মো. আলমগীর হোসেন রাজু
এবার প্রায় সকল ইউনিভার্সিটির ইউনিট প্রতি ভর্তি আবেদন ফর্মের দাম গড়ে ৭ শত থেকে ৮ শত টাকার উপরে। একজন ছাত্র এক ইউনিভার্সিটিতে তিন ইউনিটে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক থাকলে, দেখা যায় পাঁচটি ভার্সিটিতে পরীক্ষা দিতে শুধু ফর্ম কিনতেই লাগবে প্রায় ১২ হাজার টাকারও বেশি।
মাননীয় শিক্ষাবিদগণ, এক একটি ফর্মে প্রায় এক হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে অথচ আপনাদের কিছুই মনে হচ্ছে না। হয় তো ১২ হাজার টাকা আপনার বাচ্চার এক মাসের খেলনা কেনার খরচ। কিন্তু একজন গরীব বাবা, একজন বিধবা মায়ের পক্ষে এত টাকা দেওয়া কি সম্ভব? তবে অনেক অসহায় বাবা, মা অক্লান্ত পরিশ্রম করে টাকা রোজগার করেন। এই টাকা না খেয়ে মাটির ব্যাংকে সঞ্চয় ও চাষের জমিটাও বন্ধক রাখেন। আমার পরিচিত এক ছোট ভাইয়ের কাছে জানতে পারলাম, তার বাবা গরু বিক্রি করে তার ইউনিভার্সিটির ফর্ম কেনার জন্য টাকা দিয়েছে। সেই টাকা দিয়ে দু’টি ইউনিভার্সিটির ফর্ম কিনেছে। তাহলে কি গরীবের জন্য শিক্ষা এতটাই কষ্টের?
হয় তো অসুস্থ বাবার চিকিৎসার টাকা দিয়ে ফর্ম কেনার যন্ত্রণা আপনাদের দামী গাড়ির কাঁচ ভেদ করে না… …………….। ছোটবেলা থেকেই প্রতিটি দিন যে মা, বাবা স্বপ্ন দেখেন তার সন্তান ইউনিভার্সিটিতে পড়বে। সেই অসহায় মা, বাবার তিল তিল করে এক একটি জমানো টাকার আর্তনাদ আপনাদের কানে পৌঁছায় না……………….।
এদেশে এমন ঘটনাও আছে মাত্র আশি টাকা দিতে না পারার জন্য ছাত্রীকে মারধোরসহ নির্যাতনের মত কঠিন অবস্থার স্বীকার হতে হয়। সেই ছাত্রী দেশ, সমাজ আর শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধিক্কার দিতে দিতে সেদিন আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিতে দিধাবোধ করেনি……..। তারপরেও শিক্ষা ব্যবস্থাকে যদি অলাভজনক হিসাবে মানতে না পারেন তবে লিখে দিবেন ‘গরীবের জন্য শিক্ষা নয়, শিক্ষা একটি ব্যবসা’। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি ছাড়া দেখার কেউ নেই। দয়া করে কিছু একটা করুন মমতাময়ী জননী……….।
লেখক : খুলনা নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি’র অষ্টম সেমিস্টারের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও খুলনা জেলা ছাত্রলীগের উপগ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক।