পাবনায় ধর্ষকের সঙ্গে থানায় বিয়ে: ওসি প্রত্যাহার, এসআই বরখাস্ত

0
418

খুলনাটাইমস: পাবনায় গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ এবং থানায় তাদের একজনের সঙ্গে তার বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হককে প্রত্যাহার ও উপপরিদর্শক (এসআই) একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি এই সিদ্ধান্তের কারণ বলেননি। তবে এর আগে ওসিকে নোটিশ দিয়ে ওই নারীকে থানায় বিয়ে দেওয়ার কারণ দর্শাতে বলেছিল পুলিশ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া এ ঘটনায় মামলার আরও দুই আসামিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন এজাহারভুক্ত আসামি হোসেন আলী ও মো. সঞ্জু। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট চারজন গ্রেফতার হল। আগে গ্রেফতার হয়েছন সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ঘন্টু (৩৮) ও প্রধান আসামি রাসেল। তিন সন্তানের জননী ওই নারীর অভিযোগ, প্রতিবেশী রাসেল আহমেদ গত ২৯ অগাস্ট তাকে তার বাড়িতে নিয়ে এক সহযোগীসহ পালা করে ধর্ষণ করে। দুদিন পর তাকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসে নিয়ে তিন দিন আটকে রাখা হয় এবং সেখানে আরও চার-পাঁচনজন তাকে পালা করে ধর্ষণ করে। পরে ওই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে পাবনা থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ রাসেলকে আটক করে। কিন্তু মামলা নথিভুক্ত না করে পুলিশ ওই রাতেই রাসেলের সঙ্গে তার বিয়ে দেয়। এ বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ ওসি ওবাইদুল হককে কারণ দর্শাতে বলে। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরে থানায় মামলা নেওয়া হয়।
ঘটনা তদন্তে এবার প্রশাসনিক কমিটি: গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও থানায় ডেকে নিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পাবনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের এই কমিটি করা হয়। জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ এ তথ্য জানান। জেলা প্রশাসক জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ নেওয়াজকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। বাকি সদস্যরা হলেনÑডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. একেএম আবু জাফর ও পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবনে মিজান। পুরো ঘটনা তদন্ত করে আগামি ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিটিকে। এর আগে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির প্রধান ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মো. ফিরোজ আহমেদ। অন্য দুই সদস্য ছিলেন, কোর্ট ইন্সপেক্টর ও ডিআই-১। তিন কার্যদিবসে ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার পাবনা সদর থানার ওসি ওবায়দুল হককে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া এসআই একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।