পাইকগাছায় আমনের আশানুরুপ ফলন

0
368

শেখ নাদীর শাহ্: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলসহ আবহাওয়ার প্রতিকূলতার পরও পাইকগাছায় আমনের আশানারূপ হয়েছে বলে কৃষি অফিস দাবি করলেও কৃষকরা বলছেন ভিন্ন কথা,ঘূর্ণিঝড়সহ নানা প্রতিকূলতায় গতবারের তুলনায় এবার আমনের ফলন কম হয়েছে। বরাবরের মত সুন্দরবন উপকূলীয় লবণ পাণির চিংড়ি অধ্যুষিত উপজেলায় খানিকটা দেরিতে শুর” হওয়া আমন আবাদের কারণে দেরিতেই শুর” হয়েছে কর্তন মৌসুম। অপেক্ষাকৃত উঁচু ক্ষেতের ধান কর্তন শেষ হলেও শেষ হয়নি নিচু ঘেরাঞ্চলের ক্ষেতের কর্তন। কৃষকরা বলছেন,আগামী ৭/১০ দিনের মধ্যে শেষ হবে ঐ সকল অঞ্চলের কর্তনসহ মাড়াইয়ের কাজ।
কৃষি অফিস থেকে শুর” করে কৃষকরা জানান,জলবায়ু পরিবর্তনের বির”প প্রভাব,অধিকাংশ চাষের জমিতে চিংড়ি ঘের থেকে শুর” করে আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিবেশে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় খানিকটা দেরিতে শুর” হয় আবাদ মৌসুম। সঙ্গত কারণেই তাই দেরিতেই শুর” হয় কর্তন। আর এসকল কারণে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এ অঞ্চলে শষ্য আবাদে তৈরী হয়েছে মৌসুমের ব্যবধান।
কৃষকরা আরও জানান,চলতি বছর আবাদের ফলন কম হলেও বর্তমানে দাম ভাল পাওয়ায় চিংড়ি ছেড়ে ধান আবাদে আগ্রহ হারায়নি তারা। সূত্র জানায়,প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে, সাড়ে ৮শ থেকে সাড়ে ৯শ টাকা পর্যন্ত দরে। ফলে পুষিয়ে উঠছেন তারা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট ১৬ হাজার ৯৬৪ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে আবাদকৃত উঁচু ক্ষেত গুলোর ধান কাঁটা শেষ হয়েছে ইতোমধ্যে আর অপেক্ষাকৃত নিচু ও মৎস্য লিজ ঘেরে আবাদকৃত জমির ধান কাটার কাজও রয়েছে শেষ পর্যায়ে। সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানান তারা। অচিরেই বাকি অংশের ধান কর্তন শেষ হবে বলেও দাবি তাদের। চলতি মৌসুমে প্রতি হেক্টর জমিতে হাইব্রীড ৬ মেট্রিক টন,উফশী ৫ মেট্রিকটন ও স্থানীয় জাতের ৩.৮ মেট্রিকটন হারে ফলন হয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্ঠ অধিদপ্তর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র আরো জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে উপজেলার গদাইপুর,হরিঢালী,কপিলমুনি ও রাড়ুলী ইউনিয়নে আবাদকৃত আমন ধানের বেশ ক্ষতি সাধন হয়েছে। তবে উপজেলার অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকার ৬টি ইউনিয়নে আমনের ফলন তুলনামূরক ভাল হয়েছে।
সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে দেখা যায়, উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাশিমনগর, রামনগর, রেজাকপুর, গদাইপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের একাধিক কৃষক জানান, বুলবুলসহ জলবায়ু পরিবর্তনজণিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে গত বারের তুলনায় এ বছর বিঘা প্রতি প্রায়য় ২/৫ মণ কোথাও তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ধানের উৎপাদন কম হয়েছে। তাছাড়া ধান কাটার মুখেও অনাকাংখিত বুলবুল ও অনাবৃষ্টিতে অনেক ক্ষেতের ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়ায় বেশি খতিগ্রস্থ হয়েছেন তারা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম খুলনা টাইমসকে জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের আমন ধানের বেশ কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে উপজেলার নিম্নাঞ্চলে তুলনামূলক আমনের ফলন ভাল।
এর কারণ জানতে চাইলে তিনি খুলনা টাইমস,কে জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে অতিবৃষ্টির ফলে নিন্ম জমিতে লবণাক্ততা কমে মাটি পরিশোধিত হওয়ায় আমনের ফলন ঐ অঞ্চলে আশানরূপ ভাল হয়েছে। উঁচু এলাকার জমিতে আমনের ৫ শতাংশ পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলসহ সকল প্রতিবন্ধকতার মাঝেও পাইকগাছায় আমনের ফলন আশানারূপ হয়েছে বলেও দাবি তার ।