মুনিয়া খানম:
যে মারা যায় তার খবর কেউ রাখে না। আর যদিও রাখে, তা মারা যাওয়ার কিছু দিন পর্যন্ত, তাতে সে যত প্রতিষ্ঠিত মানুষ বা প্রতিভাবান ব্যক্তিই হোক না কেন। এমনই প্রতিভাবান শিল্পী ছিলেন রনি ঘোষ। তার জন্ম হয় খুলনা মহানগরীর নতুন বাজার বাঁশপট্টি রোডের ওসমান আলীর বাড়ীর তৃতীয় তলা ভবনের এক হিন্দু পরিবারে। তারা ছিলেন দুই ভাই আর দুই বোন। রনি ছিলেন বাবা মা ভাই-বোনের খুব আদারের পাত্রী। তার বাল্যকাল কাটিয়েছেন ফাতেমা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। অসম্ভব মেধাবী ছাত্রী হিসাবে স্কুলে পরিচিত ছিল। তারপর সরকারি সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে ও এইচ এস সি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফলাফল পেয়ে ছিলেন। তার ভেতরে কিছু প্রতিভা লুকায়িত ছিল। বাল্য কাল থেকে স্কুল জীবন থেকেই সে গানের মাধ্যমে সকলের মন জয় করেছিলেন সরকারি সুন্দরবন কলেজের লেখাপড়া শেষ করে বি,এল কলেজে ভর্তি হন। রনি খুলনা বেতারের এক জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তার গান ভোক্তা মহলে জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৯২ ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে তার গান খুলনার চারিদিকে তথা সকল শিল্পী মহলে আকষ্মিক জনপ্রিয়তা লাভ করে। কিন্তু আজ এই গুলো সব অতীত। আর অতীতের যন্ত্রনাদায়ক স্মৃতি। ঠিক তেমনি রবি ঘোষ ও আজ বর্তমান নয় অতীত। ২০০০ সাল আগমণের আগেই বিদায় নেন এই প্রতিভাবান শিল্পী রনি ঘোষ। সে দীর্ঘ দিন যাবৎ অসুস্থ থাকেন পরে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ধরা পড়ে যে তার দুইটি কিডনী নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তার চিকিৎসার জন্য তার বাবা মা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করেছিলেন। সকল শিল্পী মহল ও তার বন্ধু-বান্ধবী ও সকল শুভাকাঙ্খীরা ঝাপিয়ে পড়েছিল তার জন্য তার জীবন বাঁচাতে। খুলনার সকল পত্রিকাও তার সম্পর্কে আলোচনার ঢল পড়ে। তার চিকিৎসার জন্য ও তাকে ভারতেও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবশেষে তিনি জীবন ও মৃত্যুর মাঝে মৃত্যুর কাছে হেরে গিয়ে চির বিদায় নিয়েছিলেন না ফেরার দেশে। তার শেষ ঠিকানা হয়েছিল রূপসা শ্মশান ঘাটে। তিনি নগরীর হাজী মহসিন রোড এক বাড়ীতে মারা যান। তার মৃত্যুতে খুলনার সকল শিল্পী ও ভোক্তা এক অমূল্য সম্পদ হারিয়েছে। তার মত এমন প্রতিভাবান শিল্পী আজও খুলনা জন্ম হয়নি আর ভবিষ্যতে হয়ত হবেও না রনি ঘোষ আজও সকল খুলনাবাসীর তার পরিবার ও শিল্পীদের মাঝে রূপকথা হয়ে বেঁচে আছে। ##