অনলাইন ডেস্ক : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাত বছরের কারাদন্ডের দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। মঙ্গলবার বকশিবাজারে পুরান ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামানের আদালতে আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাত বছরের কারাদন্ড দাবি করেন। মঙ্গলবার চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য্য ছিলো।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান বিএনপি নেত্রী। আর আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় ১২টা ১০ মিনিটে।
শুরুতেই মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশন তথা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। তিনি বলেন, ‘এই ট্রাস্টের কোনো অর্থ কোনো দাতব্য কাজে ব্যবহার করা হয়নি। যে টাকা ছিল তার মধ্যে ছয় কোটি ৫২ লাখ টাকা দিয়ে কাকরাইলে ৪২ শতাংশ জমি কেনা হয়েছে। কিন্তু জমির মালিক সুরাইয়া বেগমকে এক কোটি ২২ লাখ টাকা অতিরিক্ত দেয়া হয়েছে। কেন এই অতিরিক্ত টাকা দেয়া হয়েছে তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।’
ট্রাস্টের গঠন থেকে শুরু করে পরবর্তী বিভিন্ন কার্যকলাপ আইন অনুযায়ী হয়নি বলেও দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। তিনি বলেন, ১৯৯১ সালের পর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নিজে ট্রাস্টি হয়ে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করেন। যে ব্যাংক হিসাব করা হয়েছে তাতে তার নাম আছে। কিন্তু তার পরিচয়ে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার সবই কাজ রাষ্ট্রীয় কাজ। তিনি ব্যক্তিগত কোনো কাজ করতে পারেননি।
আবার ট্রাস্ট খোলা হয়েছে খালেদা জিয়া তখন যে বাসায় থাকতেন সেই সেনানিবাসের মইনুল রোডের বাসার ঠিকানায়। কাজল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বাসা রাষ্ট্রীয় বাসা, এই ঠিকানা ব্যবহার করে তিনি ব্যক্তিগত কাজ করতে পারেন না। আবার খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রীর হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এই ট্রাস্টে কোনো টাকা লেনদেন হয়নি বলেও জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এতে ট্রাস্টের নামে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ। এরপর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে তাদের বিচার শুরু হয়।
খালেদা ছাড়া এই মামলায় আসামি করা হয় চার জনকে। এরা হলেন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
একই আদালতে গত ২৫ জানুয়ারি যু্ক্িত উপস্থাপন শেষ হয়েছে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার। ওই মামলাতেও খালেদা জিয়ার পাশাপাশি তার বড় ছেলে তারেক রহমান এবং আরও চার জন আসামি আছেন। এই মামলায় রায় ঘোষণা হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি।
এই মামলাটি করা হয়েছিল সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের জুলাইয়ে। এটিরও বাদী দুর্নীতি দমন কমিশন।