আন্তর্জাতিক ডেস্কঃসাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রার্থনা সভায় যোগ দিয়ে ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দিয়েছিলেন ভারতশাসিত কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ। সেই ভিডিও ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত কাশ্মির উপত্যকার বাসিন্দানরা। বুধবার ঈদের নামাজ পড়তে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। নামাজের পর রাজধানী শ্রীনগরসহ অঞ্চলটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও গুলি ছুঁড়েছে পুলিশ। এসব ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে জানা যায়নি। একইদিনে কাশ্মির উপত্যকার আলাদা তিন জেলা থেকে দুই পুলিশ সদস্যসহ তিন জনের মরদেহ উদ্ধারের পর কাশ্মিরজুড়ে পুলিশি তৎপরতা জোরালো করা হয়েছে।গত ২০ আগস্ট দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে সদ্য প্রয়াত বাজপেয়ীর প্রার্থনা সভায় যোগ দিয়ে তার কাশ্মির নীতির প্রশংসা করে রাখা বক্তব্য ওই স্লোগান দিয়ে শেষ করেছিলেন বর্তমান ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লাহ। বুধবার ১৭ শতকের প্রাচীন হযরতবাল মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে গেলে তার নিন্দা জানিয়ে স্লোগান ওঠে। তবে তাতে নিরুদ্বেগ থেকে পুলিশ ও সমর্থকদের তৎপরতায় নামাজ শেষ করেন। নামাজের পর কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরসহ বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জ, এবং টিয়ারগ্যাস ও বন্দুকের গুলি ছুঁড়েছে পুলিশ। পাথর ছুঁড়ে তার জবাব দেয় বিক্ষোভকারীরা।
কাশ্মির পুলিশের বরাত দিয়ে হিন্দুস্থান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, শ্রীনগর ঈদগাহ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস ছোঁড়া হয়। এছাড়া অনন্তনাগ, সোপোর ও কুপওয়ারা শহরেও বিক্ষোভাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শক্তি প্রয়োগ করেছে পুলিশ। অনন্তনাগ শহরে চোখে রাবার বুলেটের আঘাত পাওয়া এক তরুণকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে বিক্ষোভকারীদের ওপর বন্দুকের গুলিও ছোঁড়া হয়েছে।
একইদিন কাশ্মির উপত্যকার কুলগাম ও পুলওয়ামা শহর থেকে দুই পুলিশ সদস্য ও উত্তর কাশ্মিরের কুপওয়ারা জেলা থেকে এক বিজেপি কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পৃথক এসব ঘটনার জন্য ‘জঙ্গিদের’ দায়ী করেছে কাশ্মির পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের পর কাশ্মিরজুড়ে পুলিশি তৎপরতা জোরালো করার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, কাশ্মিরে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর কেউ কেউ সরাসরি স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত। কেউ কেউ আবার কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে। ইতিহাস পরিক্রমায় ক্রমেই সেখানকার স্বাধীনতা আন্দোলনের ইসলামিকরণ হয়েছে। এখন সেখানকার বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর মধ্যে হিজবুল মুজাহিদিন সবচেয়ে সক্রিয়। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মিরের জাতিমুক্তি আন্দোলনকে বিভিন্ন জঙ্গিবাদী তৎপরতার থেকে আলাদা করে শনাক্ত করে না। সন্দেহভাজন জঙ্গি নাম দিয়ে বহু বিদ্রোহীর পাশাপাশি বেসামরিকদের হত্যার অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে।