ধুমপান: আর না!

0
211

গত ৩১ মে পালিত হলো বিশ^ তামাক মুক্ত দিবস। এবার এ দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, ‘আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, জীবন বাঁচাতে তামাক ছাড়ি’। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ধুমপানের ক্ষতির কারন জেনেও সবাই ধুমপানে অভ্যস্ত হন। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দেশে প্রতিবছর তামাক জনিত রোগে আক্রান্ত হয় ৪ লাখ মানুষ এবং মৃত্যু হয় ১ লাখ ৬০ হাজার জনের। ৩৫ শতাংশের বেশি মানুষ তামাক ব্যবহার করে। তামাক ব্যবহারকারীদের ৪৬ শতাংশ পুরুষ এবং ২৫ শতাংশ নারী। ধোয়াবিহীন তামাক মানে জর্দা, গুল ব্যবহার করে ২০ শতাংশের বেশি মানুষ। সিগারেট পান করে ১৪ শতাংশেরও বেশি মানুষ। ধুমপায়ী একজন মানুষ প্রতিমাসে সিগারেটের জন্য ব্যয় করে ১২ হাজার ১০০ টাকা। তারপরও প্রতিদিন বাড়ছে তামাকের প্রতি আসক্তি। বিশেষ করে উঠতি বয়সের যুব সমাজ সঙ্গদোষে তামাক আসক্ত হয়ে পড়ছে।
ধুমপানের ফলে মুখের ভেতর প্রদাহ, লাঞ্চের ওপর স্পট পড়া ও ক্ষুধা মন্দাভাব সৃষ্টি করে ধুমপানকারীর। সময়ের ব্যবধানে তা মরন ব্যাধি ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। সব কিছু জেনে বুঝেও ধুমপানের দিকে আসক্ত হচ্ছে যুব সমাজ। এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আলোচনা করলে তারা সেটা মেনে নেন। কিন্তু ধুমপান ছাড়তে পারেন না।
বাংলাদেশে জনসমাগমে প্রকাশ্য ধুমপান নিষিদ্ধ। যদিও আইনটি সংস্কারের কথা অনকেই বলছেন। সরকারও আইন সংস্কারের ব্যাপারে এক মত। কিন্তু ধুমপান সহজ লভ্য। পথে-ঘাটে সব খানেই তামাক জাতীয় দ্রব্য কিনতে পাওয়া যায়। সময়ের ব্যবধানে তামাক জাতীয় দ্রব্যের ওপর কর বাড়িয়ে মূল্য বৃদ্ধি হলেও ধুমপান ও গুল ব্যবহার থেকে মানুষকে ফেরানো সম্ভব হয় নি। এখন আর গনমাধ্যমে তামাক জাতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপনও প্রকাশ হয় না। তবে সিগারেট কোম্পানীগুলো জনস্বার্থে নানা বিজ্ঞাপনে তাদের সৌজন্যে প্রকাশ করে থাকে।
প্রতিটি মানুষই জীবন বাঁচাতে চায়, চায় জীবন সাজাতে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার গেøাবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে-২০১৭ বলছে, দেশের ৬৬.২ শতাংশ ধুমপায়ী এ অভ্যাস ছেড়ে দিতে চান। আর ধোয়া বিহিন তামাক সেবন কারীদের ৫৩ শতাংশ ছাড়ার পক্ষে। নির্দিষ্ট ঔষধ বা কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে এটা করা সম্ভব হলেও বাংলাদেশে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে এমন সুযোগ খুব একটা নেই। বেসরকারি পর্যায়ে যেটুকু রয়েছে তা নামে মাত্র। তাই দেশের হাসপাতালগুলোতে কাউন্সিলিংয়ের এমন সুযোগ তৈরি করা যেতে পারে। টেলিপরামর্শ সেবা চালু করে ধুমপানে অভ্যস্থ ব্যাক্তিদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। বিভিন্ন দিবসদের আনুষ্ঠানিকতায় নয়। প্রকৃত সুফল প্রত্যাশায় যথাযথ উদ্যোগ কাংক্ষিত ফল দিতে পারে।