বাগেরহাটের চন্দ্র মহলে চলছে অশ্লীল কার্যক্রম, বখাটের উৎপাতের শিকার দর্শনার্থীরা

0
2231

বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
চন্দ্রমহল ইকো পার্ক এখন বখাটের নিরাপদ স্থান। এর মধ্যে অবাধে চলছে অশ্লীল কার্যকলাপ। ভদ্র পরিবারের লোকজন এসে এখানে প্রতিনিয়তই অস্বস্তির মধ্যে পড়ছে।
জানা যায়, খুলনা-মোংলা মহাসড়কের পাশে রনজিতপুর গ্রামে ২০০২ সালে সেলিম হুদা তার স্ত্রী নাসিমা হুদা চন্দ্রার নামে প্রায় ৩০ একর জমির ওপর তৈরি করেন চন্দ্রমহল ইকো পার্ক। যেখানে রয়েছে নানান প্রস্তর শিল্প, মৃত্তিকা শিল্প, বাঁশ ও বেত শিল্পের মানুষ ও প্রাণীর মূর্তি। মাটি দ্বারা নির্মিত জেলে, কৃষক, ধোপা, গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনাচার, মধ্যযুগীয় জীবনযাত্রা, পানির ওপর কুটির ও রেস্তরাঁ, ইট সিমেন্টের কাঁকড়া, ঝিনুক, নৌকা, ডাইনোসর, বাঘ, হরিণ ও ঘোড়ার মূর্তি। রয়েছে তাজমহলের আদলে নির্মিত চন্দ্রমহল।
সরেজমিন পরিদর্শনে এসে জানা যায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের রণজিতপুর গ্রামে অবস্থিত এ ইকোপার্কটিতে সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত দর্শকদের আনাগোনা থাকে। পিকনিকের জন্য বিভিন্ন স্থান হতে কয়েকটি গাড়ী ছাড়া বাকি দর্শকরা স্থানীয় বা কাছাকাছি এলাকার উঠতি বয়সের যুবক-যুবতী। এসব যুবক যুবতীদের সারা বছর ব্যাপী চন্দ্র মহল পরিদর্শন অব্যাহত থাকে। চন্দ্রমহলের দক্ষিণপাশে রয়েছে নারকেল গাছের সারি। রয়েছে রেস্টুরেন্ট। কয়েকটি কর্নারে রয়েছে অতিরিক্ত জায়গা। যেখানে দূর থেকে তেমন দেখা যায় না। এসব নির্জন স্থানে অবস্থান করে বখাটে যুবক-যুবতী। কর্তৃপক্ষের গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত অশ্লীল ছবি / ভিডিও দিয়ে কখনো কখনো বাইরের যুবক-যুবতীদের ব্লাক-মেইল করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে বাইরের মহিলা স্থানীয় বখাটেদের দ্বারা বিভিন্নভাবে নিগৃত হয়। এসব চিহ্ণিত বখাটেরা চন্দ্রমহলের আশেপাশে সব সময় থাকে। সুযোগ বুঝে অনেকক্ষেত্রে মহিলাদেও অলংকার ছিনতাই করে। সন্ধ্যার পরেই চন্দ্র মহলে আরেক দফা রমরমা আড্ডা চলে। পুকুরের পাশের নারকেল গাছের গোড়ায় গোড়ায় বসে কপোত-কপোতীর যুগল। টাকা বেশি দিয়ে চন্দ্রমহলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে অনেক রাত পর্যন্ত চলে বখাটের অশ্লীলতাপনা। চন্দ্রমহলে রয়েছে ছোট ছোট রেষ্ট হাউজ। ঘন্টায় এক হাজার টাকা করে একান্তভাবে কাটানো যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। এসব রুমে রয়েছে গোপন ক্যামেরা। গোপন ক্যামেরায় ধারনকৃত ভিডিও ব্লাক মেইল করে টাকাও হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। বাইরে থেকে পিকনিকে এলেই রনজিতপুর গ্রামে ঢুকতেই স্থানীয় ভ্যানচালকরা সকল গাড়ি চলাচল আটকে দেয়। মাত্র ৫ মিনিটের পথ ৫০০ টাকা দিয়ে তাদের ভ্যানে যাওয়ার জন্য বাধ্য করে। আযমখান কর্মাস কলেজের ছাত্র কয়রা মহারাজপুর এলাকার সরোজিত কুমার ম-ল বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে পার্কে ঘুরতে থাকি। এরমধ্যে কয়েকজন স্থানীয় বখাটে এসে বলে এই চোখের থেকে সানগ্লাস খুলে হাতে রাখ। আমি দেরি করায় আমাকে ধমক দেয়। তারা কোন মেয়েকে দেখলে কু-রুচিপূর্ণ কথা বলে। কেউ কিছু বলতে গেলে তারা বলে, বাইরে বের হ। তারপর দেখি, তোদের কোন বাপ আছে। স্থানীয়া এখানের পরিবেশ নষ্ট করছে। এ ব্যাপারে চন্দ্রমহল ইকোপার্কের ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেনের সাথে কথা হলে কোন সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। পার্কের স্বত্তাধিকারী সৈয়দ আমানুলহুদা সেলিমের ০১৭১১-৫৪১৮৮১ নাম্বারের যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কথা বলা যায়নি।

(লেখক : আব্দুল আউয়াল মণি, সাধারণ সম্পাদক, ফকিরহাট প্রেসক্লাব, বাগেরহাট)