খবর বিজ্ঞপ্তি:
পরিকল্পিত পরিবেশবান্ধব বাসযোগ্য মহনগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে কেসিসি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক-এর সাথে উন্নয়ন কমিটির মতবিবিময় সভা ও ১৩ দফা দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি সোমবার (১৪ ফেব্রæয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টায় কেসিসি ভবনে প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ্য করা হয়, খুলনা মহানগরীকে একটি আধুনিক ও তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত সকল সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করার অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করবেন নগর পিতা। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে খুলনা পৃথিবীর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় শহরগুলোর একটি। ঘূর্ণিঝড়, উঁচু জোয়ার, জলাবদ্ধতার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও কিছু নগর দুর্যোগ ভবিষ্যত খুলনার জন্য হুমকি। এ হুমকি নিরসনের উপায় বের করতে হবে। এ লক্ষ্যে সুপরিকল্পিতভাবে শহর সম্প্রসারণের কাজ করতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন, যানজট নিরসন, নদী বেষ্টিত খুলনাকে ঘিরে শহর রক্ষা বাঁধ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ, শহরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। এছাড়াও ময়ূর নদী ও ২২টি খালসহ খুলনা নগরীতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে রাস্তা-ঘাট ও ড্রেন প্রশস্তকরণের মাধ্যমে খুলনাকে একটি আধুনিক তিলোত্তমা নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করতে হবে।
বর্তমানে খুলনা শহরে প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ বসবাস করে। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে ৫০ হাজারের উপরে মানুষ আসা-যাওয়া করে। এ সমস্ত চাপ নগরীকে বহন করতে হয়। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নাগরিক সেবায় রাস্তাঘাট সংস্কার করছে, তবে এখন অবৈধ দখলমুক্ত করে রাস্তাঘাট সংস্কারের পাশাপাশি রাস্তা প্রশস্তকরণ জরুরী প্রয়োজন। খুলনার যানজট এখন অসহনীয় পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণহীনভাবে রাস্তা দখল করে আছে। রাতে নগরীতে অনেক রাস্তায় প্রয়োজনীয় আলোর অভাব রয়েছে। এসব দিকে কেসিসিকে নজর দিতে হবে। নগরীর ১৭ লক্ষ মানুষের জনপদে প্রতিদিনের জীবন চলার সাথে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এজন্য মানুষের জন্ম-মৃত্যু, আশা-আকাংখা, উন্নয়ন-উত্তরণ প্রত্যাশা-প্রাপ্তি ও আনন্দ-বেদনা সকল বিষয়ে মেয়রসহ তাঁর পরিষদবর্গকে নগরবাসীর সাথে এক হয়ে চলতে হবে। সময়ের বিবর্তনে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সেবার ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়েছে। নাগরিক জীবনে বিনোদন বা অবকাশের জন্য নগর-উদ্যান বা পার্ক আবশ্যক। এজন্য প্রত্যেক শহরে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয় পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্র। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য শহীদ হাদিস পার্ক ছাড়া খুলনা মহানগরের সাধারণ জনগণের অবকাশের জন্য তেমন কোন পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। গোলকমনি শিশু পার্ক, জাতিসংঘ শিশু পার্ক, শেরে বাংলা রোডস্থ মিনি শিশু পার্ক, সোনাডাঙ্গা সোলার পার্ক, কেডিএ নিরালায় মিনি শিশু পার্ক, সোনাডাঙ্গাস্থ মিনি শিশু পার্ক, খালিশপুর রোডস্থ শিশু পার্ক, প্রেম কানন থাকলেও তা’ যথাযথ তত্ত¡াবধানের অভাবে সেগুলো প্রতিদিন একটু একটু করে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই এসব পার্কের কথা ভুলে গেছে। কোনো কোনো জায়গায় অনৈতিক এবং বেআইনী কার্যক্রমও চলে। এই পার্কগুলো যথাযথ সংস্কার করে পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করলে নগরবাসী, বিশেষ করে শিশুরা কিছুটা হলেও বিনোদনের সুযোগ পাবে।
দাবিনামাÑ(১) খুলনা পাবলিক হলের স্থলে বহুমাত্রিক দৃষ্টিনন্দন বহুতল ভবন নির্মাণ করা (২) অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে রাস্তা-ঘাট সংস্কারের পাশাপাশি নগরীর রাস্তাগুলোকে প্রশস্ত করা (৩) নগরীতে আরও মানসম্মত ইংরেজি ও বাংলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা (৪) খুলনা শহরকে আরও সম্প্রসারণ করা (৫) নগরীতে বনায়ন প্রকল্প হাতে নেয়া (৬) ফুটপাত হকারমুক্ত করে তাদের বিকল্প ব্যবস্থা করা (৭) ময়ূর নদী সংস্কার, নদীতে জোয়ার ভাটার প্রবাহ তৈরী করাসহ নগরীর ২২টি খাল অবৈধ দখলমুক্ত করা (৮) শহরতলীর খালগুলো খনন করতে হবে এবং অতি বৃষ্টির সময় পাম্প চালিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন করা (৯) স্বাস্থ্যখাতের উন্নতির জন্য ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মেটারনিটি ক্লিনিকের পাশাপাশি একটি নগর জেনারেল হাসপাতাল বাস্তবায়ন এখন খুলনার মানুষের প্রাণের দাবি (১০) নদী বেষ্টিত খুলনার চারিপার্শ্বে শহর রক্ষা বাঁধ, রিভারভিউ পার্ক ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা (১১) খুলনার পার্কগুলো সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। পুরাতন পুকুরগুলো যাতে বন্ধ করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া (১২) জীবনের ঝুঁকি আছে এ ধরনের পুরাতন বিল্ডিংগুলো ভাঙার ব্যবস্থা করা (১৩) ভৈরব, রূপসা ও পশুর নদীর নাব্যতা বাড়াতে নিয়মিত ড্রেজিং এর ব্যবস্থা করা।
এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ-জামান, মহাসচিব শেখ মোহাম্মাদ আলী, সাবেক সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন, সহ-সভাপতি শাহিন জামাল পন, মোঃ নিজাম-উর রহমান লালু, অধ্যাপক মোঃ আবুল বাসার, মিজানুর রহমান বাবু, কোষাধ্যক্ষ মিনা আজিজুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব এড. শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, মোঃ মনিরুজ্জামান রহিম, মিজানুর রহমান জিয়া, প্রচার সম্পাদক মফিদুল ইসলাম টুটুল, নুরুজ্জামান খান বাচ্চু, মোঃ খলিলুর রহমান, রকিব উদ্দীন ফারাজী, এস এম আক্তার উদ্দির পান্নু, অধ্যা মোঃ আজম খান, গোলাম মোস্তফা, প্রমিতি দফাদার প্রমুখ।