বিশ্বকাপের প্রাইজমানি দান করে দিলেন এমবাপ্পে

0
422

স্পোর্টস ডেস্ক:
কিলিয়ান এমবাপ্পে। এবারের বিশ্বকাপের উদীয়মান তারকা। রাশিয়ায় ফরাসি বিপ্লবের যোগ্য নেতাও বলা চলে তাকে। বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে কিছুটা নিষ্প্রভ থাকলেও নক আউট পর্ব থেকে নিজের জাত চেনাতে শুরু করেন এমবাপে। তাকে বিশেষ করে অনেকদিন মনে রাখবে আর্জেন্টিনা। কারণ তার কাছেই যে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে তার স্কিল, ড্রিবলিং, ডিফেন্স ভেঙে ঢুকে যাওয়া সকল কিছুই দেখেছিল ফুটবল বিশ্ব। আর ফাইনালে তো ফুটবল কিংবদন্তী পেলের পাশে গিয়েই বসলেন তিনি। এতদিন বিশ্বকাপে ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ড গড়েছিলেন পেলে। আর গত ১৫ জুলাই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল করে তার পাশেই গিয়ে বসলেন এমবাপ্পে।

বিশ্বকাপ শুরু আগ থেকেই আলোচনায় ছিলেন তিনি। ফুটবলবোদ্ধারা তাকে ধরেই রেখেছিলেন এবারের বিশ্বকাপে কিছু করতে চলছেন তিনি। ফুটবলবোদ্ধাদের কথার যোগ্য মর্যাদা দিয়ে শুধু করলেন না দলকে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। যার ফলশ্রুতিতে বিশ্বকাপের উদীয়মান তারকার পুরস্কার লাভ করেন এমবাপ্পে।

অথচ এমবাপ্পে শৈশবে প্যারিসের দারিদ্র পীড়িত অঞ্চলে বাস করতেন। তার ছোট্ট বেডরুম ভর্তি ছিল পর্তুগিজ সুপারস্টার রোনালদোর ছবিতে। শৈশবে তিনি রোনালদোর মতো হতে চাইতেন। অবশেষে তার সে স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি। তবে এবার মাঠে নয় মাঠের বাইরেও এমবাপ্পে দেখালেন দারুণ কীর্তি।

বিশ্বকাপের চলাকালীন সময়ে এমবাপ্পে ঘোষণা দিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ থেকে প্রাপ্ত অর্থ তিনি দান করে দিবেন। বিশ্বকাপ শেষে তিনি তার কথা রাখলেন। সকল উপার্জিত অর্থই দান করেছেন। ফ্রান্সের জাতীয় পত্রিকা এল’ একুইপ জানাচ্ছে প্রিমিয়ার ডি করডি নামে একটি চ্যারিটি সংস্থাকে তিনি বিশ্বকাপ থেকে প্রাপ্ত অর্থ দান করেছেন। এ সংস্থাটির কাজ হচ্ছে, প্রতিবন্ধী শিশু ও হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের নিয়ে কাজ করা। ২০১৭ সাল থেকেই এই চ্যারিটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এমবাপে।

সংস্থাটির মুখপাত্র সেবাস্তিয়ান রাফিন লে পেরিসিয়ানের ভাষ্যমতে বিশ্বকাপের কিছুদিন আগেই এমবাপে ও তার পরিবার এ ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে আমরা এ নিয়ে খুব এগুইনি। কারণ, তার বোনাস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হবে কেবলমাত্র ফ্রান্স কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলে। তবুও তিনি সব সময় এ নিয়ে আমাদের বলে যেতেন।

‘স্পোর্টস ইলাসট্রেটেড’ জানিয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপে ম্যাচ প্রতি ২২,৫০০ ডলার করে পেয়েছেন এমবাপ্পে। বিশ্বকাপে সাতটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এছাড়া বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্স দলের সদস্য হিসেবে বোনাস পেয়েছেন আরও ৩,৫৫,০০০ ডলার। সেই হিসেবে এমবাপের মোট প্রাপ্তি দাঁড়ায় ৫,০০,০০০ ডলার।

প্রিমিয়ার ডি করডির মুখপাত্র সেবাস্তিয়ান রাফিন লে পেরিসিয়ানকে আরো বলেন, কিলিয়ান দুর্দান্ত মানুষ। যখনই সুযোগ পান, উনি আমাদের সাহায্য করেন আনন্দের সঙ্গে। তিনি আরো বলেন, এটা একজন খেলোয়াড়ের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ইচ্ছা থেকে করা কোনও ভালো কাজ। আমরা কখনোই পৃষ্ঠপোষকদের কাছে আর্থিক সহযোগিতার জন্য ধর্না দেই না। এদিকে দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে প্রাইজমানির প্রাপ্ত অর্থ সেপ্টেম্বরে পাবে।