খালেকের বিরুদ্ধে মঞ্জুর তথ্য গোপনের অভিযোগের শুনানী সম্পন্ন

0
429

সুমন আহমেদ ও এমজে ফরাজী, খুলনাটাইমস্:
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক এর বিরুদ্ধে হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগের আপীল শুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেসিসি নির্বাচনের আপীল কর্তৃপক্ষ ও বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল পৌনে ৩টায় তাঁর কার্যালয়ে এই শুনানী কার্যক্রমের বিচারক ছিলেন। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু গত ১৬ এপ্রিল এ অভিযোগ করেন।
আপীল বোর্ডের এ শুনানীতে মুখোমুখি হন প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ও নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এসময় স্ব স্ব প্রার্থীর আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। তখন তারা নিজেদের অবস্থান থেকে তাদের যুক্তি তুলে ধরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি দাখিল করেন। শুনানী শেষে দুই মেয়র প্রার্থীকেই হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। এসময় তারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেসিসি নির্বাচনের আপীল কর্তৃপক্ষ ও বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া জানান, আ’লীগ মেয়র প্রার্থীর হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগের শুনানী হয়েছে। একইসাথে কাউন্সিলর প্রার্থীদের অভিযোগের শুনানী হয়। তিনি বলেন, একজন বিচারকের দায়িত্বে নিয়োজিত আছি। সুতরাং এব্যাপারে আর কোন মন্তব্য করা যাবেনা। আপীল শুনানীর শেষ দিন শুক্রবার। ওইদিনই সব কিছু প্রকাশ করা হবে।
এর আগে শুনানী শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বলেন, ‘‘বিএনপির মেয়র প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিলো, যা নিয়ে আজ শুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমার পক্ষ থেকে সব কিছুই আপিল কর্তৃপক্ষের উপস্থাপন করা হয়েছে। এখন আপিল কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।’
এসময় বিএনপি’র প্রার্থীকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, অভিযোগ বাদ দিয়ে জনগনের কাছে যান। ভোটের মালিক জনগন, তারাই যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই ভোট দিয়ে কেসিসির মেয়র নির্বাচিত করবে।’’
নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে তার দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির প্রার্থী হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন যেটি নিয়ে আমরাও আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। এখন বিভাগীয় কমিশনার যেকোন দিন এর শুনানী করবেন। সেসময় হয়তোবা আমাদের আবারও ডাকবেন।
এ বিষয়ে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী যেসব কাগজপত্র আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করেছেন তা যথেষ্ট নয়। এখন যদি আইনের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে তিনি বের হয়ে যান তা হবে খারাপ দৃষ্টান্ত।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা একটা সময় ওই প্রতিষ্ঠানটি করেছি। তবে তার কোন কার্যক্রম নেই। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা নেই, সন্মানীয় ভাতা নেই, তাই হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি।
মঞ্জু আরও বলেন, তালুকদার আব্দুল খালেক আপিল কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, কোন মুনাফা, বেতন বা সন্মানীয় ভাতা ছাড়াই দুই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আছেন, সেজন্য হলফনামায় উল্লেখ করেননি। ঠিক তেমনিভাবেই খুলনা প্রপার্টিজ লিমিটেড থেকে কোন মুনাফা আসেনা বিধায় এটিও হলফনামায় তুলে ধরা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ এপ্রিল মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু রিটার্নিং অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগপত্রে তিনি তালুকদার আব্দুল খালেক’র মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান। এর পরের দিনই আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক একইভাবে হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর মনোনয়ন বাতিলের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেন।