সাতক্ষীরায় পরিকল্পিত শিম আবাদে কৃষকদের সাফল্য  

0
749

সেলিম হায়দার, সাতক্ষীরা : সরকারি রাস্তার পাশে শিম চাষে সাফল্য এসেছে সাতক্ষীরার তালার সৌখিন কৃষকদের। প্রায় ১ যুগ আগে থেকে প্রথমত শখের বসে আবাদ করলেও এখন রীতিমত বাণিজ্যিকভিত্তিতে আবাদ করছেন তারা। রাস্তার দু’পাশে বেড়া দিয়ে গড়ে ওঠা শিমের মাচা তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে রাখার পাশাপাশি নজর কাড়ছে পথচারীদের। তাদের দেখে এলাকার অনেকে এখন সাদা জমিতেও আবাদ করছেন শিমের।
তালা সদর থেকে পাটকেলঘাটা অভিমুখী বাইপাস সড়কের গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মোড় থেকে শুরু করে অবলা ঘোষের আম বাগান পর্যন্ত প্রায় ১ কিঃমিঃ রাস্তার দু’পাশে গড়ে উঠা আইরেট শিমের মাচা ঐএলাকার সৌখিন চাষীদের পথ দেখিয়েছে ফেলে রাখা পতিত জমিতে মৌসুমী সব্জি চাজে অর্থনৈতিক মুক্তির। উঁচু জায়গা হওয়ায় মওসুম শুরুর আগেই চারা রোপন করতে পারেন তারা। এতে করে সবার আগে বাজারে তাদের শিম আসে। উৎপাদনও নজর কাড়া। দামও ভাল। এখন পর্যন্ত বাজারে পর্যাপ্ত শিম নাউঠলেও তাদের উৎপাদিত শিমে বাজার সয়লাব। প্রতি কেজি ১২৫/১০০ টাকা পর্যন্ত দামে শিম বিক্রি করছেন তারা। রাস্তার পাশে যার যার জমির মাথায় তার তার আবাদ এনিয়ে কারো সাথে কারো গোলযোগও নেই। এযেন বিকল্প পদ্ধতিতে পতিত জমিতে কৃষি বিপ্লবের এক নতন সূচনার গল্প। প্রতি দিন রাস্তাটি দিয়ে শত শত বাস,ট্রাক,মোটর,ভ্যান সহ হাজার হাজার পথচারীদের নজর কাড়ে শিমেরআবাদে।
চাষীদের গনেশ দাশ (৫০) ও হাফিজ শেখ (৪৫) জানান,গত দেড় যুগে তাদের সম্মিলিত শিম আবাদে মানুষের নজর কাড়লেও দৃষ্টিগোচর হয়নি স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের। এখন পর্যন্ত তাই পরামর্শও জোটেনি কারো। নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই তাদের বৈপ্লবিক চ্যালেঞ্জ বললেন কৃষকরা। গণেশ আরো জানান, প্রথমত নিতান্তই শখের বসে রাস্তার পাশে বাঁশের কঞ্চি বা গাছের ডাল পুঁতে বেড়া দিয়েই শুর করেছিলেন শিমের চারা রোপন। পর্যাক্রমে ফলন ভাল হওয়ায় এখন পরিকল্পিতভাবে শিম আবাদে তারা এখন এলাকার মডেল। শ্রাবন থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত ৮ মাস স্থায়ী হয় এই গাছ। পোকা-মাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে সপ্তাহে ১ দিন কীটনাশক মিলফেন,সিম্বুস,নীল ও ওন্ডার স্প্রে করেন। আর এতেই পোকার আক্রমণের হাত থেকে রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় গবাদি পশুর হাত থেকেও রক্ষা মেলে। শিমের এই পরিকল্পিত আবাদে তাদের কোন বাড়তি শ্রমিক নিয়োগ করতে হয়না। নিজেরাই নিজেদের ক্ষেতের শ্রমিক।
সব মিলিয়ে ভাল আছেন গোপালপুরের সৌখিন মডেল শিম চাষীরা। তারা এখন এলাকার মডেল,কেবল চোখ পড়েনি কৃষি কর্তাদের। তারা মনে করেন,সহযোগীতা পেলে পরিকল্পিত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কৃষিকে নিয়ে যেতে পারেতন অনন্য উচ্চতায়। এগিয়ে যাক পতিত জমির সব্জি আবাদ,ত্বরান্বিত হোক তাদের অগ্রযাত্রা চোখ খুলুক কৃষি কর্তাদের এ প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।#