সোনামসজিদ স্থলবন্দর রাজস্ব আদায়ে ধস ঠেকাতে উদ্যোগী হোন

0
496

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে। অর্থবছরে প্রথম ৬ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা কম। যা আদায় হয়েছে, তা লক্ষ্যমাত্রার ৩ ভাগের একভাগ। প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪৫০ কোটি ৫৮ লাখ ৫১ হাজার টাকা। আর ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩৮ কোটি ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এর বিপরীতে প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে মাত্র ৭৩ কোটি ৩২ লাখ ২৩ হাজার টাকা।
বৃহৎ একটি স্থলবন্দরে রাজস্ব আয় কম হওয়া জাতীয় অর্থনীতির জন্যও ক্ষতিকর। ১৬৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হওয়া মানে সরকারি কোষাগারে এই টাকার ঘাটতি সৃষ্টি হওয়া। এই বন্দরে যদি এভাবে চলতে থাকে এবং অন্যান্য স্থলবন্দরগুলো থেকেও যদি রাজস্ব আদায় কম হয়ে থাকে তাহলে টাকার অঙ্কে তা একসময় অনেক বড় হয়ে দাঁড়াবে।
রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে জানা গেছে, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাবে ভারত থেকে পণ্য আমদানি কমে যাচ্ছে। যে কারণে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। কিছুদিন আগেও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাকভর্তি পণ্য আসতো। বর্তমানে মাত্র ১২০ থেকে ১৩০ ট্রাক পণ্য আসছে। এ কারণে স্থলবন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে পেঁয়াজ আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে বলে রাজস্ব আদায় উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। ফল আমদানির ক্ষেত্রে শতভাগ রাজস্ব আদায়ের কারণে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের কিছু কিছু ফল আমদানিকারক অন্য বন্দর দিয়ে সুযোগ সুবিধা বেশি পাওয়ায় ওইসব বন্দর দিয়ে ফলসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করছে।
এছাড়া সোনামসজিদ স্থলবন্দরে অন্যতম প্রধান আমদানি পণ্য ভারতীয় পাথর। দুমাস আগে ভারত থেকে পাথর ও ফ্লাই-অ্যাশ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংকটে পড়েছিল বন্দরটি। বন্দর ব্যবস্থাপনা সংস্থা পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের অযাচিত ট্যারিফ সংযোজনের মৌখিক নির্দেশে পাথর ও ফ্লাই-অ্যাশ আমদানি বন্ধ রেখেছিলেন আমদানিকারকরা। সেই সংকট এখনও কাটেনি।
সব মিলিয়ে আমরা আশা করি, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদ স্থলবন্দরে সঙ্কট কাটাতে এবং রাজস্ব ধস ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হবে। যেহেতু অন্যান্য বন্দরে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা ওইসব বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করছে এবং রাজস্ব আদায় কম হয়েছে, সেহেতু সব স্থলবন্দরগুলোতে সরকারের একই নিয়মে রাজস্ব আদায় করা হলে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আরও বেশি পণ্য আমদানি হবে এবং রাজস্ব আয়ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেকগুণ বেশি হবে।