দেবহাটার কুলিয়ায় আছাদুল হকের ঘোড়া নির্বাচনের দৌঁড়ে এগিয়ে

0
174

আব্দুর রব লিটু : দেবহাটার কুলিয়ায় আছাদুল হকের ঘোড়া নির্বাচনের দৌঁড়ে এগিয়ে । আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যেই প্রত্যেক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। এবারের নির্বাচনে পাঁচটি ইউনিয়নে ১৮জন চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ মেম্বর ও মহিলা মেম্বর পদের প্রার্থী মিলিয়ে মোট ২৫৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। প্রতিদ্বন্দী এসব প্রার্থীদের পোষ্টার, ব্যানার আর লিফলেটে ছেয়ে গেছে প্রায় প্রতিটি অলি-গলি। দুপুর থেকে রাত অবদি চলছে মাইকিং; গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ, মতবিনিময় আর ভোট এবং সমর্থন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে বর্তমানে ব্যস্ত সময় কাটছে প্রার্থীদের।
তবে পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে প্রশাসনসহ সর্বস্তরের মানুষের নজর এখন কুলিয়া ইউনিয়নের দিকেই। ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীসহ অপর আরেক হেভিওয়েট প্রার্থীকে দিনদিন পিছনে ফেলে নির্বাচনের দৌঁড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে ওই ইউনিয়নের টানা ২৮ বছরের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আছাদুল হকের ঘোড়া। ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা- সব বয়সের মানুষের সমর্থনে এগিয়ে থাকা আছাদুল হকের ঘোড়া ক্রমশ কুলিয়া ইউনিয়নের ভোটযুদ্ধে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীদের কাছে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ফলে ওই ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছেন আছাদুল হক। শুরুর দিকে আছাদুল হকের দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে প্রায় শতভাগ আশাবাদী ছিল কুলিয়া বাসী। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ হওয়া স্বত্বেও এবারের নির্বাচনে অদৃশ্য কারনে দলের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন আছাদুল হক। সেসময় তার সাথে সাথে হতাশ হয়েছিলেন ওই ইউনিয়নের প্রায় ২৪ হাজার ভোটারসহ তার অসংখ্য রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, অনুসারী ও কর্মী-সমর্থকরা।
আছাদুল হক বলেন, দলের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্ট পেয়েছিলাম, কিন্তু তাতে আমি ভেঙে যাইনি। দীর্ঘ ২৮ বছর ঢাল হিসেবে সকল বিপদ আপদ থেকে আগলে রাখা আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রতি আমি আস্থা রেখেছিলাম। আমি যদি মানুষের দুয়ারে গিয়ে দাড়াই, তাহলে জনগন যে আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিবেনা এই বিশ্বাস নিয়েই আমি ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। তিনি আরোও বলেন, কুলিয়ার মানুষের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। আমি মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট ও সমর্থন চাওয়ার সময় বুঝতে পেরেছি জনগন আমাকে কতটুকু ভালবাসেন। পাঁচ বছরে সেবা নিতে জনপ্রতিনিধিদের পাশে গিয়ে আমার জনসাধারণ হয়রানী, প্রতারিত ও ভোগান্তির শিকার হয়ে আমার শুণ্যতা এবং প্রয়োজনীয়তা দুটোই অনুধাবন করতে পেরেছেন। পূর্বের তুলনায় এবারের নির্বাচনে ভোটাররা আরোও বেশি স্বতষ্ফূর্তভাবে তাকে সমর্থন ও ভোট দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বলেও জানান আছাদুল হক।
কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের এবারের নির্বাচনে কেমন প্রার্থীকে ভোটাররা সমর্থন দিচ্ছেন জানতে দিনভর ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রান্তের ভোটারদের মতামত সংগ্রহকালে রঘুনাথপুর এলাকার সংখ্যালঘু পরিবারগুলো বলেন, গেল ৫ বছর আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রতারিত এবং হয়রানী ও ভোগান্তির শিকার হয়েছি। এরআগে ২৮ বছর আমরা রাতের বেলাতেও ঘরের দরজা খুলে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছি। কোনদিন কোন চোর আমাদের ঘরে ঢোকার সাহস পায়নি। তখন চেয়ারম্যান আছাদুল হকের ভয়ে কোন বখাটে বা লম্পট আমাদের নারীদের দিকে কু-নজর দেয়ারও সাহস পেতোনা। সেসময়ে আমরা হিন্দু-মুসলিম সবাই নিরাপদে ছিলাম। কিন্তু কয়েক বছর আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছি। ঘরে তালা দিয়েও বাইরে যেতে ভয় পেতাম। প্রতিনিয়ত এলাকায় চুরি-ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধ কর্মকান্ড ঘটেই চলেছে। তাই এবারের নির্বাচনে আমরা কোন প্রতারক বা সুদখোরকে চাইনা। এবার কোন কিছুতে বিভ্রান্ত না হয়ে আমরা তাকেই ভোট দেবো, যাকে ভোট দিলে নিরাপত্তা ও উন্নয়ন দুই-ই পাবো।
এদিকে জনসমর্থনে এগিয়ে থাকলেও, বর্তমানে অব্যহতভাবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আছাদুল হক। মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর কুলিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পশ্চিমপাড়া, নিকারী পাড়া, চৌধুরীপাড়া ও কারিকর পাড়ায় দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের সাথে নিয়ে গণসংযোগ করেন আছাদুল হক। এসময় প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ ভোটাদের কাছে তিনি তার ঘোড়া প্রতীকে ভোট ও সমর্থন চান। এসময় সেসব এলাকার ভোটাররাও নিজেদের নিরাপত্তা ও এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আছাদুল হককে ভোট ও সমর্থন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এসময় ভোটারদের সমর্থন ও ভালবাসায় সিক্ত আসাদুল হক আবেগাপ্লুত হয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।