এম জে ফরাজী : অবশেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সেতু পাচ্ছে ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ও শোভনা ইউনিয়নের ৫ গ্রামের প্রায় ৮ হাজার মানুষ। এ দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা আড়োখালী নদীর বাগআচড়া-কুলবাড়িয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন স্থানটিতে সেতু নির্মাণের জন্য এলজিইডি থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মন্ত্রী নিজেই বিষয়টি এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, কালজয়ীর স্বাক্ষী তেলিগাতী নদীর শাখা আড়োখালী নদী। এ নদীটি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ৫নং আটলিয়া ইউনিয়ন ও ৭নং শোভনা ইউনিয়নের বৃহৎ একটি অংশকে বিভক্ত করেছে। নদীটি এই ২টি ইউনিয়নের সীমানা বেষ্টিত। এই নদীর ওপর নেই কোনও সেতু। সেতুর পরিবর্তে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হতে হয় পার্শ্ববর্তী দুই ইউনিয়নের ৫ গ্রামের প্রায় ৮ হাজার মানুষের। আড়োখালী নদীর ওপর সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষজনের। আর এই দুর্ভোগ দূর করতে বাগআচড়া-কুলবাড়িয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন স্থানটিতে সেতু স্থাপন এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে গত ৩০ আগস্ট অনলাইন পত্রিকা ‘খুলনা টাইমস ডট কম’ এ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
আরও জানা গেছে, বিগত দিনে অনেক জনপ্রতিনিধি সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও আজও তার সঠিক বাস্তবায়ন হয়নি। জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনের সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সেতু নির্মাণের জন্য ডিও লেটার দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। চলতি বছরের ২৩ আগস্ট মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ’র সাথে এলাকাবাসীসহ আওয়ামী লীগ নেতা প্রনব সরদার, গাজী আলী বাদশা, মেম্বর দেবব্রত সরদার ও সাধন সরদার দেখা করেন এবং সেতু নির্মাণের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। এলাকাবাসীর দাবিটি শোনার পর মন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট দফতরে ফোন করে সেতু নির্মাণের জন্য দ্রুত কাযর্কর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। তারই ফলশ্রুতিতে আড়াই বছর পরে সেতু পাচ্ছে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে বাগআচড়া-কুলবাড়িয়া খেয়াঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য আমি এলজিইডিতে ডিও লেটার দিয়েছিলাম। অনেকদিন পরেও কাজ না হওয়ায় পরে আবার ফোন করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেই। যার ফলে সম্প্রতি এলজিইডি থেকে সেতু নির্মাণের জন্য সাড়ে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’
তাৎক্ষনিক এক ঢাকায় বসবাসকারী বাগআচড়া গ্রামের বাসিন্দা গাজী আলী বাদশা জানান, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি বাস্তবায়ন হতে চলেছে। গতকাল খুশির খবরটি শুনে ফেসবুকে কি লিখব ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। সাথে সাথে এলাকাবাসীকে ফোনে জানাই কিন্তু কেউ বিশ্বাস করতে পারছিলোনা। সরকারের মহান উদ্যোগে ডুমুরিয়ার প্রাণপুরুষ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপির মহান ভূমিকার কথা এলাকাবাসী ও আগামী প্রজন্ম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভুলবেনা। সরকারের এই উন্নয়নের কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আমি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মন্ত্রী মহোদয়কে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাসি সেতুটির বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ফুলতলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক নৃপেণ মণ্ডল জানান, ‘মন্ত্রীর প্রতি আমরা এলাকাবাসী আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। তার উদ্যোগে সাধারণ লোকজনের সাথে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও উপকৃত হলো।’