টাইমস প্রতিবেদন ॥ দাকোপের বাণীশান্তায় সংখ্যালঘু একটি পরিবারকে পৈত্রিক বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে নগ্ন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতা। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই পরিবারের উপর চলছে নানা ধরনের নির্যাতন। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদের অযুহাত তুলে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় ওয়ার্ড নেতা মহাসিন হাওলাদার এ ধরনের ঘৃণকাজে লিপ্ত হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি স্বীকার করলেও ভয়ে তারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় ভুক্তভোগি বিনয় মন্ডলের পরিবার প্রশাসনের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দাকোপ উপজেলার বাণীশান্তা ইউনিয়নের আমতলা নিবাসী রানী মন্ডল জানান,তাদের বসত-ভিটা সংলগ্ন একটি মসজেদ রয়েছে। দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে শান্তিপূর্ণ সহবাস থাকলেও সম্প্রতি মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিভিন্ন ভাবে তাদেরকে হয়রানী করতে শুরু করে। রানী মন্ডলের অভিযোগ তারা সংখ্যালঘু হওয়ায় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন হাওলাদার ও আফজাল শেখ তাদেরকে পৈত্রিক বসত-ভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটাচ্ছেন।
মসজিদের জমির অযুহাত তুলে সম্প্রতি মহসিন ও আফজাল গং রানী মন্ডলদের বাড়ির সীমানা ভেঁদ করে বসত ঘর সংলগ্ন টয়লেটের ট্যাঙ্কি নির্মাণ করতে শুরু করে। মূলত ওই হিন্দু পরিবারটিকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে এ ধরণের ষড়যন্ত্র করা হয়। রানী মন্ডলের পরিবার এ কাজে বাঁধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃস্টি হয়। উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ-বিতান্ড ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এক পর্যায়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে সালিশ বৈঠক করে বিষয়টির তাৎক্ষনিকভাবে সমাধান করা হয়।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সালিশ বৈঠককে অমান্য করে আফজাল শেখ বাদী হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই পরিবারের বিরুদ্ধে আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। একই সাথে তাদেরকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে নানাভাবে ভয়-ভিতি ও নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
এ বিষয়ে বিনয় মন্ডলের সঙ্গে কথা হলে তিনি দু’চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমরা হিন্দু বলে আমাদের ওপর এতো নির্যাতন। মসজিদের মতো একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও র্ষ্পর্ষকাতর বিষয়কে তারা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। মহসিন গং আমাদেরকে মালায়ন বলে গালি দেয়, বাঁচতে হলে ভারতে চলে যেতে বলেছে।’ এখন আমারা অসহায়,সব সময় ভয়ে-ভয়ে থাকি। না জানি ওরা কখন আমাদের জন্য হায়নাদের মতো ঝাপিয়ে পড়ে।’ এ অবস্থায় সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনকে তাদের পামে দাড়ানোর জন্য আহবান জানিয়েছেন বৃদ্ধ বিনয় মন্ডল।
এবিষয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিন হাওলাদার বলেন,‘আমারা কারো জমিতে যায়নি। সমজিদ-মাদ্রাসার ডিসিআরভুক্ত জমিতে কাজ করছি। যা ৫০ বছর ধরে আমরা ভোগ-দখলে আছি। তারা ওই জমি দাবি করলেও আদালতে হেরে গেছে। এছাড়া নির্যাতনের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে তিনি দাবি করেন।