দুই দশকেও চুলকাঠি থানা বাস্তবায়ন হয়নি

0
321

মো: মনিরুজ্জামান:
এক বছর দুই বছর করতে করতে ২১ টি বছর পেরিয়ে গেল, তবুও চুলকাঠি থানা বাস্তবায়নের স্বপ্ন এখনও অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে। থানা বাস্তবায়নের জন্য নেই কোন থানা বাস্তবায়ন কমিটি। কোন ধরণের উদ্যোগও নেই। নেতা-কর্মীরা হাত গুটিয়ে বসে আছেন আর এলাকাবাসী সেই মহান সৃষ্টি কর্তার মুখ পানে চেয়ে বসে আছেন-কবে তিনি মুখ তুলে চাইবেন ?
সূত্রে প্রকাশ, বাগেরহাট সদর উপজেলার চুলকাঠি এলাকাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাগেরহাট সদর থানা, রামপাল থানা ও ফকিরহাট থানার সীমান্ত সংযোগ স্থান। চুলকাঠিসহ পাশ্ববর্তী এলাকার আইন-শৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৪-৯৫ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম এস.এম.মোস্তাফিজুর রহমান চুলকাঠিকে পূর্ণাঙ্গ থানা হিসাবে বাস্তবায়নের জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তাৎক্ষনিকভাবে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হলেও এলাকার সাধারন মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এবং মংলা বন্দরের আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পরিচালনার স্বার্থে খুলনা-মংলা মহাসড়কের পাশে চুলকাঠিতে তিনি খানপুর, রাখালগাছি ও ষাটগম্বুজ এই তিন ইউনিয়ন নিয়ে একটি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য সুপারিশ করেন।’ যার প্রেক্ষিতে ১৯৯৯ সালে চুলকাঠিতে পুলিশ তদন্তকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। তদন্তকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য কোন নির্দিষ্ট ভবন না থাকায় এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সুধীজনেরা প্রায় পৌণে দুই লক্ষ টাকা অনুদান দিয়ে একটি ভবন তৈরি করেন। বাগেরহাট জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার জামাল উদ্দিন আল আজাদ ১৯৯৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর চুলকাঠি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রটি উদ্বোধনকালে তদন্তকেন্দ্রটি অবিলম্বে একটি থানায় উন্নীত হবার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সে সময়ে বাগেরহাট থানার খানপুর ও রাখালগাছি ইউনিয়ন, রামপাল থানার উজলকুড় ও গৌরম্ভা ইউনিয়ন এবং ফকিরহাট থানার শুভদিয়া ও বেতাগা ইউনিয়ন নিয়ে চুলকাঠি প্রস্তাবিত থানা গঠিত হয়। ২০০১ সালে ৪ দলীয় সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চুলকাঠিতে আইন শৃঙ্খলা উন্নয়ন শীর্ষক সভায় এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি চুলকাঠিকে অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ থানায় রূপান্তরের আশ্বাস দেন। অথচ তারপরও চুলকাঠিবাসীর প্রাণের দাবি অপূর্ণ থেকে যায়। তাছাড়া বর্তমান চুলকাঠি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ভবনটি একটি আধুনিক থানা ভবনের সাথে মিল রয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা ছিল ভবনটি উদ্বোধনের সময় হয়তো সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ থানার ঘোষনা আসবে। কিন্তু ২০০৭ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারী খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ মেজবাহুন্নবী ভবনটি উদ্বোধনের সময় এলাকাবাসী তাদের প্রাণের দাবি তার কাছে পেশ করলে তিনি তার ভাষনে এলাকার গুরুত্ব ও ভবনের আকার-আকৃতির কথা বিবেচনা করে এটিকে সরকার পূণৃাঙ্গ থানায় রূপান্তর করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এলাকাবাসী আশা-আশাই থেকে যাচ্ছে । সরকারের বদল হচ্ছে । আর এলাকাবাসী স্বপ্ন দেখতে দেখতে এখন হাঁপিয়ে উঠেছে। তাছাড়া চুলকাঠি থানা বাস্তবায়নের জন্য আজও কোন “থানা বাস্তবায়ন কমিটি” গঠন হয়নি। এলাকার কিছু কিছু আগ্রহী সচেতন ব্যক্তি এসব বিষয় নিয়ে ভাবলেও তাদের ভাবনা বাস্তবে রূপ নেয়না। আর এলাকার সাংবাদিকদের লেখুনী সংবাদপত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।

সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী মনে করেন, এখনই উপযুক্ত সময়। বাগেরহাট ০২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভ্রাতুস্পূত্র। তার বিভিণœ কর্মকান্ডে দেখা যায়, তিনি চুলকাঠি এলাকাটিকে তিনি বিশেষ নজরে দেখেন। যার ফলে চুলকাঠি এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন, ট্রমা সেন্টার (হাসপাতাল) সহ এলাকাটিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তারই প্রচেষ্টায় তারই হাত ধরে চুলকাঠি পূর্ণাঙ্গ থানায় উপনীত হবে-এটাই এখন এলাকাবাসীর প্রত্যাশা।