আজিজুর রহমান,খুলনাটাইমস :
কার্যনির্বাহী পরিষদ ছাড়াই চলছে খুলনার দাকোপ উপজেলার বাজুয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম। অভিযোগ উঠেছে স্কুলের অর্থ আত্মসাতের।
সুত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে দু’বছরের জন্য একটি কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন হয়। এতে সভাপতি নির্বাচিত হন রঘুনাথ রায়। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনটি অবৈধ এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে হয়নি দাবী করে উক্ত কমিটি বাতির করার জন্য দাকোপের সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন সাবেক সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ গাইন। মামলার নম্বর দেওয়ানি ৫৯/২০১৪। এ মামলায় কমিটি ও সভাপতি নির্বাচনের অনেক অনিয়মের কথা উল্লেখ রয়েছে।
প্রায় দু’বছর ধরে কার্যনির্বাহী পরিষদ ছাড়াই চলছে স্কুলের সকল প্রশাসনিক কর্মকান্ড। এরমধ্যে কমিটির নামে মামলা চলাকালিন সময়ে অনেক টাকার বিনিময়ে স্কুলের একাধিক শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০১৬ সালে উক্ত কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হতে গেলেও কোন অজানা কারণে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচনের আয়োজন করেননি আজও।
নাম প্রকাশ না করার সর্ত্বে একাধিক অভিভাবক ক্ষুব্ধ হয়ে খুলনাটাইমসকে জানান, রাজনৈতিক দলাদলির কারনে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে স্কুলে। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। ফলে পরিক্ষার ফলাফল ভাল হচ্ছে না আর ক্ষুন্ন হচ্ছে স্কুলের সুনাম।
বাজুয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার মন্ডলের কাছে কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন এখনও হয়নি কেনো জানতে চাইলে, তিনি কোনো সঠিক কারন দেখাতে পারেননি। শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, কমিটির বিরুদ্ধে মামলা থাকলে সেই কমিটি দ্বারা কোনো নিয়োগ দেওয়ার অধিকার রাখে না এ কথা কোথাও উল্লেখ নেই।
মামলার বাদী শ্যামাপ্রসাদ গাইন খুলনাটাইমসকে বলেন, আমি সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দিতা করেছিলাম কিন্ত ক্ষমতাশীন দলের প্রভাবশালী নেতাকে সভাপতি করার জন্য কমিটি নির্বাচনে অনেক অনিয়ম ও তঞ্চকতা করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত কমিটি একাধিক শিক্ষক নিয়োগে লক্ষ লক্ষ টাকার অর্থবানিজ্য করেছে। বর্তমানে স্কুলের কোনো কার্যনির্বাহী কমিটি না থাকায় লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে হচ্ছে না। প্রতিবছর স্কুলের বিভিন্ন উৎস থেকে আসা অনুদানের অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
দীর্ঘদুই বছর যাবৎ বাজুয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে কার্যনির্বাহী কমিটি নেই স্বীকার করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোহেল হোসেন খুলনাটাইমসকে বলেন, পূর্বে একটি বিতর্কিত কমিটি ছিল। সেই কমিটির বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এ বিতর্কিত কমিটি যদি কোনো শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকে সেটি সম্পূর্ন অবৈধ। এরকম কিছু ঘটেছে কিনা আমি তদন্ত করে দেখবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মারুফুল আলমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি বাজুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী কমিটি ও একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কিনা তা কিছুই জানিনা। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।