প্রতারণার মাধ্যমে দ্বিতীয় দফায় মোংলায় বিকাশের আরো ৮৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা ব্যর্থ

0
356

মোংলা প্রতিনিধি:
প্রতারণার মাধ্যমে দ্বিতীয় দফায় মোংলায় বিকাশের আরো ৮৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বিকাশের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটরের চুরি হওয়া ব্যাংক চেকের মাধ্যমে সাবেক কর্মচারী শাহিন ওই টাকা তুলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। ওই প্রতারক প্রথম দফায় একই পন্থায় প্রতিষ্ঠানটির ৬০ লাখ হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পালিয়ে গিয়ে প্রায় সাড়ে তিন বছর আত্মগোপনে থাকার পর আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে ওই প্রতারক। এমনকি প্রতারণার মামলা থেকে রেহাই পেতে উল্টো তার করা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে শাহিন।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, বিকাশ লি:’র মোংলা, রামপাল, শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জের জোনাল ডিস্ট্রিবিউটর লাক্সমি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। এ প্রতিষ্ঠানে ২০১২ সালে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ শুরু করে শাহিন হাওলাদার। কাজের সুবাদে অল্প দিনেই বিকাশের স্থানীয় এজেন্টের বিশ্বস্ত কর্মচারী হয়ে ওঠে সে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক লেন-দেনের সার্বিক দায়িত্ব পালন করে আসছিল কর্মচারী শাহিন। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিশ্বস্ততার সুযোগে ২০১৪ সালের ১২ জুন ব্র্যাক ব্যাংকের বাগেরহাট শাখা থেকে গোপনে প্রতারণার মাধ্যমে ৬০ লাখ টাকা তুলে নিয়ে পালিয়ে যায় শাহিন। আর এ টাকা নিয়ে আতœগোপনে থাকা অবস্থায় ভারত, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে সফর করেন তিনি। এ ঘটনায় বিকাশের স্থানীয় এজেন্ট মো: হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে বাগেরহাট সদর থানায় ২০১৪ সালের ১২ জুন একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রতারক শাহিন আত্মগোপনে থেকে নানা কৌশল অবলম্বন করে। এক পর্যায়ে প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর এলাকায় ফিরে এসে বিকাশ এজেন্ট মো: হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর মিথ্যা অপহরণ ও মানব পাচার মামলা দায়ের করে। আর এ মামলাটির তদন্ত শুরু করে বাগেরহাট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পুলিশের বিশেষ এ শাখার দীর্ঘ তদন্তে বেরিয়ে আসে ৬০ লাখ টাকা নিয়ে প্রতারক শাহিনের পালিয়ে যাওয়া এবং আত্মগোপনে থাকার মূল রহস্য। পিবিআই তাদের তদন্তে ও ইমেগ্রেশন শাখায় খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয় প্রতারক শাহিন ওই টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর নিজের পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভারত, দুবাইসহ একাধিক দেশে ভ্রমণ করে। ফলে এজেন্ট মালিকের বিরুদ্ধে কর্মচারী শাহিনের দায়ের করা অপহরণ ও মানব পাচার মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয় এবং পিবিআই এ সংক্রান্ত চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে। আর এ মামলায় পরাজয় নিশ্চিত হওয়ার পর অর্থ লোভী প্রতারক শাহিন স্থানীয় এজেন্টের চুরি যাওয়া চেকের মাধ্যমে গত ৮ জুলাই বাগেরহাট ব্র্যাক ব্যাংক থেকে দ্বিতীয় দফায় আবারো ৮৭ লাখ টাকা তুলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এজেন্ট মালিক হারুনকে বিষয়টি তাৎক্ষনিক অবগত করায় প্রতারক শাহিনের টাকা তুলে নেয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। প্রভাবশালী একটি মহলের ছত্রছায়ায় একের পর এক প্রতারণার ফাঁদসহ বিকাশের স্থানীয় এজেন্ট হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে ধুরন্ধর শাহিন। এ বিষয়ে শাহিন তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ এড়িয়ে গিয়ে বলেন, তার কাছে বিকাশের চেক থাকায় টাকা তুলে নেয়ার জন্য ব্যাংকে চেক জমা দিয়েছেন।
অপরদিকে বিকাশ এজেন্ট হারুন অর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, তার বিশ্বস্থতার সুযোগ নিয়ে সাবেক কর্মচারী শাহিন প্রথম দফায় প্রতারণার মাধ্যমে ৬০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এছাড়া দ্বিতীয় দফায়ও অনুরুপভাবে আরও ৮৭ লাখ টাকা তুলে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। তিনি আরো বলেন, প্রতারক শাহিন তার বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত্রের পাশাপাশি তাকে এবং তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে।