মোড়েলগঞ্জে পোকার আক্রমনে ৮ গ্রামের মানুষ আতংকে

0
561

মোড়েলগঞ্জ প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের জিউধরা ইউনিয়নে ৮ গ্রামের মানুষ এক নতুন প্রজাতির পোকার আক্রমনে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকেই। শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। গবাদী পশু ও পাখিরাও এ পোকার হাত রক্ষা পাচ্ছে না। কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে পোকা প্রতিরোধে পরামর্শ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষদের।
সরেজমিনে সোমবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, জিউধরা ইউনিয়নের বরইতলা, পাশখালি, বাইনতলা, বটতলা, লক্ষিখালী, সোনাতলা, বারইখালী ও ডুমুরিয়া গ্রামে গত এক সপ্তাহ ধরে এক নতুন প্রজননের কালো রংয়ের পোকার আর্ভিভাব হয়েছে। প্রতিটি পোকা লম্বায় আড়াই ইঞ্চি। বিছে পোকারমত অবিকল দেখতে যদিও তার গায় নেই কোন আল। পোকাগুলো সাধারনত গেওয়া গাছ থেকে পাতা খেয়ে ঝাজড়া করে গাছগুলোকে বিনষ্ট করছে। গেওয়া জাতীয় অন্যন্যে গাছ ও মরে যাচ্ছে। এ থেকেই তারা ক্ষ্যান্ত নন। ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে বসতবাড়িতে সাধারণ মানুষকেও আক্রমন করছে। গায়ে উঠলে সারা শরীর চুলকানি দেখা দেয় এবং ফুলে যায়।
ইতোমধ্যে অনেকেই এ পোকার আক্রমনে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন তারা হলেন বরইতলা গ্রামের সুফিয়া বেগম(৫০), সেলিমা বেগম (৩০), রাহিলা বেগম (৫২), রহিমন বেগম (৪০), ডুমুরিয়া গ্রামের শিক্ষার্থী সাগর শেখ (১৯), ইমন শেখ (১৬)। বাইনতালা গ্রামের এনামুল হাওলাদার(১৮),ফারুক বিশ্বাস (৬০), বরইতলা গ্রামের মো. শাহাজাহান (৬০), সহ ৮ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এ পোকার আক্রমনে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে এদের মধ্যে থেকে অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে এ পোকার আক্রমনের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা কৃষি অফিস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পোকা প্রতিরোধের জন্য স্থানীয় গ্রামবাসিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
সোমবার সকালে জিউধরা ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, পোকা প্রতিরোধে আক্রান্ত গ্রামগুলোতে সভাকরে বলেন, সেভিং পাউডার দিয়ে স্পে করা, গেওয়া গাছের ডাল-পালা কেটে দেওয়া, করাত মিলের তুষ ও কেরাসিন মিশিয়ে গাছে ছিটিয়ে দেওয়া, গরম তাপ দিয়ে ছ্যাকা দেওয়ার জন্য স্থানীয়দের পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, এ পোকাটি এ অঞ্চলের জন্য নতুন প্রজন্মের হতে পারে তবে এটি জীবন চক্রে ৪টি স্থরে প্রথমে ডিম, ক্রীড়া, পুত্তল্লি ও পূর্ন বয়স্ক প্রজাপ্রতি আকারে হয়ে থাকে। অপ্রাপ্ত বয়সের সময় এ পোকার খাবারের চাহিদা থাকে বেশী। ভয়য়ের কোন কারন নেই। আতংক সৃষ্টির কোন বিষয় নয়। ইতোমধ্যে এ পোকার নমুনা কৃষি গবেষনা ইনষ্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বিদ বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনষ্টিটিউট কীটতত্ব বিদ ড. জুলফিকার ও ড. দেবাষিশ-এর পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।

এ সর্ম্পকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, পোকার আক্রমনের খবর শুনে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকা গাজিপুর কৃষি ইনস্টিটিউটে প্রানী বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলেছেন কর্মকর্তারা। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে আশবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।