খুমেক হাসপাতালে রোগীর ছেলেকে মারধর

0
574

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোববার (২৯ জুলাই) খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে মায়ের চিকিৎসা করাতে এসে ছেলে সাইফুল ইসলামকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ওই হাসপাতালের বহিঃ বিভাগে মেডিসিন চিকিৎসক ডাঃ সুমন রায়ের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ওই চিকিৎসকরে বিরুদ্ধে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিছেন। এর আগেও এ হাসপাতালে চিকিৎসকদের হাতে রোগীর লাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ এটি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, বিষয়টি ভুক্তভোগী আমাকে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছেন। আমি তাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থার উদ্যোগ নেবো।
এ ব্যাপারে খুমেক হাসপাতালের বহিঃ বিভাগের (মেডিসিন) মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুমন রায় এ প্রতিবেদককে বলেন, ২১২ নং রুমে আমি রোগী দেখছিলাম। নিজে রাজনীতির সাথে জড়িত। হাসপাতালে স্টাফ ও চিকিৎসকদের রোগী আগে দেখার অনেক অনুরোধ থাকে। যার কারণে সিরিয়াল ভেঙ্গে আমাদের রোগী দেখতে হয়। রোগীর ছেলে এগুলো ছবি ও ভিডিও ধারনের করছিল। তখন ওই রোগীর ছেলেকে আমার রুমে ঢুকানো হয়। ওই সময় রোগীর ছেলে সাইফুল ইসলামের সাথে তর্কবিতক এক পর্যায় তাকে কিল ঘুষি মারে আমাদের স্টাফরা। তার রুমে সব সময় দুইজন লোক অবস্থান করার বিষয় তিনি উল্লেখ করেন, রোগীর চাপ বেশি থাকায় একজন হাসপাতালে স্টাফ ও আউটসোর্সি লোক থাকে বলে জানান।
এ ব্যাপারে স্বাচিপ ও বিএমএ খুলনা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ সার্বিক বিষয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, খুমেক হাসপাতালে রোগীর চাপ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। একজনের ডাক্তারের পক্ষে প্রতিদিন বহিঃ বিভাগে দেড়শ রোগীকে দেখতে গিয়ে মানসিক চাপ সহ্য করতে হয়। সেক্ষেত্রে রোগীরা কি সেবা পাচ্ছেন এমন প্রশ্ন তোলেন।
সুমন রায়ের ঘটনার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা পর্যায় গেছে বলে তিনি জানতে পারেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, খুব শিগগরিই হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগের প্রস্তুতি চলছে। শূন্য স্থানে জনবল নিয়োগ হলে এ ধরনের অনাকাংঙ্খিত ঘটনা অনেকাংশ কমে যাবে বলে তিনি আশাবাদি।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন, নগরীর বয়রা মেইন রোড মদিনা মসজিদ সংলগ্ন গোলাম মোস্তফা তালুকদারের ছেলে সাইফুল ইসলামের মা কোহিনুর বেগম (৫৭)কে খুমেক হাসপাতালে আসেন। মায়ের পায়ে ব্যথাজনিত কারণে তিনি বহিঃ বিভাগে মেডিসিন ডাক্তারকে দেখানোর জন্য টিকিট কাটেন। টিকিট নিয়ে ২১২ নং রুমে তার অসুস্থ মাকে নিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেন। এ সময় সিরিয়াল ছাড়া পিছনের দরজা থেকে অনেক লোকজন ডাক্তারের রুমে ঢুকছেন। সিরিয়াল ভঙ্গ করার বিষয়টি অবহিত করায় ডাক্তারের রুমে থাকা দুইজন লোক তাকে টেনে হিচড়ে ভেতরে নিয়ে যায়। এ সময় তাকে কিলঘুষি ও ডাক্তারের রুমে ওয়ালের সাথে চেপে ধরে।
মারধরের শিকার সাইফুল ইসলাম বলেন, ডাক্তারের চেম্বার থেকে দুইজন লোক বেরিয়ে এসে তাকে টেনে হিচড়ে ভিতরে নিয়ে যায়। ওইখানে ওই ডাক্তার আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে। এ সময় ওই দুইজন লোক আমাকে কিলঘুষি ও ওয়ালের সাথে চেপে ধরে। এ সময় বাইরে থাকা রোগীরা কাচের জানাল থেকে মারতে দেখে দরজা ভেঙ্গে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। বিষয়টি আমি তাৎক্ষনিক হাসপাতালের সুপারকে অবহিত করি। তিনি আমাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।