পাকিস্তানে এক তারকাকে হত্যার দায়ে ভাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদ-

0
356

খুলনাটাইমস বিদেশ :পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তারকা কানদিল বালুচকে হত্যার দায়ে তার ভাই ওয়াসিমকে যাবজ্জীবন কারাদ-ের আদেশ দিয়েছে আদালত। ২০১৬ সালে বোনকে হত্যার কথা স্বীকার করে নেয় ওয়াসিম। কারণ হিসেবে তার দাবি ছিল পরিবারের লজ্জা ছিলো বোন। শুক্রবার ওয়াসিমকে যাবজ্জীবন কারাদ-ের আদেশ দিলেও এই মামলায় সংশ্লিষ্ট অপর ছয় জনকে খালাস দিয়েছে আদালত। খালাসপ্রাপ্তদের মধ্যে ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব মুফতি আবদুল কাভিও রয়েছেন।২০১৬ সালের ২৬ জুলাই খুন হন পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রথম তারকা হিসেবে খ্যাতি পাওয়া কানদিল বালুচ। কানদিল খুন হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে তার পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয় ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব মুফতি আবদুল কাভির দিকে। তাদের দাবি ছিল খুন হওয়ার এক মাস আগে কানদিলের সঙ্গে সেলফি তুলে সমালোচনার মুখে পড়েন ওই মুফতি। তারপর তিনি এই হত্যায় উসকানি দিয়েছেন। তবে হত্যাকা-ে কোনও সংশ্লিষ্টতার কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন তিনি।যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে কানদিলের ভাই ওয়াসিম। তার আইনজীবী সরদার মেহমুদ বার্তা সংস্থা এফপিকে বলেছেন, উচ্চ আদালতে মুক্তির আশা করছে ওয়াসিম। এই মামলায় ওয়াসিমের আরেক ভাই আরিফকে পলাতক ঘোষণা করেছে আদালত।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানের প্রথম তারকা ছিলেন কানদিল বালুচ। লাহোরের ৪০০ কিলোমিটার দূরে এক দরিদ্র পরিবারে ফৌজিয়া আমিন নামে জন্ম হয় তার। পাকিস্তানের কিম কার্দাশিয়ান নামে পরিচিত ছিলেন কানদিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাখ লাখ অনুসারী ছিলো তার। সামাজিকভাবে রক্ষণশীল পাকিস্তানের প্রথা ভেঙে বিভিন্ন ধরণের নাচ ও গানের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতেন তিনি।জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে নানা ধরণের পণ্যের প্রচার চালাতেন তিনি। ২০১৪ সালে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা অবস্থায় তিনি জানান কিশোরী বয়সেই বিয়ে হয় তার এ ছাড়া এক সন্তানও রয়েছে তাদের। নিজের স্বামীকে অসভ্য মানুষ অভিহিত করে নিপীড়নের অভিযোগ তুলে তাকে ছেড়ে আসার কথা জানান তিনি। পরে সন্তান পালনে অক্ষম হয়ে পড়ায় আবারও স্বামীর কাছে তাকে ফিরিয়ে দেন তিনি। ২০১৫ সালে গুগলে খোঁজ করা পাকিস্তানের শীর্ষ ১০ ব্যক্তির একজন ছিলেন কানদিল।২০১৬ সালের রমজানে মুফতি আবদুল কাভির সঙ্গে দেখা করতে আমন্ত্রণ জানানো হয় কানদিল বালুচকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুফতির সঙ্গে নিজের সেলফি পোস্ট করেন তিনি। ওই পোস্টে নিজের পরিচয়সূচক ভেড়ার চামড়ার ক্যাপ পরেছিলেন তিনি। এই সেলফি ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন মুফতি আবদুল কাভি। একটি ধর্মীয় কমিটিতে তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়।এই ঘটনার কিছুদিন পর নিজ বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় কানদিল বালুচকে। পরিবারকে অসম্মান করায় তাকে মাদক দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে গলা টিপে হত্যা করার কথা স্বীকার করে তার ভাই ওয়াসিম।