সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা

0
775

বাগেরহাট প্রতিনিধি :
সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহামুদুল হাসান নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জানান, ‘জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাস কাঁকড়ার প্রজনন মওসুম। এ সময়ের মধ্যে মা কাঁকড়া প্রচুর ডিম দেয়। সেই ডিম থেকে কাঁকড়ার বাচ্চা ফুটে বের হয়। তাই প্রতি বছরের এ সময়ে সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়।’
এদিকে কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের দাবি, ‘মোংলা থেকে মাসে ১৫ লাখ টাকার কাঁকড়া ঢাকায় পাঠানো হয়। এ রফতানি করা কাঁকড়ার ৯৯ শতাংশ সুন্দরবন থেকে ধরা হয়। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি এ দুই মাসে রফতানি শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। ফলে এর সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার মানুষ এ সময় বেকার হয়ে পড়ে।’
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটের পাইকগাছা লোনাপানি কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. লতিফুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে মোবাইল ফোনে জানান, কাঁকড়া নদী বা খালে বেড়ে উঠলেও এর প্রজনন হয় সাগরের মুখে বা গভীর সাগরে। তাই এই সময় কাঁকড়া গভীর সাগরের দিকে ছোটে। তাছাড়া এই সময় নদীর পানির অপেক্ষা সাগরের পানি গরম এবং নদীর পানির থেকে সাগরের পানির লবণাক্ততা বেশি থাকে। এসব কারণেও নদী খাল থেকে কাঁকড়া সাগরে ছুটে যায়। কাঁকড়া সাগরে ছুটে যাওয়ার মুহুর্তে যাতে তাদের ধরতে না পারে, সেজন্য সরকার এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এছাড়া মায়া কাঁকড়ার যখন ডিম হ,য় তখন তাদের ধরা খুবই সহজ। তারা ক্ষুধার্থ থাকে। তাদের সামনে যে খাবার দেওয়া হয় তারা দ্রুত তা খাওয়ার জন্য এগিয়ে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি এই সময় কাঁকড়া শিকার না করা হয়, তাহলে পরের বছর অধিক হারে কাঁকড়া উৎপাদন সম্ভব হবে।’
এ প্রসঙ্গে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এ দুই মাস কাঁকড়ার প্রজননের মৌসুম হওয়ায় এই সময় কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ করা হয়। আর এই নিষেধাজ্ঞা শুধু সুন্দরবন এলাকায়। তাই বনবিভাগ এটা নিয়ন্ত্রণ করে।’