স্পোর্টস ডেস্ক:
হাথুরু চলে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট কোচ শূন্য প্রায় ৮ মাস। এই আসি আসি বলেও আসা হয়নি কোচের। অবশেষে কোচের দুঃখ ঘুঁচলো বাংলাদেশের।
কোচ আসলেন, দায়িত্ব বুঝে নিলেন। তবে তিনি কোনও হাই লেবেল নন। তিনি আগে ছিলেন ইংলিশ কাউন্টি দলের কোচ। কাজ করেছেন ইংলিস লায়নসের হয়েও। বাংলাদেশই তার কোচিং ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট প্লেয়িং কোনও দল যেখানে তিনি কোচ হলেন।
যদিও কোচ নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার আগেই বিসিবি সভাপতি জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের যিনি কোচ হয়ে আসবেন তিনি তেমন প্রসিদ্ধ নন। এখানে এসে তিনি প্রসিদ্ধ হবেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দায়িত্ব নিতে গতকালই ঢাকায় পা রাখেন ইংলিশ কোচ স্টিভ রোডস। আজ ছিল তার পরিচিতি। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব পাওয়ার অনুভূতির কথা জানান রোডস। কাজ শুরু করার আগেই নতুন কোচ জানান টাইগারদের দায়িত্ব পেয়ে তিনি বেশ রোমাঞ্চিত। তাছাড়া ক্রিকেটের প্রতি বাংলাদেশের ভালোবাসা দেখেও উত্তেজিত তিনি।
বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেট পাগল উল্লেখ করে রোডস বলেন, হোটেল থেকে এখানে আসার পথে দেখলাম এই গরমের মধ্যেও ছেলেরা অনেক জায়গায় ক্রিকেট খেলছে। আমারও তখন খেলতে ইচ্ছে হচ্ছিল। বোঝাই যায় এদেশের মানুষ ক্রিকেটকে খুব ভালোবাসে। তাদের ধ্যান-জ্ঞানই হলো ক্রিকেট। এরকম ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ জাতির কোচ হতে পেরে সত্যি খুব ভাল লাগছে। আমি আমার দীর্ঘ খেলোয়াড়ি জীবন ও কোচিং অভিজ্ঞতা দিয়ে চেষ্টা করবো।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে বিশ্ব টাইগার নামে চিনে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ডাকটা আমার খুব পছন্দ। শুধু টাইগার নামে নয়, শিষ্যদের সত্যিকারের টাইগারের মতোই হিংস্র, সবল ও শক্ত-সামর্থ্য করে তোলার অভিপ্রায় তার কণ্ঠে এবং অভিব্যক্তিতে। নিজেকেও টাইগার হিসেবে দেখার তীব্র বাসনা তার। এক পর্যায়ে রোডস বলেন, ‘আমিও টাইগার হতে চাই।’
রোডস বলেন, আমি এর মধ্যে ক্রিকেটারদের সঙ্গে মিনিট পনেরো কথা বলেছি। সেগুলো কিছু ব্যক্তিগত এবং দলগত কথোপকথন। তা নাইবা বললাম। আমি বিশ্বাস করি ক্রিকেট দলগত খেলা। বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে। তারা যদি ভালো জ্বলে উঠতে পারে আর টিমওয়ার্ক যদি ভালো হয়, তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভালো কিছু না হওয়ার কোনো কারণ আছে কি?
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, জানি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশন সহজ ও অনুকূল নয়। লংকানদের উড়িয়ে ক্যারিবীয়রা আছে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। তাদের সাথে সিরিজ মোটেও সহজ হবে না। সেটা আর সবার মতো আমারও জানা। তারপরও আমরা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই খেলতে নামবো। জেতাটাই লক্ষ্য। ওই যে বললাম টিমওয়ার্ক! সবাই মিলে ভালো পারফর্ম করলে জিততেও পারি।
সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি পূর্নাঙ্গ সিরিজ খেলবে টাইগাররা। আর সেই সিরিজেই প্রধান কোচের ভূমিকায় থাকবেন রোডস। ক্যারিবীয়দের হয়ে চলতি সিরিজে আগুন ঝড়াচ্ছেন ফাস্ট বোলার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। এই পেসারকে কাছ থেকে দেখেছেনও রোডস। কারণ উস্টারশায়ারে রোডসের অধীনে খেলেছেন গ্যাব্রিয়েল।
আসন্ন সিরিজ নিয়ে ইংলিশ কাউন্টির এই কোচ বলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশন সহজ ও অনুকূল নয়। সেটা সবারই জানা। তাছাড়া শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তাদের আত্মবিশ্বাসটাও এখন অনেক। আমি ঘরে বসেই খুব কাছ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজটি দেখেছি। তাদের ফাস্ট বোলার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল খুব ভালো করল তাকে আমি উস্টারশায়ারে কোচিং করিয়েছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই অভিজ্ঞতা আমি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে শেয়ার করবো এবং তাদের বিপক্ষে জয়টাই হবে আমাদের লক্ষ্য।
আগামি ৪ থেকে ৮ জুলাই অ্যান্টিগুয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি গড়াবে ১২ থেকে ১৬ জুলাই জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কে।