খুলনার চার বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭ ইয়াবা সরবরাহকারী অবিলম্বে গ্রেফতারে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা তালিকায় দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা ও শ্রমিকলীগ নেতার নাম

0
1780

নিজস্ব প্রতিবেদক :

খুলনার দু’টি পাবলিক ও দু’টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭জন ইয়াবা, গাঁজা, ফেন্সিডিল সরবরাহকারীকে অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। নির্দেশনা অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য কেএমপি কমিশনার, জেলা প্রশাসককে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয় বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তর থেকে দাপ্তরিকপত্র দেয়া হয়ছ। সরবরাকারীদের মধ্যে হরিণটানা থানার দু’জন এএসআই এবং পরিবহন শ্রমিকলীগের শীর্ষ দু’নেতা জড়িত বলে একই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমত, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-১২ এর যুগ্ম-সচিব ফরিদ আহম্মাদ এক প্রতিবদনে এ নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজা সরবরাহের ফলে দেশের অর্থনীতি যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে; তেমনি শিক্ষার্থীদের মেধা নষ্ট হচ্ছে। সৃজনশীল ও উন্নত সাংস্কৃতিক চর্চা থেকে শিক্ষার্থীরা দুর সরে আছে। ধারাবাহিকভাবে ইয়াবা ও ফেন্সিডিল সেবন করার ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা থেকে দুরে রয়েছে। মাদক বিকিকিনি ও এর অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে উচচ্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দলাদলি, কোন্দল, ছুরিকাঘাত, খুন ও মারপিটের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো তালিকায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহ ইয়াবা সরবরাহের জন্য শহরতলীর মোহাম্মদ নগর এলাকার কালুর স্ত্রী তানিয়া, হরিণটানা ইসলামনগর এলাকার আলমগীর হোসেনের স্ত্রী পারভীন, রুস্তম আলীর ছেলে কবির, মোহাম্মদ নগর এলাকার রাবি, সাগর, মজিদ শেখের ছেলে হাসান শেখ, কালু, হরিণটানা ইসলামনগর এলাকার লাল মিয়ার ছেলে চায়ের দোকানদার রুবেল, একই এলাকার জয়নালের ছেলে চায়ের দোকানদার সাইদুর রহমান, হরিণটানা থানা এএসআই রিপন মোল্যা, হাসানুজ্জামান। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়ট) মাদক বিক্রতা ও সরবরাহকারীদের মধ্যে গিলতলার দক্ষিণপাড়ার আবু হানিফের স্ত্রী মোছাঃ শাবানা বেগম, একই এলাকার আজমত আলীর ছেলে নূর আলম খান, গিলতলা মীরপাড়া এলাকার মৃত রজব আলীর খাঁ’র ছেলে জামাত খাঁ, ফুলবাড়ীগেট এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী বিলকিস, রংমিল গেট এলাকার ইউসুফ হায়দারের স্ত্রী রেখা, গাবতলা এলাকার সৈয়দ মোশারফের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল, একই এলাকার বাবুল মীরের ছেলে টুকু মীর, মীরেরডাঙ্গা এলাকার মৃত শেখ আব্দুল জলিলের ছেলে শেখ মোহাম্মদ এমদাদুল হক, ফুলতলা উপজলার মশিয়ালী পূর্বপাড়া গ্রামের ইসলাম শেখের ছেলে রাজিব শেখ, একই গ্রামের নূরু শেখের ছেলে রাজু শেখ। নর্থ ওয়স্ট ইউনিভার্সিটি ও নর্দান ইউনিভার্সিটি এলাকায় সরবরাহকারীরা হচ্ছেন বাংলাদশ সড়ক পরিবহন শ্রমিকলীগ খুলনা মহানগর শাখার শীর্ষ দুই নেতা, বয়রা ইসলামিয়া কলেজ রোড এলাকার রমজান আলীর ছেলে আলমগীর কবির খোকন, সোনাডাঙ্গা সোনালী নগর হাতেম আলী বাইলেনের বাবুল হোসেন সরদারের মেয়ে হোসনে আরা, সোনাডাঙ্গা থানা রোড এলাকার আল কাফি মল্লিক জনির স্ত্রী এমিলি রহমান বুবলি ও সোনাডাঙ্গা সোনালী নগর এলাকার ফকরুদ্দীন বাহাদুরের মেয়ে জাহানারা বেগম।
অপরদিকে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হলসহ ক্যাম্পাস ইয়াবাসহ অবাধ মাদক সরবরাহকারীর তালিকায় রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই চারজন শিক্ষার্থী আল মামুন, মাসুদুর রহমান রনি, কামরুজ্জামান সনি ও স্বাগত। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হল ও ক্যাম্পাসে ইয়াবা সহরবরাহ করেন বিএনসিসি অফিস সহায়ক বকুল জায়ার্দ্দার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া এ নির্দশনা খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সহকারী কমিশনার সাবরিনা সুলতানা, কেএমপি কমিশনার, খুলনা, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে দাপ্তরিক চিঠি দিয়েছেন।
এ ব্যাপার কেএমপি কমিশনার মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, “সারাদেশেই মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। মাদক বিক্রতাদের ব্যাপারে কোন ছাড় নেই। অচিরেই মাদক বিক্রতাদের গ্রেফতার করা হবে। যদি কোন এএসআই জড়িত থাকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
হরিণটানা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন বলেন, “এএসআই হাসানুজ্জামান এখন খালিশপুর থানায় কর্মরত। আর এএসআই রিপন নাম মাদক সরবরাহকারীর তালিকায় থাকায় তিনি বিষ্মিত হয়েছেন। তিনি বলেন, “তার ভয়ে মাদক বিক্রতারা তটস্ত থাকে।”