খুলনায় বেপরোয়া গতিতে চলছে মাহেন্দ্র-অতুল

0
1195

এম জে ফরাজী : খুলনা শহরে নিয়ম-নীতির তোয়াক্তা না করেই বেপরোয়া গতিতে চলছে ইঞ্জিন চালিত মাহেন্দ্র-অতুল। বেপরোয়া গতির কারণে নগরে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। দুর্ঘটনারোধে জেলা প্রশাসন থেকে যাত্রী কমানোর নির্দেশনা দেওয়ায় এই নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ করেই অতুল-মাহেন্দ্রর ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে প্রশাসনের উদ্যোগেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না নগরবাসী।
সূত্র জানায়, নগরীতে বেবী ট্যাক্সির বিকল্প হিসেবে চলছে ইঞ্জিন চালিত মাহেন্দ্র-অতুল। এর নিয়ন্ত্রণ করছে জেলা বেবিটেক্সি শ্রমিক ইউনিয়ন ও দৌলতপুর-খুলনা বেবিটেক্সি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ড্রাইভার ইউনিয়ন নামের দু’টি সংগঠন। মাহেন্দ্র ও অতুলের চালকরা কোন রকম নিয়ম না মেনেই বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছে এ বাহনটি। নগরীর সব জায়গায় ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় অনায়াসেই তারা এ অনিয়ম করে যাচ্ছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে নগরীর নূরনগর এলাকায় দ্রুতগতির এক মাহেন্দ্র’র ধাক্কায় নিহত হয়েছেন ফুল মিয়া (৫৫) নামের এক রিকশা চালক। দুর্ঘটনা ঘটলেও পুলিশ ঘাতক চালককে আটক করতে পারেনি। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ পথচারীরা।
সূত্রটি আরও জানায়, নগরীতে বেপরোয়া গতির এ বাহনগুলো বন্ধে ২০১৫ সালে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু অজ্ঞাত কারণেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
৮ জুলাই জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সর্বশেষ সভায় শহরের মধ্যে অতুল-মাহেন্দ্রর বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণ ও যানবাহনের পেছনের সংকীর্ণ সিটে ৪ জনের স্থলে ৩ জন যাত্রী বহনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মাঠে নামে দৌলতপুর-খুলনা বেবিটেক্সি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ড্রাইভার ইউনিয়ন ও খুলনা জেলা বেবিটেক্সি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। কয়েকদফা ধর্মঘট ডেকে যাত্রী ভোগান্তির মধ্যে তারা মঙ্গলবার রাতে খুলনা-দৌলতপুর, রূপসা-পথেরবাজারসহ ১৮টি পয়েন্টে যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়। হঠাৎ করে যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেক চালক আপত্তি জানালে তারা ইউনিয়নের জরিমানার শিকার হচ্ছেন।
ড্রাইভার ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল কাদের মোল্লা জানান, অতুল-মাহেন্দ্রর পেছনের সিটে যাত্রী কম বহনের কারণে চালকদের আর্থিক ক্ষতি হবে। এ কারণে তাদের দাবির প্রেক্ষিতে যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন বলেন, খুলনায় প্রশাসনের নির্দেশনাকে না মেনেই দ্রুতগতিতে চালানো হচ্ছে মাহেন্দ্র-অতুল। উঠানো হচ্ছে অতিরিক্ত যাত্রী। আর যাত্রী কমানোর সিদ্ধান্ত দেওয়ায় যাত্রীদের জিম্মি করে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে তাদের কাছে দাবি জানাই।
কেএমপি’র মুখপাত্র উপ-পুলিশ কমিশনার সোনালী সেন জানান, আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাহেন্দ্র চলাচলে গতি কমানোর একটা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর পিছনের সংকীর্ণ সিটে ৪ জন যাত্রীর পরিবর্তে ৩ জন যাত্রী উঠাতেও বলা হয়েছে। তারা এই সিদ্ধান্ত না মানলে প্রশাসন কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে।