নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা টাইমসঃ
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।এদিন সকালে শোক র্যালি নগরীর নিউ মার্কেট থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ বেতার খুলনার প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তুবক অর্পণ করে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্ট শাহাদত বরণকারী তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, মুহাম্মদ মিজানুর রহমান এমপি, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত ডিআইজি, জেলা প্রশাসক,মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল বিভাগীয় ও জেলা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দ র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
শোক দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন খুলনার উদ্যোগে সকালে অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। তিনি আমাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ও মানচিত্র উপহার দিয়ে গেছেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়তে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা পুলিশ কমিশনার মোঃ হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ এবং মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলমগীর কবীর। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
পরে রচনা, সংগীত, চিত্রাংকন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজীয়দের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এদিন সকালে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, হামদ ও নাত এবং মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। প্রততত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর অটিস্টিক শিশুদের জন্য দিনব্যাপী প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন এবং মাসব্যাপী শোকবহ আগস্ট শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শন করে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিস (পিআইডি) শোক র্যালিতে অংশগ্রহণ করে এবং পরে অফিসে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।শোক দিবস উপলক্ষে স্থানীয় পত্রিকাগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ এবং বাংলাদেশ বেতার খুলনা বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরী মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর কর্মজীবনভিত্তিক পুস্তক প্রদর্শন করে। বাদ জোহর কালেক্টরেট মসজিদ, পুলিশ লাইন জামে মসজিদ ও টাউন জামে মসজিদসহ নগরীর বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
এছাড়া মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করে।উপজেলাগুলোতেও অনুরূপ কর্মসুচি পালিত হয়।