মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসহায়দের পাশে সাংসদ আক্তারুজ্জামান বাবু

0
410
ওবায়দুল কবির সম্রাটঃকয়রাঃ-
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সরকারের নির্দেশে সবধরনের মানুষ বাড়িতে অবস্থান করছেন। মানুষ যখন প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস আতঙ্কে স্বেচ্ছায় অনিচ্ছায় ঘরে বন্দি। অনেক এমপি, জনপ্রতিনিধি আর বিত্তশালী যখন নিজের জীবনের নিরাপত্তার দুশ্চিন্তায় বাইরে বের হয়ে অবলোকন এবং অনুধাবন করতে পারছেন না গরীব-দুঃখী-অসহায় মানুষের করুণ অবস্থা। এমনকি দিন এনে দিন খাওয়া গরীব-অসহায় মানুষগুলো যখন বাধ্য হয়েই ঘরে থাকছেন, তখন ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ হয়ে বিবেকের তাড়নায় নিজের জীবনের নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে সাহায্যের হাত বাড়াতে গ্রামের পর গ্রাম ছুটে চলেছেন খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু ।
করোনার এই ভয়াল পরিস্থিতিতে দিন নেই- রাত নেই, হরদম ছুটছেন নিজ এলাকার কষ্টে থাকা মানুষের হাড়ির খবর জানতে। যার উনুনে জ্বলছে না আগুন, যার ঘরে নাই দু’মুটো চাল-ডাল- দাঁড়াচ্ছেন তাদের পাশে। বাড়িয়ে দিচ্ছেন সহায়তার হাত। অবশ্য এখন পর্যন্ত অধিকাংশ সংসদ সদস্যই নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন করোনার ভয়ে। এদের নিয়ে জনগণের মুখে মুখে সমালোচনার ঝড়ও উঠছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পর এখন তারাও বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করা দলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে জনগণের খোঁজ-খবর নেয়া এবং খাদ্যসামগ্রীর যোগান দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
দেশের সর্ব দক্ষিণে কয়রা ও পাইকগাছায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সংখ্যাই বেশি। ফলে করোনা দুর্যোগের মধ্যে সেখানে নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের দায়িত্বও বেশি। আর সেই দায়িত্ব পালনে মোটেও পিছপা নন স্থানীয় সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু। তিনি কখনো সরকারি, আবার কখনো ব্যক্তিগত বা বেসরকারি সহায়তা নিয়ে নির্বাচনী এলাকার অসহায় মানুষের দারে দারে গ্রামের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন। আর এই ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু একদিন হাসপাতালে থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে আবারো ফিরেছেন নির্বাচনী এলাকা কয়রা ও পাইকগাছায়। বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ছাড়াও দলীয় নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রেখেছেন।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুর ১২টায় কয়রার বাগালী ইউনিয়নের মধ্য বামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দুই শত দুস্থ ও বিধবা নারীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম মোহসিন রেজা, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাফরুল ইসলাম পাড়, বাগালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ গাজী, জেলা যুবলীগ নেতা মোঃ শামীম সরকার, উপাধ্যক্ষ এইচ এম নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন, এস মোস্তফা নুর মোহাম্মাদ, মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল গাজী, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক আফি আজাদ বান্টি, খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোঃ আবু সাঈদ খান, জেলা শ্রমিক লীগের দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আমিনুল হক বাদল, সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।সংশ্লিষ্ট দলীয় নেতা কর্মীরা জানান, করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর কয়রা ও পাইকগাছায় এমপি’র ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অন্ততঃ ১০ হাজার পরিবারের মাঝে উপহার সামগ্রী (ত্রাণ) বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া রমজানের শুরুতে দুটি উপজেলার এক হাজার ২০০ মসজিদের ২ হাজার ৪০০ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আর এমপি’র পৃষ্ঠপোষকতায় এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা ও কাবের মাধ্যমে আরো ১০ হাজার জনকে খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সরকারী অনুদান নিজে, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বারদের মাধ্যমেও ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। অনেক মধ্যবিত্ত মানুষ প্রকাশ্যে সাহায্য চাইতে লজ্জা পায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে খাবার না থাকায় তারা বিপাকে আছেন তারা । এমন জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের জন্য হটলাইন চালু করা করেছে সাংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু ।করোনায় কষ্টে থাকা মধ্যবিত্তরা খাদ্যের জন্য হটলাইনে যোগাযোগ করলে এমপির পক্ষে কয়রা -পাইকগাছার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রাতে তাদের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট পৌঁছে দিচ্ছে। যে প্যাকেটে ৫ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, দুই কেজি আলু, ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ ও অর্ধ লিটার সয়াবিন তেল, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি । ছাত্রলীলের নেতা কর্মীরা জানান প্রতিদিন গড়ে ৫০ জনের বাড়িতে এই প্যাকেট পৌছে দিচ্ছেন তারা।এদিকে, মহামারী করোনার এই দুর্দিনে সাংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় গরিব, দু:খী ও অসহায় মানুষরা তার জন্য করছেন অন্তরের অন্তস্থল থেকে অনবরত প্রার্থনা। করোনার কারণে বিপদে পড়া মানুষজন বলছেন- প্রত্যেক এলাকায় যেন আক্তারুজ্জামান বাবুর এমপির মতো ভালো এবং উদার মনের মানুষের জন্ম হয়। সহায়তা পাওয়া মানুষজন বলছেন- এমপি বাবুর জন্য আমরা অনেকটাই কম কষ্টে আছি। আল্লাহ যেন তাকে দুনিয়া-আখেরাতে এর উত্তম প্রতিদান দেন।এমপি আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, আমি যে আজ এমপি হয়েছি সেটা কয়রা-পাইকগাছা মানুষের জন্য। আমার গবির-অসহায় দিনমজুর ভাইয়েরা এই করোনা ভাইরাসে না খেয়ে দিন কাটাবে আর আমি তা ঢাকায় এসি রুমে বসে শুনব তা হতে পারে না, এই ত্রাণ বিতরণ কালে যাতে কোন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি না হয়। সে বিষয়টি মাথায় রোখে আমি ও দলের অল্প কিছু নেতা কর্মীদের নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মানুষের দারে দারে উপহার সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি। আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পর্যায়ক্রমে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে করোনায় কর্মহীন হয়ে ঘরে থাকা হত-দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকবে। আমার নির্বাচনী এলাকায় কোনো মানুষ অভুক্ত থাকতে পারবে না।তিনি আরও বলেন, যে কোনো দুর্যোগ ও বিপদে আমি আমার সাধ্যমতো এলাকার সাধারণ দরিদ্র মানুষের পাশে সবসময় ছিলাম, বর্তমানেও আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো, ইনশাআল্লাহ। তারই ধারবাহিকতায় আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।