নদী শাসনের ব্যবস্থা নেই, ৩’শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য বাধ বিলিনের শংকা

0
693

শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি :
১৫ নভেম্বর সিডর দিবস। সুপার সাইক্লোন সিডরের ১০ বছর পরে শরণখোলা বাসীর প্রাণের দাবী টেকসই বেরীবাধ নির্মাণ কাজ শুরু হলেও এলাকার মানুষের মাঝে বাধের স্থায়ীত্ব নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো ) ৩৫/১ পোল্ডারের সিডর বিধ্বস্ত বাগেরহাটের শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৩’শ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে বেরিবাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। কিšতু মেগা বাজেটের এ বেরিবাঁধে নদী শাসনের ব্যবস্থা না থাকায় এলাকার মানুষ ওই প্রকল্পের স্থায়ীত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে । চীনের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বেরিবাঁধ নির্মানের কাজ করছে ্।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরের সৃষ্ট জলোচ্ছাসে শরণখোলা উপজেলাসহ গোটা দক্ষিনাঞ্চল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে সহ¯্রাধিক মানুষের প্রানহানী ঘটে। হাজার হাজার বাড়ীঘর ও গাছ পালা বিধস্ত হয়। ধসে যায় মাইলের পর মাইল ওয়াপদা বেরীবাধ। পরবর্তীতে উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে আধুনিক, টেকসই ও উঁচু বেরিবাঁধ নির্মানে দাবী ওঠে। পরবর্তীতে বাস্তবতা উপলদ্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শরণখোলা মোড়েলগঞ্জ বাসীকে দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে একটি উঁচু ও টেকসই বেরিবাঁধ নির্মানের নির্দেশ দেন।
বেরীবাধ নির্মাণ প্রকল্পের প্রকৌশলী শ্যামল কুমার দত্ত জানান, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৩’শ কোটি টাকা ব্যায়ে ৩৫/১ পোল্ডারের ৬৩.২ কিলোমটিার দীর্ঘ বেরিবাঁধের কাজ সি.এইচ.ডবিøউ,ই নামে চাইনিজ একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তিন বছরে বাস্তবায়ন করবে। বেরিবাঁধটি টপে চওড়ায় ৪.৫০ মিটার এবং বর্তমানের চেয়ে স্থান ভেদে দু থেকে আড়াই মিটার উঁচু হবে। অত্র পোল্ডারে বেরিবাঁধ নির্মানে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ১ হাজার ৮’শ ৯৯ জন। প্রকল্পের কাজের মধ্যে বলেশ্বর নদী তীর এলাকার ১১.৭৫০ কিমি সিসি বøকের কাজ, ১৫টি ড্রেনেজ ¯øুইস গেট, ১৭টি ফ্লাসিং ¯øুইস গেট ও ৫টি ¯øুইস গেট নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের মধ্যে মাত্র দেড় কিলোমিটার নদী শাসনের কাজ ধরা হয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য মাত্র ।
নদী শাসন ছাড়া বাধ নির্মাণ করা হলে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প জলে ভেসে যাবে এবং বাস্তব ভিত্তিক কোন কাজে আসবে না এমন অভিমত এলাকাবাসীর । ইতোমধ্যে সাউথখালীর গাবতলা ও বগী এলাকায় নতুন ওয়াপদা বেরী বাধ নির্মাণের স্থানে আকস্মিকভাবে কয়েকদফা শত শত মিটার এলাকা জুড়ে সিসি বøকসহ ওয়াপদা বেরীবাধ বলেশ্বর নদীতে ধসে পড়ে। এতে মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়েছে এবং নদী শাসনের বিষয়টি খুবই জোরালো হয়ে উঠেছে ।
এ ব্যপারে সি ই আই পি প্রজেক্ট খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আঃ হান্নান বলেন, নদী শাসনের বিষয়টি খুবই প্রয়োজনীয় তবে প্রকল্পটি যেহেতু বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে সেহেতু কনসালটিং ফার্মের মাধ্যমে নদী শাসনের বিষয়টি বিশ্ব ব্যাংকে অবহিত করতে হবে এবং সেখান থেকে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ পেলে নদী শাসনের কাজ করা যেতে পারে ।
সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন ও শরণখোলা শহর রক্ষা ও বেরিবাঁধ নির্মান বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ’ এর আহŸায়ক বিশিষ্ট সমাজ সেবক এম এ রশিদ আকন বলেন, নদী শাসন ছাড়া বেরীবাধ জনগনের কোন কাজে আসবেনা তারা নদী শাসনের কাজ দ্রæত শুরু করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান ।