প্লাস্টিক দিলে টাকা ফেরত পর্যটন এলাকাগুলো দূষণমুক্ত রাখা হোক

0
300

আবর্জনার সমস্যা আজ অনেক দেশের জন্যই হুমকি। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। বিশেষ করে পর্যটন অঞ্চলগুলোতে এই সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। পর্যটন এলাকাগুলো প্লাস্টিক জঞ্জালে ভরে যায়। কারণ এখনও অনেক স্থানীয় মানুষ ও পর্যটক ঠিকমতো জঞ্জাল ফেলেন না। বাংলাদেশ পর্যটন সম্ভাবনায় পরিপূর্ণ। কিন্তু আমরা দেখছি, অসাবধানতার কারণে পর্যটকদের ফেলা বিভিন্ন উচ্ছিষ্টে পর্যটন কেন্দ্রগুলোর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। প্লাস্টিকে চাপা পড়ে বিলীন হচ্ছে সেন্টমার্টিনের প্রবাল। একইভাবে নষ্ট হচ্ছে সমুদ্র ও পাহাড়ের জীববৈচিত্রও। যার ফলে পর্যটন ও পরিবেশ একে অপরের বিরোধী হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অথচ পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষার মাধ্যমে দেশের পর্যটন সম্ভাবনাকে আরও সম্ভাবনাময় করা সুযোগ রয়েছে।
এরইমধ্যে দেশের পর্যটন এলাকায় পরিবেশ দূষণ বন্ধে ও জনগণের মাঝে পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে পর্যটকরা ব্যবহৃত প্লাস্টিক জমা দিলে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাণ-প্রকৃতি ভিত্তিক ট্যুরিস্ট গ্রুপ ‘ওয়াইল্ড ট্যুরিজম বাংলাদেশ’। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ট্যুরে থাকাকালীন প্লাস্টিকের একটি মোড়কজাত প্যাকেট জমা দিলে এক টাকা, দেড় লিটার পর্যন্ত পানির বোতল দুই টাকা, দুই লিটারের পানির বোতল তিন টাকা এবং পাঁচ লিটারের পানির বোতলে পাঁচ টাকা ফেরত দেয়া হবে। এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ।
আমরা চাই, পর্যটকদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিয়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলোসহ সারা দেশের পরিবেশ রক্ষায় জনগণকে সম্পৃক্ত করা হোক। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, পর্যটকের হাত ধরে জন্ম হয়েছে বিশ্ব সংস্কৃতির। পর্যটন কেন্দ্র এমন একটি স্থান যেখানে পুরো দেশের সচেতন ও শিক্ষিত মানুষগুলোর মিলনমেলা বসে। তাই আমরা মনে করি, পর্যটকদের মধ্যে যদি প্রাণ ও প্রকৃতি রক্ষায় সচেতনতাবোধ জাগ্রত করা যায়, তার ফল ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে। প্রতিটি পর্যটকের হাত ধরে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা পৌঁছে যাবে সবখানে।
তবে একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের উদ্যোগ শুধু তাদের মধ্যে সীমিত থাকলে তা সুদুরপ্রসারী ফলাফল বয়ে আনতে পারবে না। এরজন্য সরকার তথা দায়িত্বশীলদেরও আন্তরিকভাবে এই উদ্যোগে সম্পৃক্ত হতে হবে। দেশব্যাপী প্লাস্টিক-বিরোধী অভিযান জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি পর্যটন এলাকাগুলোতে এককালীন ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যগুলোকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যেখানে সেখানে প্লস্টিক নিক্ষেপ বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং এটির নিয়মিত তদারকি প্রয়োজন। পর্যটন এলাকায় ব্যবহৃত প্লস্টিক ফেরত দিলে যেভাবে টাকা ফেরত দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে সেভাবে যেখানে সেখানে প্লস্টিক ফেলার জন্য জরিমানার বিধানও করা যেতে পারে। বিশেষ করে পর্যটন এলাকায় বাজার ও দোকানগুলোতে প্লাস্টিকের ব্যাগ না দিয়ে তার বদলে পরিবেশবান্ধব উপাদানে তৈরি ব্যাগ দিতে হবে। আমরা আশা করি দেশের পর্যটন এলাকাগুলো প্লাস্টিকের দূষণমুক্ত হবে।