কেএমপি ডিবি’র ইয়াবা-গুলি উদ্ধার, সাংবাদিক ও সোর্স আসামী

0
438

নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের অভিযানে ৮৪০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩ টি তাজা বন্দুকের কার্তুজসহ ২ জন গ্রেফতার হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রæয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। ডিবি সহকারী পুলিশ কমিশনার সুমন কর, অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন ও নজরুল ইসলাম, এসআই মো: জাহাঙ্গীর আলমসহ নগর ডিবি’র ৮/১০ জন অভিযানে অংশ নেন।
আটকেরা হলেন আড়ংঘাটা থানাধীন রায়েরমহল বাজার রোডের বাসিন্দা মৃত কাজী ময়েন উদ্দিনের ছেলে কাজী আনিচুর রহমান (৫২), ও মোড়েলগঞ্জ বাড়ইখালীর আব্দুল করিমের ছেলে মোঃ শাহ আলম (৪০)। আটক শাহ আলম খুলনা সদর থানার ৬ নং বিকে মেইন রোড (নবম গলি) এবং সোনাডাঙ্গার ১২৫/৪ খোকন কমিশনারের গলিরও বাসিন্দা।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন ছাত্তার বিশ্বাস রোড’র কালভার্ট মোড়স্থ আজাদ ষ্টোর নামক দোকানের সামনে হতে ৪০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত কাজী আনিচুর রহমান, মোঃ শাহ আলম এর নিকট হইতে ক্রয় করিয়াছে মর্মে স্বীকার করে। পরবর্তীতে দুপুর আড়াইটার পর অভিযান চালিয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন ছাত্তার বিশ্বাস রোড (খোকন কমিশনারের গলি), আবুল কালাম মল্লিক এর ১২৫/৪ নং বাসার ২য় তলায় পূর্ব পাশের ফ্লাটের ২ নং আসামী মোঃ শাহ আলম (৪০) এর ভাড়া বাসার শয়নকক্ষ হইতে মোট ৮০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩ু টি তাজা বন্দুকের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদ্বয় দীর্ঘদিন যাবৎ খুলনা মহানগর এলাকায় মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয়-বিক্রয়ের কাজ করে আসছে। উক্ত ১ নং আসামী কাজী আনিচুর রহমান(৫২) এর বিরুদ্ধে ০২ (দুই) টি মামলা এবং ২ নং আসামী মোঃ শাহ আলম(৪০) এর বিরুদ্ধে ০১ (এক) টি মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় পৃথক ভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে এবং অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, রোহান পরিবহনের মাধ্যমে সম্প্রতি ৭ হাজার পিচ ইয়াবার চালান খুলনা শহরে প্রবেশ করায় একটি মাদক সিন্ডিকেট। আবার তারাই অস্ত্র-গুলির ব্যবসা করছে। গোপন সূত্রে এই তথ্য পায় নগর ডিবি। এরই সূত্র ধরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে অস্ত্র মেলেনি। জব্দ করা ইয়াবার পরিমাণও কমেছে। তবে এই চক্রের অবৈধ কারবার নিয়ে অধিকতর তদন্ত করছে ডিবি। প্রাথমিক তদন্তে অস্ত্র বেচা-কেনার সাথে জড়িত কতিপয় ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে।
সূত্র জানিয়েছে, আবুল কালাম মল্লিক এর ১২৫/৪ নং বাসার ২য় তলায় পূর্ব পাশের ফ্লাটের ২ নং আসামী মোঃ শাহ আলম (৪০) এর ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরমধ্যে আটক আনিচ পুলিশের সোর্স বলে পরিচিত। তবে খুচরা মাদক বেচাকেনায় তার সরব ভূমিকা রয়েছে। আরেকজন শাহ আলম নিজেকে স্থানীয় এক সংবাদপত্রের সাংবাদিক বলে পরিচয় দেন। সে নিয়মিত এই সিন্ডিকেটের অবৈধ কার্যাদি সম্পাদন করেন। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি’র নিয়ে যাওয়া তৃতীয় ব্যক্তিটি হলেন কেএমপি’র খালিশপুর থানা অফিসার ইনচার্জ’র গাড়ি চালক খবির। বৃহস্পতিবার দিনভর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়, তবে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। জানা যায়, খবিরই শাহ আলম রুম ভাড়া করে দেন এবং সে নিজেও সেখানে পাশের রুমে একাকী বসবাস করেন।
খালিশপুর থানা অফিসার ইনচার্জ কাজী মোস্তাক আহমেদ বলেন, তার গাড়িচালককে সন্দেহজনকভাবে আটক করে ডিবি। পরে ঘটনার স্বাক্ষী করা হয়েছে। তবে ওই অপরাধের সাথে তার সম্পৃক্ততা মেলেনি। কেএমপি থেকে চালক খবিরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নে, জানা নেই, অফিসিয়ালি কোন পত্র পাইনি বলে জানান ওসি। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ রবিবার আদালতে আটক আসামীদের রিমান্ড আবেদন কর জানা গেছে।