সুমন আহমেদ, খুলনা টাইমস: ডেটলাইন খুলনা ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার। থমথমে অবস্থা শহরজুড়ে। সবর্ত্রই একই আলোচনা।ফলাফল কি খুলনা শিশু ফাউন্ডেশন নির্বাচনের? কারণ একটাই। শাসক দলের মতানৈক্য শীর্ষ নেতাদের মর্যাদাবোধের লড়াই এই নির্বাচন।
ঘড়ির কাটা তখন রাত ১০টা বেজে গেছে। জেলা স্টেডিয়াম এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ভোট গণনা চলছে, স্টেডিয়ামের মুল ভবনে। এরই মধ্যে বিকট শব্দে বোমাবাজি, হৈচৈ, হট্টগোল, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ভাংচুর। নেপথ্যে ১২ শতাধীক ভোট গণনায় একপক্ষ এগিয়ে আছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, পরাজয় রুখে দিতে প্রতিপক্ষের সমর্থকরা ওই হামলা চালায়। ব্যালট বাক্স ছিনতাই করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়। এগিয়ে থাকা পরিষদের প্রার্থী-সমর্থক ও পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয় । এতে কমপক্ষে ১০জন অাহত হয়। ক্ষতবিক্ষত হয় ষ্টেডিয়াম, রক্তাক্তও বটে, মাশুল দিতে হয় প্রায় কোটি টাকার সম্পদের। ছিনতাই হয় ব্যালট বাক্স দাবি সূত্রের।
অপর সূত্রের দাবি, ভোট গণনার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে তুমুল হট্টগোল শুরু হয়। ক্ষণিকের মধ্যেই উভয় গ্রুপ একে অপরের সাথে দ্বন্দ্ব জড়িয়ে পরে। শুরু হয় মারামারি। বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণ হয়। ফলে উপস্থিত জনগণ দিক-বিদিক ছুটতে শুরু করে। পদদলিত হয়ে অনেকেই অহত হন।
জানা গেছে, প্রার্থীরা নিরাপদে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করে। নির্বাচনী ময়দান পুলিশ সদস্যরা ঘিরে ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। প্রশাসন ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যালট বাক্স তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়। নির্বাচনে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষনায় স্থগিতাদেশ দেন নির্বাচন কমিশনার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নূরে আলম।
সূত্রমতে, খুলনা শিশু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কাউন্সিলের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার নেতৃত্বে ২০ সদস্যে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। যার একটির নেতৃত্বে রয়েছেন খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক, সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান।
অপর প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. সাইফুল ইসলাম। উভয় প্যানেলে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সমর্থিত, চিকিৎসকসহ সমাজ কর্মীরা অর্šÍভূক্ত হয়েছেন।
অরাজনৈতিক হলেও শিশু ফাউন্ডেনের এই নির্বাচনে রাজনৈতিক রং লাগে। দলীয় রাজনীতিতে মতানৈক্যের কারণে এই নির্বাচনকে মর্যাদার লড়াই হয়ে দাড়ায়। গোটা নগরীতে শিশু ফাউন্ডেনের নির্বাচন আলোচনার কেন্দ্রবৃন্দতে পরিনত হয়। সকাল ৯টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খুলনা জেলা ক্রীড়া ষ্টেডিয়ামে ভোট গ্রহণ চলে। ২ হাজার ১৮৪ জন সদস্য এর মধ্যে প্রায় ২হাজার ভোটার ভোট দেন বলে জানা যায়।
আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান এমপি’র নেতৃত্বে প্রার্থীরা হলেন, ডা. বজলুর হক, ডা. কামরুল ইসলাম, ডা. মাহমুদ হাসান লেলিন, এম ডি এ বাবুল রানা, এ্যাড. সরদার রজব আলী, ফেরদউস আলম খান ফারাজী, মুর্শিদা আক্তার রনি, কাউন্সিলর আলী আকবর টিপু, হালিমা ইসলাম, আলহাজ্ব মুনির আহমদ,শেখ মামুন আল হাসান রাজু, সৈয়দ হাফিজুর রহমান,মোস্তফা কামাল খোকন, আলহাজ্ব মফিজুল ইসলাম টুটুল,জোবায়ের আহমেদ জবা, চৌধুরী মো: রায়হান ফরিদ,আল জামাল ভুইয়া, খান সাইফুল ইসলাম, মোঃ মনিরুল ইসলাম মাসুম।
সদর থানা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন শিশু স্বাস্থ ও সেবা পরিষদের প্রার্থীরা হলেন, অধ্যক্ষ শহিদুল হক মিন্টু, জামাল উদ্দিন বাচ্চু,মো: শফিকুল ইসলাম তুহিন, এ্যাড. কানিজ ফাতেমা আমিন, রফিকুর রহমান রিপন,মিনা আজিজুর রহমান,মো: আব্দুল গফ্ফার,এ্যাড.কেএম ইকবাল হোসেন,্এ্যাড.একে এম শাজাহান কচি,ফারুক আহম্মদ খান, তহিদুল ইসলাম ঝন্ট,ু জি.এম. রেজাউল ইসলাম, মোঃ ইউসুফ আলী, অচিন্ত কুমার ঘরামী, এ্যাড. শিকদার হাবিবুর রহমান,শাহামো: জাকিউর রহমান,অধ্যপক এস,এমমেহেদী বিল্লঅহ,খোকন রায় দিলিপ ও কাজী মাহামুদ আলী।
প্রসঙ্গত : সর্বশেষ নির্বাচন ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৭শ’ ৮৫ জন।