিমখানাটি। প্রতিষ্ঠার পর ২০০০ সাল থেকে এতিমখানাটি সরকারের ক্যাপিটেশন গ্রান্ড সুবিধা প্রাপ্ত হয়। এমপিও ভুক্ত এ মাদ্রাসাটির শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছে ১৬ জন । আর এই মাদ্রাসাটির আর্থিক পরিচালনায় নেই কোন স্বচ্চতা । আর এই অস্বচ্ছ আর্থিক অনিয়মের মুল হোতা মাদ্রাসার অফিস সহকারী আব্দুর রহিম । হাজি আব্দুল মালেক ছালেহিয়া দারুচ্ছুন্নাহ এতিম খানায় কাগজে কলমে ১৭ জন ছাত্র গ্রান্ড পেলেও বাস্তবে ছাত্র রয়েছে ১২জন। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে প্রতিমাসে ১৭ হাজার টাকা করে ৬মাস পর পর এক লক্ষ দুই হাজার টাকা এককালিন ক্যাপিটেশন গ্রান্ডের টাকা পেয়ে থাকেন । সে হিসেবে এতিমখানাটি তাদের নিবাসীদের জন্য প্রতি বছরে ২লক্ষ ৪হাজার টাকা ক্যাপিটেশন গ্রান্ড সুবিধা গ্রহন করেন । আর এই দুইলক্ষ ৪হাজার টাকাই নয় এতিমখানায় বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দান এবং চাঁদার রশিদ থেেেক আয় ব্যায়ের নেই কোন স্বচ্ছতা । মাদ্রাসার রেজিষ্টারে দেখা যায় ১-৭-২০১৩ সাল হইতে ৩০-৬-২০১৬ তারিখ পর্যন্ত নিরিক্ষা করা হলো । আর একসাথে এই তিন বছরের নিরিক্ষায় স্বাক্ষর করেন খুলনা জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের সমাজ সেবা অফিসার(রেজিঃ) শায়লা ইরিন । শায়লা ইরিন ১-৭-০১৩ থেকে ৩০-৬-২০১৬ ইং তারিখ নিরিক্ষা করছেন অথচ তার স্বাক্ষরে নিরিক্ষা তারিখ উল্লেখ আছে ৩০-৫-২০১৭ইং । অপরদিকে এতিমখানার সুপারিনন্টেড আলহাজ্ব মোঃ শাহাদাৎ হোসেন ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সালে দায়িত্বে ছিলেন না অথচ খরচের রেজিষ্টারে আয় ব্যায়ের নিরিক্ষার ১৩ সাল থেেেক তার স্বাক্ষর রয়েছে । শাহাদাৎ হোসেন দাবী করেন আমি গত ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে এতিমখানার নিবাসীদের দায়িত্ব পালন করছি । এর আগে রহমান নামে এক ব্যাক্তি নিবাসীদের দায়িত্ব পালন করছে । রহমান টাকা পয়সার অনিয়ম করায় তাকে অব্যাহতি দেয়ারপর আমাকে গত বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের ১৭ তারিখ সুপারিনটেন্ড এর দায়িত্ব অর্পন করা হয় । রেজিষ্টার খাতায় ১৩ সাল থেকে ১৬ সালের আয় ব্যায় হিসাবের নিরিক্ষায় সুপারিনটেন্ড হিসেবে আপনার স্বাক্ষর রয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,সমাজ সেবা অফিসার ও আমাদের মাদ্রাসার অফিস সহকারী আব্দুর রহিম আমাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে । ক্যাপিটেশন গ্রান্ড এর ১৭/১৮ অর্থ বছরের হিসাবের বিষয় জানতে চাইলে তিনি একটি টালিখাতা বের করে দেখান । টালি খাতায় দেখাযায় মে ২০১৮ জমা ৫/৫/১৮ এবং ৫০৫৮০৭২নং চেক থেকে উত্তোলন ২৭০০০ টাকা,ফেরদোস স্যার জমা-৭৫০টকা, আবার ১৬-৫-১৮ এবং ৫০৫৮০৭২নং চেক থেকে উত্তোলর ২২০০০টাকা,আবার ২৬-৫-১৮ তারিখ এবং ৫০৫৮০৭২নং চেক থেকে উত্তোলন ২২৬০০টাকা,অপর আরেকটি সাদা কাগজে হিসাবে উল্লেখ আছে জানুয়ারী১ ৮ হইতে ১ জলাই পর্যন্ত সর্বমোট খরচ লেখা মাদ্রাসা সংস্কার ব্যায় ১লক্ষ ৯৪ হাজার দুইশত টাকা,বাজার খরচ ৫১ হাজার ৭০টাকা,বাবুর্চী ও সুপারের বেতন ১৫ হাজার ৫শ টাকা ,সর্বমোট ২লক্ষ ৬০হাজার ৭৭০টাকা । সুপারিনন্টেড আলহাজ্ব মোঃ শাহাদাৎ হোসেন মাদ্রাসার এমপিও ভ’ক্ত আরবি শিক্ষক হওয়া সত্বেও এতিমদের ক্যাপিটেশন গ্রান্ডের টাকা থেকেও বেতন নিচ্ছেন । এ সময় মোঃ শাহাদাৎ হোসেনকে প্রশ্ন করা হয় আপনি সরকারী এমপিও ভুক্ত শিক্ষক হয়েও কিভাবে এতিমখানার টাকা থেকে বেতন নেন । তিনি জানান আমি কোন টাকা নেই না খরচও করিনা প্রয়োজনীয় সময় আমার কাছ থেকে আঃ রহিম স্বাক্ষর নেয় । আপনি একজন আরবি শিক্ষক হয়ে খরচের হিসাব না দেখে কি ভাবে স্বাক্ষর করেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বিভিন্ন ভাবে এ প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন ।
এছাড়াও এতিম নিবাসীদের রেষ্টার নেই, আদায়কৃত ক্যাশ বহি পাওয়া গেলেও ২ বৎসর যাবৎ আয় ব্যায় রেজিষ্টারে লেখা হচ্ছে না, চাঁদা আদায়ের রশিদ বহি দ্বারা চাঁদা অনুদান আদায় করলেও স্বার তারিখ বিহীন আদায় করছেন, বিল ভাউচার সংরক্ষণ করা হয়নি, নিবাসীদের খাওয়া দাওয়ার কোন মেনু নেই এবং খাওয়া দাওয়ার মান সন্তোষ জনক নয়, বর্তমান কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাদাৎ হোসাইন পাশাপাশি তিনি এতিমখানার সুপারেন্টেনডেন্ট হিসেবে মোটা অংকের অর্থ বেতন নেন এবং তিনি হাজী আব্দুল মালেক ছালেহিয়া দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার এমপিও ভুক্ত আরবী শিক্ষক। ১৭ জন নিবাসীর বিপরীতে প্রত্যেক ৬ মাস পর পর ১ লক্ষ ২ হাজার টাকা বরাদ্দ পান সমাজ সেবা অধিদপ্তর খুলনা থেকে এবং এতিমখানার নামে আঞ্চলিক আদায় হয় প্রচুর অর্থ। যার কোন সঠিক হিসাব কমিটির কাছে নেই। এ এতিমখানার নিবাসীদের নামে আদায়কৃত টাকা এ ভাবেই বছরের পর বছর হরিলুট করে খাচ্ছেন সুপারিনন্টেড আলহাজ্ব মোঃ শাহাদাৎ হোসেন ও মাদ্রাসার অফিস সহকারী আব্দুর রহিম ।