ওয়েবসাইট হ্যাক! কোটা সংস্কারে স্লোগান দিয়ে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের

0
422

অনলাইন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির দফতরসহ দেশের গুরুত্বপূর্ন অধিকাংশ সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, শিক্ষা, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখা যায়, সেখানে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন লেখা স্লোগান রয়েছে।এছাড়া কোটা সংস্কারের দাবিতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়। চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের টিয়ারশেল ছোঁড়ার সমালোচনার পাশাপাশি ছাত্রলীগের ব্যাপক নিন্দা জানানো হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আরোপের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যেরও সমালোচনা করে হ্যাকাররা।উল্লেখ্য সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘কেউ দাবায় রাখতে পারবে না’। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন- বিটিআরসি জানিয়েছে, হ্যাক হওয়া ওয়েবসাইটগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর থেকে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রগতি সরণির মোড়ে জড়ো হন। এসময় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে প্রগতি সরণি থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও বাড্ডা এলাকায় পুরোপুরি যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে।এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ করেন। সরকার দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে নেয়ার কথা জানান শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে রাজধানীর রামপুরা, ধানমন্ডির কয়েকটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে আজও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশ পরীক্ষা বর্জন করেছেন আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেছেন, ক্লাশ-পরীক্ষা চলছে। এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আর, কোটা সংস্কার আন্দোলন বানচাল করতে একটি মহল উপাচার্যের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ।কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে আজও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশ পরীক্ষা বর্জন করেছে আন্দোলনকারীদের একাংশ। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ঘুরে দেখা যায়, শ্রেণি কক্ষগুলোতে নেই কোনো শিক্ষার্থী। তালা ঝুলছে বেশির ভাগ শ্রেণী কক্ষের দরজায়। ক্যাম্পাস ছিল অনেকটাই ফাঁকা।দুপুরের দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। কোটা সংস্কারের দাবি জানান তারা। একইসঙ্গে পাশাপাশি ক্যাম্পাসে পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও জলকামান ব্যবহার ও শিক্ষার্থীদের আহত হবার ঘটনার তদন্তের দাবি জানান।এদিকে, সরকারের একমাস সময় বেঁধে দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত রাখতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান আন্দোলনকারীদের আরেকটি অংশ।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে উল্লেখ করে ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে না এমন বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহবান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন পরিদর্শনে যান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া। এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, এ হামলায় জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।উপাচার্যের বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে অপরাজেয় বাংলার সামনে মানববন্ধন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সদস্যরা। মানববন্ধন থেকে ঘোষণা দেয়া হয় আগামী বৃহস্পতিবার এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। পরে মানববন্ধন শেষে শিক্ষকরা ভিসির বাসভবন পরিদর্শনে যান।