সূচক-লেনদেন বেড়েছে অর্থমন্ত্রীর বৈঠকের পর

0
302

খুলনাটাইমস অর্থনীতি: পুঁজিবাজার নিয়ে বাজারের অংশীজনদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তফা কমালের বৈঠকের দিনে মূল্যসূচক ও লেনদেন বেড়েছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন সোমবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বেড়েছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৯০ পয়েন্টের মতো। ঢাকায় লেনদেন হয়েছে ৩৮৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। রোববার এই বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩১৭ কোটি টাকা। চট্টগ্রামে সোমবার ৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। রোববার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ৩২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। পুঁজিবাজারে দরপতনের কারণ খুঁজতে বেলা ১১টায় শেরে বাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের সম্মেলন কক্ষে পুঁজিবাজারের সকল অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক বসেন অর্থমন্ত্রী। তার আগেই সকাল সাড়ে ১০টায় দুই বাজারে লেনদেন শুরু হয়। বৈঠকে বাজারের জন্য ‘ভালো’ কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে- এমন খবরে চাঙ্গাভাবে লেনদেন শুরু হয়। ঘন্টা খানেরকের মধ্যে ডিএসইএক্স প্রায় ৩০ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৯৭০ পয়েন্টে উঠে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ১৭ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৯৫৯ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে এসে লেনদেন শেষ হয়। বৈঠকের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘এখানে আজ আশ্বস্ত করব সবাইকে যে, আমরা পুঁজিবাজারকে সুশাসন দেব এবং আমরা গর্ভন্যান্সে ভালো করব। যেসব ত্রুটি-বিচ্চুতি আছে, মিসম্যাচ আছে, সেগুলো আমরা টেককেয়ার করব। এভাবে আমাদের পুঁজিবাজারকে আমরা একটি শক্তিশালী বাজারে রূপান্তরিত করব। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, অধ্যাপক আবু আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভুঁইয়া, বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন, বাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সি কিউ কে মুস্তাক আহমদ, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মজিব উদ্দিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন এবং সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ডিএসই ও সিএসই চেয়ারম্যান ও পরিচালক, ডিএসই ব্রোকারর্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, অ্যাসোসিয়েশন অব মিউচুয়াল ফান্ডসের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক- সোনালী, জনতা, অগ্রণী এবং রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
২০১০ সালে বড় ধসের পর ২০১৭ সাল থেকে পুঁজিবাজারে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে; ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু তার পরের বছর আবার কমতে শুরু করে সূচক। ২০১৯ সালে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে সবাই প্রত্যাশা করলেও তেমনটি হয়নি। দিন যতো যাচ্ছে বাজারের অবস্থা ততোই খারাপ হচ্ছে। ডিএসইএক্স ৫০০০ পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে। লেনদেন নেমে এসেছে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে।
বাজার পরিস্থিতি
সোমবার ডিএসইতে অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ১৫৫ দশমিক ৬১ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ১৬ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৫৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্টে। সোমবার ঢাকায় লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৫৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এরমধ্যে দর বেড়েছে ১৬১টির, কমেছে ১৩৬টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬টির দর। অন্যদিকে সিএসইতে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৮৯ দশমিক ১২ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৬২ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৪৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এরমধ্যে দর বেড়েছে ১২৭টির, কমেছে ৮৫টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টির দর।