বিকল্প শুধু পরিকল্পনায় নয়, দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে

0
346

সম্প্রতি উচ্চ আদালত ফিটনেসবিহীন গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ না করতে নির্দেশনা দিয়েছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছেন হাইকোর্টের নির্দেশনায় ‘বাস্তবতার নিরিখে’ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে হেলমেট ছাড়া তেল না দেওয়ার যে ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেটি পুরোপুরি কার্যকর না হলেও অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখন হেলমেট ছাড়া খুব কম চালকই মোটরসাইকেল চালান। এমনকি রাইড শেয়ারিং কোম্পানির চালকরা হেলমেট ছাড়া যাত্রী তোলেন না। এর অর্থ হলো, আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে অনিয়ম দূর করা সম্ভব। কাজেই ফিটনেসবিহীন গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ না করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার বিষয়টি বাস্তবায়ন করা দরকার। এতে মানুষ উপকৃত হবে। আমরাও চাই উচ্চ আদালতের এই নির্দেশ পালনে কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট হবে।
তবে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেছেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনে গণপরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যাই কমে যাবে। কথাটি অসত্য নয়। ঢাকার রাস্তায় গাড়িগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলে দেখা যায় রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কমে যায় এবং এতে জনগণকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফিটনেসের যে আইন সে আইন অনুসরণ করলে দেখা যাবে বেশিরভাগ বাসই ফিটনেস পাবে না, ২৬ সিটকে ৪২ সিট বানিয়ে ফেলছে। ফিটনেস বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ মানা শুরু হলে গণপরিবহন থাকবে না। এতে জনভোগান্তি তৈরি হবে। এজন্য বিকল্প প্রয়োজন। পুরনো বাসগুলোকে আইন অনুযায়ী ফিটনেসের আওতায় আনার পাশাপাশি রাস্তায় নতুন বাস নামাতে হবে।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা বিকল্প ব্যবস্থার বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করছেন। গণপরিবহন আরও পরিবহন যুক্ত করার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথাও বলা হয়েছে। যাতে এ ব্যাপারে ঋণ সুবিধা দিয়ে গণপরিবহনে প্রয়াত মেয়র আনিসুর রহমান যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেভাবে কোম্পানির অধীনে গণপরিবহনের বিষয়টাকে আনা যায়, সে চিন্তা-ভাবনা চলছে। এখন কথা হচ্ছে, রাজধানীতে গণপরিবহনে নৈরাজ্য এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচলের বিষয়টি নতুন কিছু নয়। তাই এতদিনেও এই সমস্যাটি নিয়ে শুধু পরিকল্পনা আর ‘চিন্তা-ভাবনা’র পর্যায়ে পড়ে থাকাটা খুবই বেমানান।
ফিটনেসবিহীন গাড়ি সরিয়ে রাস্তায় নতুন গাড়ি নামানো এবং যে গাড়িগুলোকে ফিটনেসের আওতায় আনা যত সম্ভব দ্রুত তার ব্যবস্থা করতে হবে। পরিকল্পনা করতে করতেই যদি যুগ চলে যায় তাহলে কার্যকর হবে কবে? আমরা এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, শিগগিরই রাস্তা থেকে ফিটনেসবিহীন গাড়ি সরিয়ে ফেলুন এবং বিকল্প ব্যবস্থা করে জনগণের ভোগান্তি দূর করুন।