বাজার থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ৩বস্তা চাল উদ্ধার: দেবহাটা সদর ইউনিয়নে ভিজিএফের চাউল বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ!

0
333

দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটা উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাউল বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী গরিব, অসহায় ও দুঃস্থদের জন্য ভিজিএফের ব্যবস্থা করেছেন। বুধবার সকাল থেকে সদর ইউনিয়নের তত্বাবধানে এ চাউল বিতরন করা হয়। সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে এই চাউল বিতরনে অনিয়ম করেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
জানা যায়, বুধবার সকালে দেবহাটা সদর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে মোট কার্ড ৩০৪০ জন কার্ডধারীদের মধ্যে ১৫ কেজি হারে ভিজিএফের চাউল বিতরনের উদ্বোধন করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর গাজী, ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জুয়েল হোসেন ও ইউপি সদস্যবৃন্দ। কিন্তু উদ্বোধনের কিছু সময় পর ট্যাগ অফিসার অফিসের কাজে কাজে উপজেলায় চলে যান। তার চলে যাওয়ার পর পরই শুরু হয় অনিয়মের কাজ। ইউপি চেয়ারম্যান স্ব-স্ব ইউপি সদস্যদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হলেও ইউনিয়ন পরিষদের হল রুমে রেখে দেওয়া হয় প্রায় ৮৫ বস্তা চাউল। এছাড়া প্রত্যেক উপকারভোগীদের মাঝে ১৫ কেজির পরিবর্তে দেওয়া হয় ৮, ১০, ১২ কেজি চাউল। এসময় উপকারভোগীদের মাঝে হট্রগোল সৃষ্টি হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এমনকি ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় ১৫ কেজির পরিবর্তে ১০ চাউল বিতরণের অনিয়মের কথা।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, পরিষদের কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে হলরুমে রাখা চাউলের কিছু অংশ প্রত্যেকটি বিতরণ স্থলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং অবশিষ্ঠ অংশ হরিলুট হওয়ার মত বিতরন করতে দেখা যায়। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিউল বশার ও সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হয়। এসময় উপকারভোগী মানুষ চাউল বিতরনে অনিয়মের বিষয় জানান। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে ট্যাগ অফিসার টাউনশ্রীপুর বাজারে আনারুলের ক্যারাম বোড খেলার ঘর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩বস্তা চাউল উদ্ধার করেন। এসময় দোকানদার আনারুল এবং কয়েক জন খেলোয়াড়কে জিজ্ঞাসা করলে উক্ত চাউল কে রেখে গেছে তার উত্তর পাওয়া যায় নি। বেশ কিছু সময় অতিক্রম হওয়া ও স্থানীয় জনরোষের মূখে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কাশেম বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিয়ে বলে বসেন, চাউলগুলো ১৫ আগস্টের জন্য নিয়ে রেখেছি।
এসময় দেবহাটা থানার এসআই হেকমত আলী ইউনিয়ন পরিষদে পৌছে বেচে যাওয়া চালগুলো উপস্থিত দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে বিতরন করতে বলেন। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউপি সদস্য সাংবাদিকদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আপনাদের উপস্থিতির কারনেই গত বারের মত চাউল গুলো বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া কয়েকজন ইউপি সদস্য ভিজিএফের কার্ড বিতরনে তাদের কোন মতামত নেয়া হয়নি বলে চেয়ারম্যানের উপর অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে ট্যাগ অফিসার জুয়েল হোসেন বলেন, তিনি চাউল বিতরন উদ্বোধন করে অফিসে গেলে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে সংবাদ দিলে তিনি পুনঃরায় এসেছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর গাজী চাউল বিতরনে কোন অনিয়ম করা হয়নি উল্লেখ করে বলেন, আমার বিরোধী পক্ষরা দূর্নাম করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন জানিয়েছেন, অভিযোগটি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলাকাবাসীর প্রশ্ন, যে চাউল অসহায় ও দুঃস্থদের বিতরনের জন্য দেয়া হয়, সেই চাউল যদি কম দেয়া হয় তাহলে সাধারন মানুষ আর কার উপরে আস্থা রাখবে।