ফকিরহাটে অতিরিক্ত মেডিকেল টেস্টের ফাঁদে রোগীরা

0
252

ফকিরহাট প্রতিনিধি: বর্তমান সময় আমাদের দেশে প্রায় ৩৯০টির মতো বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি রয়েছে। নতুন নতুন কোম্পানি আসায় মার্কেট পেতে ডাক্তারদের দেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ, নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা। তবে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভরা রোগীর ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলছেন সরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে ডাক্তারের ব্যক্তিগত চেম্বার পর্যন্ত। তারা যা করছেন সেটি নীতিগত বা আইনত বৈধ কি-না তারা তা জানেন না।
একজন রোগীর উপসর্গ বিষয়ে সঠিক বিচার বিশ্লেষণ না করে তাকে নানারূপ পরীক্ষা, নিরীক্ষার উপদেশপত্র লিখে দিচ্ছেন অথবা শুধুমাত্র উপসর্গের ওপর ভিত্তি করে শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক লিখে দিচ্ছেন চিকিৎসক। এ সকল অপ্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থাপত্রও লিখছেন ৮০ ভাগ ডাক্তার। এতে ওষুধ উৎপাদনকারীর সংখ্যা ও ওষুধ উৎপাদন বেড়ে যাচ্ছে দ্্রুত। ফলে ওষুধ উৎপাদনকারী ও ডাক্তার উভয়ই লাভবান হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ধনী-দরিদ্র সকল শ্রেণির রোগী। ব্যবস্থাপত্রে যত ওষুধ লেখা হচ্ছে, তার কমিশন, উপঢৌকন বা ভ্রমণ বাণিজ্যও হচ্ছে।
জিসকো ফার্মার মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ নাম প্রকাশ না করবার শর্তে বলেন, আমরা যারা যুক্ত আছি তাদের চাকরির গ্যারান্টি এক মিনিটও নেই, প্রতি মাসে সেলস্ টার্গেট বাড়ছে, টার্গেট পূরণ না হলে স্যালারি আটকে দেয়া অথবা কম স্যালারি পাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। কোনো ছুটি নেই বললেই চলে। শুক্রবার বেশিরভাগ ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ থাকলেও তাদের কোনো বন্ধ নেই। তাছাড়া ওষুধ লেখানোর জন্য ডাক্তারদের ব্যক্তিগত কাজ করা এমনকি মোটরসাইকেলে তাদের লিফ্ট দেওয়া লাগে কি করব বলেন।
ফকিরহাট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী মনিরুল ইসলাম বলেন, কাজ করতে যেয়ে কোমরে ব্যথার জন্য এসেছেন। তাকে প্রায় ১১টি বিভিন্ন প্রকার ওষুধ দিয়েছেন এবং এমআরআইসহ নানা পরীক্ষা দিয়েছেন, তার কাছে এখন এতো টাকা নেই- কিভাবে এতো ওষুধ কিনবেন। আর পরীক্ষা করাবেন।
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন,আমরা ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য বন্ধের জন্য ইতোমধ্যে নীতিমালা করেছি এবং আমরা তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবো আর চিকিৎসকদের অতিরিক্ত টেস্ট লেখা বন্ধের বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত আসছে।