বাগেরহাট প্রতিনিধি:
দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ব্যাপক ভুমিকা রাখে সামুদ্রিক নানা জাতের মাছ। এই সামুদ্রিক মাছের বংশ বিস্তার ও রক্ষনা-বেক্ষনে সরকার নানা মুখি কর্ম পরিকল্পনাও নিয়েছে। দেখ ভালের তদারকিতে রয়েছে কোষ্ট গার্ড, বনবিভাগ ও মৎস বিভাগ এর নিদৃষ্ট করা হয়েছে মাছের অভায়ারণ্য। মাছের প্রজনন মৌসুমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ইলিশ সহ নানা জাতের মৎস আহরণ। শুধু মাত্র মৎস সম্পদ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা কালীন মৎস জীবিদের জন্য বিনা মূল্যে চাল সহ বিভিন্ন সহযোগীতার। সংশ্লিষ্টদের উদাশীনতা আর দায়ীত্বে অবহেলার কারনে দুবলার শুটকি আহরণ কালে অকারণে র্নিবিচারে ধ্বংষ হচ্ছে কোটি কোটি পোনা মাছ। বন বিভাগ ও মৎস বিভাগের কারোই কোন দায় ভার নেই।
প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও রাষ্ট্রের রাজস্বঃ আয়ে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের দুবলার চরে চলছে সামুদ্রিক মাছের শুটকি প্রকৃয়ার মৌসুম। জেলেদের জালে ধরাও পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। মাছ ধরা, বাছাই, গ্রেডিং সহ প্রক্রিয়াজাত করনে ব্যস্ত সময় পার করছেন দুবলা শুটকি পল্লীতে কর্মরত জেলে ও শুটকি তৈরীর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা। চলতি বছরে শুটকি পল্লীতে প্রায় ২০ হাজার জেলেদের থাকার জন্য ৭৬৫টি ও মহাজনদের জন্য ৪০টি অস্থায়ী বসত ঘরের পাশাপাশি মৎস্য আহরণের জন্য প্রায় দেড় হাজার ট্রলার এবং শতাধিক নৌকার অনুমোদন দিয়েছে বনবিভাগ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন দুবলার চর, মেহের আলীর চর, আলোরকোল, শেলার চর ও মাঝের কিল্লা সহ ৭/৮ টি চরে কয়েক যুগ ধরে এবং প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত পাঁচ মাস চালু থাকে শুটকি তৈরীর কার্যক্রম। উপকুলীয় এলাকা খুলনা, সাতক্ষীরা, শরণখোলা, বাগেরহাট, মোংলা, রামপাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, বাঁশখালী সহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার জেলে ও ব্যবসায়ীরা এ সকল চরে শুঁটকিপ্রকৃয়াজাত করণে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এ সব জেলে বা মহাজনেরা প্রতি বছরের মত এ চলতি বছরেও তাদের মুনাফা অর্জনে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন প্রকারের নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে চিংড়ি সহ শত শত মন বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের পোনা নির্বিচারে ধ্বংস করছে। শুটকি সংশ্লিষ্ট জেলে ও মহাজনেরা এ সব করছে বনরক্ষীদের একেবারে নাকের ডগায়। অসাধু কিছু বন কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে চুপ চাপ হয়ে তাদের দায়ীত্ব পালন করে যাচ্ছে।
দুবলা টহল ফাঁড়ির (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি নাকি মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে এ সকল অনৈতিক কর্মকান্ডের সুবিধা দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে, শুটকি পল্লীতে কর্মরত শ্রমিক সহ সংশ্লিষ্টদের কয়েকজন বলেন, শুটকি পল্লী দুবলার বন কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় জেলে ও মহাজনদের কাছ থেকে প্রতি গোনে (১৫দিনে) হাজার হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করে সুন্দরবনের বিভিন্ন চরে ও সাগর মোহনায় বেহেন্দী জাল, বাঁধা জাল, চরপাটা, নেটবাঁধা সহ বিভিন্ন প্রকারের নিষিদ্ধ জালের মাধ্যমে মৎস্য সম্পদ লুটের সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি দুবলার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করেছেন।
এ বিষয়ে দুবলা টহল ফাঁড়ির বন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) প্রলাদ চন্দ্র রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন চলতি শুটকি মৌসুমে দুবলার কোথাও কোন অনিয়ম নাই। সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক।
এ ব্যাপারে শরণখোলা সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীনের ০১৭১৬-২২৫৭০৪ নম্বরে বারবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন কোন প্রকার রেনু পোনা নিধন করা হচ্ছে না, কোন জেলে বা মহাজনেরা অনৈতিক সুবিধার যে বিষয়টি বলেছে সে টি সম্পূন্ন মিথ্যা। তার পরও আমি এ ব্যাপারে খোজ নেবো।