হিলি স্থলবন্দর যানজট নিরসনে গতিশীল হবে আমদানি-রপ্তানি

0
277

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতে যাওয়া-আসার প্রধান সড়কগুলো অপ্রশস্ত ও সরু। এ কারণে প্রতিদিন সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। আর এ যানজটের ফলে ব্যাহত হচ্ছে দুই দেশের আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য। সড়কের ওপর পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক ও বাংলাদেশি ট্রাকগুলো দাঁড়িয়ে থাকায় এ যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করে। যানজটের কারণে একদিকে যেমন আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
হিলি স্থলবন্দর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর। ১৯৮৬ সালে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে পণ্য আমদানি-রফতানি বাণিজ্য শুরু হয়। তবে ২০০৭ সালের ২৬ নভেম্বর এটি শুল্কস্টেশন থেকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে। যাত্রা শুরুর পর থেকে বছরে শত শত কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করলেও এ বন্দরের চেকপোস্ট গেট থেকে শুরু করে বন্দর পর্যন্ত সড়কের কোনও উন্নয়ন হয়নি। সড়কটি খুবই অপ্রশস্ত ও সরু। এ সড়ক দিয়ে পণ্য বোঝাই বড় ট্রাকগুলো নিয়ে যেতে অনেক সমস্যা হয়। এক রাস্তা দিয়ে মানুষ ও সব ধরনের যানবাহন চলাচল করায় সব সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দরটির এমন হাল হতাশাজনক।
প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে ৫শ’ থেকে ৬শ’ ট্রাক পণ্য ভারত থেকে আমদানি হওয়ার কথা থাকলেও যানজটের কারণে দুশ’ থেকে আড়াইশ’ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়। একইভাবে হিলি স্থলবন্দর থেকে দেশের অভ্যন্তরেও পণ্য পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে। ট্রাকগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে পণ্যের মান খারাপ হয়ে যায়। এ ছাড়া বন্দরের ভেতরে দেরিতে ঢোকার কারণে নাইট চার্জ দিতে হচ্ছে। দুপুরের দিকে ভারত থেকে পণ্য নিয়ে ঢুকলেও সড়কে অনেক রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকে রাতে বন্দরের ভেতরে ঢুকতে হয়। এ কারণে পণ্য খালাশ করে ভারতে ফিরতে দুই-তিন দিন লেগে যায়। যানজট না থাকলে একদিনেই কাজ সম্পন্ন হতো। এসব কারণে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একইভাবে কম পণ্য আমদানি-রফতানির কারণে সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এছাড়া এই স্থলবন্দরে নেই কোনও ট্রাক টার্মিনালও, যার কারণে ট্রাকগুলোকে প্রধান সড়কেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। টার্মিনাল থাকলে এবং ট্রাকগুলোকে সেখানে রাখতে পারলে যানজট হতো না। ভারত থেকে যে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ঢোকে সেগুলো প্রধান সড়কেই দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হয়। অনেক সময় রিকশা, মোটরসাইকেল তো দূরের কথা, হেঁটেও চলাচল করা যায় না। প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে। তাই সেখানকার লোকজনকে অনেক দূর ঘুরে বিকল্প রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। এতে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
দিনাজপুরের হাকিমপুর পৌরসভাধীন হিলি স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্ট থেকে শুরু করে বন্দরের গেট পর্যন্ত সড়কে সবসময় যানজট লেগে থাকে। জানা গেছে এই সড়ক প্রথমে ছিল এলজিইডির। পরে রোডস অ্যান্ড হাইওয়েকে হস্তান্তর করা হয়। রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে এরইমধ্যে তার পরিকল্পনা করছে। তবে এক্ষেত্রে দেরি না করে দ্রুত সড়কটি বর্ধিত করে যানজট নিরসন করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা আহ্বান জানাই অতিসত্বর সড়কটি যাতে চারলেন অথবা ছয়লেন করা হয়, অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্রাক স্ট্যান্ড স্থাপন করে এখানকার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমকে গতিশীল করা হোক।