খুলনায় কাঁচাবাজার স্থিতিশীল, মাছ ও মুরগীর দাম বৃদ্ধি

0
1396

সাইমুম মোর্শেদঃ ঈদকে সামনে রেখে খুলনায় কাচাবাজার স্থিতিশীল থাকলেও বৃদ্ধি পেয়েছে মুরগি ও মাছের দাম।খুলনা মহানগরীর অধিকাংশ কাঁচাবাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় গড়ে প্রতি কেজি মুরগির দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। বেড়েছে সকল মাছের দাম ও মুরগির ডিমের দাম।

মঙ্গবার (২৪জুলাই) খুলনা মহানগরীর সন্ধাবাজার, নিউমার্কেট, বড়বাজার, বয়রা বাজার, বৈকালী বাজার, দৌলতপুর বাজার ও গল্লামাড়ী কাচাবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১৪০থেকে ১৫০ টাকা, সাদা লেয়ার  ২২০ টাকা,লাল লেয়ার  ২৫০ টাকা, কক ১৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, প্রতিহালি দেশি মুরগির ডিম ৪০ টাকা, ফার্মের ৩২ থেকে ৩৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া মহানগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে,  সদ্য ধরা ইলিশ দেড় কেজি সাইজ ২ হাজার টাকা, সোয়া কেজি সাইজ ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২৩০০ টাকা, এক কেজি সাইজ দেড় হাজার টাকা থেকে ২০০০ টাকা ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম সাইজ ১২শ’ টাকা থেকে ১৪০০ টাকা আধাকেজি সাইজ ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি মাছ রুই ৪ কেজি সাইজ ৫০০ টাকা, কাতলা ৪ কেজি সাইজ ২৮০ টাকা, পারশে (বড় সাইজ) ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সিলভার কার্প (৫ কেজি সাইজ) ৩২০ টাকা, রূপচাঁদা (মাজারি সাইজ) ৮০০ টাকা, দাতিনা মাঝারি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, বেলে (বড় সাইজ) ৭০০ টাকা, পাতাড়ি (বড় সাইজ) ৭০০ টাকা, ট্যাংরা (বড় সাইজ) ৮০০ টাকা, ট্যাংরা (মাঝারি সাইজ) ৪০০ টাকা, শোল (বড় সাইজ) ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, শোল (মাঝারি) ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে গরু ও খাশির মাংশের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংশ ৪৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত চার মাস আগে ফার্মের ডিমের দরপতন ঘটে। এ সময় প্রতিহালি ২০/২২ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর মাসখানেক আগে ব্রয়লার মুরগি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়। একই সময় সদ্য ধরা ইলিশ দেড় কেজি সাইজ ১ হাজার ৮শ’ টাকা, সোয়া কেজি সাইজ ১ হাজার ৬শ’ টাকা, এক কেজি সাইজ ১ হাজার ৪শ টাকা, ৮শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম সাইজ ১ হাজার টাকা, আধা কেজি সাইজ ৭শ’ টাকা, রুই ৪ কেজি সাইজ ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪ কেজি সাইজ ২৮০ টাকা, পারশে (বড় সাইজ) ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা, সিলভার কার্প (৫ কেজি সাইজ) ৩২০ টাকা, রূপচাঁদা (মাজারি সাইজ) ৮শ’ টাকা, দাতিনা (মাঝারি) ৩শ’ থেকে ৩৫০ টাকা, বেলে (বড় সাইজ) ৭শ’ টাকা, পাতাড়ি (বড় সাইজ) ৭শ’ টাকা, ট্যাংরা (বড় সাইজ) ৮শ’ টাকা, ট্যারা (মাঝারি সাইজ) ৪শ’ টাকা, শোল (বড় সাইজ) ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, শোল (মাঝারি) ৪শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়।

অন্যদিকে, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে এবারের বাজারে গরম মসল্লার দাম বৃদ্ধি না হওয়ার সম্ভবনার কথা বলছেন খুচরা ও পাইকারি ব্যাবসায়ীরা। সরকারের শেষ সময় দ্রব্যমূল্য সাধারন ক্রেতার নাগালের ভিতরেই থাকবে বলে আশা করছেন সাধারণ ব্যাবসায়ীরা।বাজার ঘুরে দেখা যায় দেশি জিরা ৩২০ টাকা ও ইন্ডিয়ান জিরা ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, গোলমরিচ ৫২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে যা গত মাসেও ছিলো ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা প্রতি কেজি।মরিচের গুড়া ২২০টাকা হলুদের গুড়া ১৬০ টাকা,লবঙ্গ ১০০০ ,কিসমিস ৩৪০, মশুরের ডাল মোটা ৫০ ,চিকন ৮০ টাকা ,মুগ ডাল ইন্ডিয়ান ৭০ টাকা ও দেশি ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মহানগরীর বড় বাজারের মুরগি দোকানের ব্যবসায়ী ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. অহিদুল ইসলাম বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অহিদুল আরো বলেন, ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির দাম বেড়েছে।পল্ট্রি মুরগির বাচ্চার দাম বৃদ্ধির কারনেই মূলত মুরগির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এছাড়া আমদানি অনেক কম।এছারাও, ময়লাপোতা কেসিসি সন্ধ্যা বাজারের সভাপতি মাছ ব্যবসায়ী মোজাফ্ফার হোসেন বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ অনেক কম, যে কারণে মাছের বাজার বাড়তি।  নগরীর বৈকালী বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী মোঃআজমল বলেন, মুরগির আমদানী কম থাকায় ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরীর ময়লাপোতা মোড়ের রাজু বীফ শপের রাজু বলেন, মাংশের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতিকেজি গরুর গোস্ত ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

নগরীর বয়রা কাচাবাজারে আসা এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ জানান, কাচামালের ঊর্ধ্বগতি জনজীবনে অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি করে।বর্তমানে কাচা তরি-তরকারির দাম নাগালের ভিতরে থাকলেও, হঠাৎ করে মুরগির ও মাছের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় সাধারণ মানুষের সমস্যার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের আয় মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ফলে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ সব চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়। ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখতে অবশ্যই কাচাতরকারীর ঊর্ধ্বগতি প্রতিহত করতে হবে।বর্তমান জাতীয় নির্বাচনের আগে, কাচাবাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারকে অসাধু ব্যবসায়ী, মজুদদার ও কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই মানুষ এই অভিশাপ থেকে রক্ষা পাবে। অবস্থা যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে নিত্যপণ্যে সহ কাচা তরিতরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে বড় ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষকে হয়রানি থেকে রক্ষা করতে হলে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই।