দাকোপে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

0
666

আজিজুর রহমান,দাকোপ : খুলনার দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান রনজিৎ কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
উন্নয়ন কাজে অর্থ ব্যয় না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি টাকা আত্মসাতের প্রতিকার চেয়ে জেলা দূর্নীতি দমন কমিশনের নিকট অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যরা।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ফেরীঘাট ও হাটবাজার ইজারার আদায়কৃত ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সরকারের বরাদ্দকৃত ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় না করে ইউপি চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেন। এছাড়া এলজিএসপি-২ ও ইউসিজিপির আইটি প্রকল্পের অনুকুলে ২৭ লক্ষ টাকার হিসাবসহ পরিষদের কোনো আয়-ব্যয়ের হিসাব ইউপি সদস্যদের অবগত না করে অন্ধকারে রেখেছেন উক্ত চেয়ারম্যান। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে ২০১৬ সালে ইউনিয়নের জনগণের কাছ থেকে আদায়কৃত ট্যাক্সের ৫১ লক্ষ টাকা পরিষদের ক্যাশবুকে জমা না করে চেয়ারম্যান তাঁর নিজের ব্যাংক একাউন্টে জমা করেন।
আরও জানা যায়, সোনালী ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংক চালনা বাজার শাখায় রনজিৎ কুমার মন্ডল নামে দু’টি ব্যাংক হিসাব খোলা আছে, হিসাব নম্বর ১৭৮০ ও ৯৩৭। এ একাউন্টে সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করে জমা রাখেন চেয়ারম্যান।

অভিযোগকারী ইউপি সদস্য নিশিত মন্ডল বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে পরিষদের নামে ইউপিজি ও এডিপি’র মাধ্যমে ৮ ফুট সলিং রাস্তার বরাদ্দ হয়। কিন্তু কাজটি চেয়ারম্যান সময়মত না করে, ২০১৭ সালে সেই প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে তার বাড়িতে আসা-যাওয়ার রাস্তাটি ৬ ফুট ইট সলিং রাস্তা নির্মাণ করেন এবং বাকি ২ফুটের টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন। তিনি আরও বলেন, একই অর্থবছরে কাবিটা প্রকল্পের টাকা নিয়মানুযায়ী জনকল্যানে ব্যয় না করে তাঁর ইচ্ছামত যেখানে সেখানে ব্যয় করেন।
ইউপি সদস্য কালিপদ শীল বলেন, ২০১৬ সালে চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় ফেয়ার প্রাইজ কার্ডের ১০ টাকা কেজি দরের ২১ বস্তা চাউল নিতাই মন্ডলের পরিত্যাক্ত ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। এর ডিলার ছিল চেয়ারম্যানের আপন মামা বিষ্ণুপদ।

ইউপি চেয়ারম্যান রনজিৎ কুমারের বিরুদ্ধে একাধিক বার বিভিন্ন সংবাদপত্রে দুর্ণীতির খবর প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান ইউপি সদস্য রাবেয়া বেগম। তিনি জানায়, ঈদ উপলক্ষে পরিষদে বিভিন্নভাবে অনুদান আসে, সে সকল অনুদান তিনি আত্মসাৎ করে থাকেন। ইউনিয়নে প্রতি জনের জন্য ১৩ কেজি গম আসে ভিজিএফ’র মাধ্যমে। সেখানে চেয়ারম্যান ১৩ কেজি বদলে সাড়ে ৮ কেজি গম বিতরণ করে থাকেন। আর বাকি গম তিনি আত্মসাৎ করেন। এভাবে দরিদ্র-হতদরিদ্র মানুষের প্রত্যেকটি অনুদানের টাকা বা চাল, গম আত্মসাৎ করে আসছেন তিনি। কিন্তু এর কোন সঠিক বিচার হচ্ছে না।

তিলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান রনজিত কুমার মন্ডলের কাছে মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কয়েকটি রাজাকারের পুত্র ইউপি সদস্য আমার সম্মানহানি করার জন্য লেগেছে।