এম শফি, ফুলবাড়ীগেট প্রতিনিধি:
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাসাপাতের ৪র্থ তলায় অবস্থিত শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের ১৩/১৪ ওয়ার্ডে মাত্র ৪৮টি বেডে চিকিৎসা নিচ্ছে ৭০-৭৫জন শিশু। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার অনুযায়ী এই ওয়ার্ডে ২২ অক্টোবর চিকিৎসা দেওয়া হয় ৫৯টি শিশুর। ২৩ তারিখে ৫৪টি শিশু এবং গতকাল ২৪ অক্টোবর সেবা প্রদান করা হয় ৬২টি শিশুকে।
শুণ্য থেকে ২৮দিনের শিশুদের জন্য নিওনেটাল ওয়ার্ডে ২০/২০ ফিটের ছোট্ট একটি কক্ষে মধ্যে মাত্র ৬টি বেডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ২৫/৩০টি সদ্য নবজাতকে শিশুকে। স্বল্প জায়গায় ওয়ার্ডের মধ্যে আবার প্রায় অর্ধেক জায়গা জুড়ে রয়েছে কম ওজনে জন্ম নেয়া নবজাতকদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য ইনকিউবেটর মেশিন ৪টি, ফটো থ্যারাপি ৪টি (২টি অকেজো), বাচ্চাদের হিট দেয়ার জন্য ওয়ারমার মেশিন ৩টি সহ মোট ১১টি মেশিন রয়েছে। নিওনেটাল ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রার ও সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে গত ২২ অক্টোবর এই ওয়ার্ডে ২৫টি, ২৩ অক্টোবর ২৭টি এবং গতকাল ২০টি নবজাতকের চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
চিকিৎসা নিতে আসা নগরীর ফুলবাড়ীগেট এলাকার মোমেনা খাতুন বলেন, শনিবার বিকেলে তিনি প্রসূতি বিভাগে নরমাল ডেলিভারীর মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান জন্মদেন। প্রচন্ড চাপের কারনে রবিবার তাকে ছাড়পত্র দিয়ে সকাল ১১টার মধ্যে বেড থেকে নামিয়ে দেয়। প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে তার বাচ্চা যেখানে চিকিৎসাধীন নবজাতক শিশু ওয়ার্ডের বারান্ধায় গেটের দারোয়ানকে অনুরোধ করে ও ভিতরে ঢুকতে না পেওে এ অবস্থায় ও তিনি ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকেন। তিনি আরও বলেন এক এক বেডে ৩/৫টি নবজাতক শিশুকে রাখা হয়েছে যেখানে শিশু পরিবর্তন এবং চুরি যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এই শিশুদেরকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তাদের পাশে যে ব্যবস্থাপত্র রয়েছে তা আইডেনটি ফাই না করেই শিশুর পাশে থাকা ব্যবস্থাপত্র দেখে চিকিৎসা দিতে দেখা যায়। এছাড়া শিশু বিভাগে অধিকাংশ জানালার গ্লাস ভাঙ্গা রয়েছে, এ ব্যাপারে খুলনা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা: মনোজ কুমার মালাকার বলেন, প্রতিটি ডাক্তার এবং সেবিকাদের শিশুকে ব্যবস্থাপত্রের নাম আইডেন্টিফাই করেই চিকিৎসা দিতে হবে। তা না হলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। শিশু বিভাগে প্রয়োজনের তুলনায় ওয়ার্ডে বেড সংকট রয়েছে। এ ওয়ার্ডে প্রতি রোগীর জন্য আলাদা বেড প্রয়োজন। এছাড়া এই সকল শিশুদের জন্য বিশেষ বেবী কেয়ার ইউনিট যেখানে শুধুমাত্র একটি বেডে একটি শিশুই থাকবে। কিন্তু সরকারী হাসপাতাল হওয়ায় ভর্তি হওয়া শিশুদেরকে চিকিৎসা দিতে এই অবস্থা স্বীকার নিতে হচ্ছে। হাসপাতালের তত্বাবাধয়ক ডা: টি এম মঞ্জুর মোরশেদ এই প্রতিবেদককে বলেন বেডের সল্পতা এবং রোগীদের দূভোগের কথা স্বিকার করে তিনি বলেন, আড়াইশ বেডের হাসপাতালে রোগি থাকছে ৯শত তাছাড়া আড়াইশ বেডের জনবল দিয়ে চলছে পাঁচশ বেডের হাসপাতাল। সিট ছাড়া ভর্তি করা সমস্যা থাকে তবে সরকারি হাসপাতাল মানবিক কারণে ভর্তি করতে হয়। এক বেডে একাধিক বাচ্চা থাকায় ইন্টানী নার্সরা বাচ্চাদের নাম আইডেন্টিফাই না করে ব্যবস্থা দিতে দেখাগেছে অভিযোগের বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে দেখে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। এই অবস্থায় শিশু চুরি অথবা পাল্টে যাওয়ার সমুহ সম্ভবনা থেকে যায় বিষয়টি তিনি সমাধানে পথ বের কওে ব্যাবস্থা নেওয়ার আশ^াস দেন। এই অবস্থায় ভুক্তভোগি সহ সেবা নিতে আসা ব্যাক্তিদের দাবী অবিলম্বে শিশু বিভাগের পর্যাপ্ত বেড, নিওনেটাল ওয়ার্ডে প্রসারিত করে বেড বাড়ানো, আধুুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন জরুরী হয়ে পড়েছে। তাছাড়া সামনে শীত আগত ওয়ার্ডেও অধিকাংশ জানালার গ্লাস ভাঙ্গা যা সংস্কার করা প্রয়োজন।