তালায় পাট নিয়ে বিপাকে চাষিরা

0
337

সেলিম হায়দার :
সাতক্ষীরা তালায় সোনালি আঁশ পাট নিয়ে এবারো বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। বৃষ্টির অভাবে খাল-বিল, ডোবা, নালায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় চাষিরা তাদের উৎপাদিত পাট পচাতে পারছেন না। ফলে পাট নিয়ে এ অঞ্চলের কৃষক চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে।
অনেকেই আবার পাটের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেকে আগাম পাট কেটে একই জমিতে আমনের চাষ করতে শুরু করেছে। এরপরও পাটের ন্যায্য দাম পাওয়ার আশা পাট চাষীদের। সংশ্লিষ্টদের দাবি সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ না দিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে পাটের ছাল ছাড়িয়ে জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করলে এ সমস্যা অনেকটা সমাধান সম্ভব।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে তালা উপজেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। পাট উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ১২০ বেল।
চাষিরা জানান, এবছর অধিকাংশ জমিতে আবাদ করা হয়েছে তোষা জাতের পাট। তবে অনেক পাটের ক্ষেতে বিছা পোকার দেখা গেছে। আক্রান্ত ক্ষেতে সবুজের পরিবর্তে পাট ক্ষেতের রং লালচে ও হলুদ বর্ণের হয়ে যায়। পাটের উচ্চতা অন্য বছরের তুলনায় কম। এরপর পানির অভাবে পাট জাগ দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। যে সব এলাকায় পুকুর, ডোবা, খানা কিম্বা নর্দামায় পানি জমা আছে সেইসব এলাকার কৃষকের পাট কাটতে শুরু করেছে।

তালা সদর জাতপুর গ্রামের পাট চাষী আজিজুর ইসলাম,জানান, এবছর সে আড়াই বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছেন। পাটক্ষেতে চার বার ভু-গর্ভস্থ পানির সেচও দিয়েও তার ক্ষেতের অর্ধেক পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে তিনি আগাম পাট কাটলেও জাগ দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেনা। তিনি আরও বলেন, গত বছর তার ক্ষেতের পাট ১০ থেকে ১২ হাত পর্যন্ত লম্বা হয় কিন্তু এবছর ৭ থেকে ৮ হাত লম্বা হয়েছে। দাম ভাল পেলে খরচটা ঘরে উঠবে আশা তার।

সাতক্ষীরা পাট অধিদপ্তরের মূখ্য পরিদর্শক আশীষ কুমার দাশ বলেন, প্রাকৃতিক কারণে (পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায়) অনেক চাষীর পাট জাগ দিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে পাট পচন ও বাজারজাত করণের বিষয়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান বলেন, জেলায় খুব ভাল মানের পাট উৎপাদন হয়। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় পাট উৎপাদন ও জাগ দিতে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি আরো জানান, সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে জেলার প্রতি হেক্টরে তিন থেকে সাড়ে তিন টন পর্যন্ত পাট উৎপাদন সম্ভব।