তালা প্রতিনিধি:
ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মারুফ হোসেন। অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানি, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ওই সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বিরুদ্ধে। ভূমি অফিসের চৌকাঠ পেরুলেই তহশিলদারের নিজের করা আইন মানতে হয় ভূমিসেবা নিতে সাধারণ মানুষকে। কেউ এর প্রতিবাদ করলেই ওই ভুমি কর্মকর্তা বলেন চেক এর মুড়ি বই নেই এক মাস পরে আসেন। আর টাকা দিলেই মুড়ি বইয়ের জন্ম হয়।
খলিলনগর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মারুফ হোসেনের অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানির বিষয়ে ভুক্তভোগীরা গত ৬ ডিসেম্বর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে জানাযায়,খলিলনগর ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) হিসাবে যোগদানের পর থেকেই নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগকারীর একজন হাজরাকাটি মোহাম্মাদীয়া মাদ্রাসার শিক্ষক শফিকুল ইসলাম করে বলেন, স্থানীয় দানবীর মৃত মিয়াজান শেখ অত্র মাদ্রাসাটি প্রতিষ্টার জন্য ১৯৭৪ সালে ৩৮ শতক সম্পত্তি দান করেন।মাদ্রাসার দান করা সম্পত্তির মিউটিশন করার জন্য খলিলনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মারুফ হোসেন তার কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়ে জমির মিউটিশন করে দেন। কিন্তু মিউটিশন করে দেওয়ার পরে ঐ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আরো ১৭ হাজার টাকা উৎকোচদাবী করেন। দাবীকৃত টাকা না দেওয়ায় মাদ্রাসার প্রতিপক্ষ স্থানীয় মেম্বর আঃ রবের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) বাদী হয়ে মিউটিশনের বিরুদ্ধে আপিল কেস করেছন। এখানেই শেষ নয় এরকম পাহাড়সহ অভিযোগ ঐ তহশিলদারের বিরুদ্ধে।
খলিলনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা কবির মোড়ল এপ্রতিনিধিকে জানান, জমির খাজনা দাখিলা কাটতে এসে ছিলেন তিনি। জমির খাজনা ১২শত টাকা হয় কিন্তু ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা অতিরিক্ত আরো ৪ শত টাকা উৎকোচ দাবী করেন। উৎকোচের টাকা না দেওয়া পর্যন্ত খাজনার চেক দাখিলা তাকে দেওয়া হয় নি।
ভূমি অফিসে সেবা নিতে আশা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘোষনগর গ্রামের কয়েক জন ব্যক্তি এ প্রতিনিধিকে বলেন,ভাই আমাদের নাম প্রকাশ করবেন না।কারণ তহশিলদারের কাছে আমাদের আরো কাজ আছে।নাম প্রকাশ করলে ঘুষ দিলেও আর আমাদের কাজ করে দেবেন না তিনি। তারা বলেন,নায়েব ঘুষ ছাড়া কোন কাজই করেন না তিনি। ৬০ টাকার খাজনার চেক দাখিলা কাটলেও তাকে দিতে হয় ২ হাজার টাকা। আমরা গত চার দিন ধরে এখানে এসে ফিরে যাচ্ছি। সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সময়মত অফিসে আসেন না।তিনি খুলনা থেকে এসে অফিস করেন।এখন বেলা ১১টা বাজে তবুও তার দেখা নেই।আর দেখা মিললেও ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না। নাম প্রাকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিদেরগোপন ক্যামেরায় নেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিডিও ফুটেজ এ প্রতিনিধির কাছে রক্ষিত।
খলিলনগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি আনসার ভিডিপি ক্লাবের সদস্য সুরমান গাজী এ প্রতিনিধিকে জানান,কøাবের পাঁচ শতক জমির মিউটিশন করার জন্য নায়েব মারুফ হোসেনের কাছে গেলে মিউটিশনের খরচ বাবদ ৬ হাজার টাকা দাবী করেন।৬হাজার টাকা না দিলে মিউটিশন হবে না। তিনি অক্ষেপ করে বলেন, সরকারি নিয়মে মিউটিশন খচর ১১৫০ টাকা অথচ নায়েব সাহেব তাদের কাছে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৮শত ৫০ টাকা ঘুষ দাবী করেন। এত বড় ঘুষ খোর নায়েব আমার জীবনে কখনো দেখিনি। এরকম অসংখ্য অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসীসহ বাজারে অবস্থিত দোকানদারদের।
এবিষয়ে খলিলনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব (তহশিলদার) মোঃ মারুফ হোসেন দাম্ভিকতার সাথে এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমি অত্যান্ত ডান পিঠে লোক, আমি কোন ঘুষ খাইনা, মামলার ভয় পাইনা। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।তিনি সরকারি নিয়মের বাইরে কোন কাজ করেন না এমন কি কোন মিউটিশন কেস তিনি নেন না।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা এম এম মাহমুদুর রহমান অভিযোগের বিষয়ে এপ্রতিনিধিকে বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহাদয় অবগত আছেন তার সাথে কথা বলেন।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের সাথে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।