পাইকগাছায় আশানুরুপ পাটের আবাদ

0
660

শেখ নাদীর শাহ্, কপিলমুনি॥
অব্যাহত লোকসানের মুখে থাকা পাট চাষে কৃষকদের অনাগ্রহের মধ্যেও চলতি বছর খুলনার পাইকগাছায় পাটের আবাদ কিছুটা বেড়েছে। অনাবৃষ্টিসহ আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিবেশেও উপজেলায় এবার আবাদও ভাল হয়েছে পাটের।
গত কয়েক বছরে পাটের দাম ভাল না পাওয়ায় উৎপাদন ভাল হলেও পাট চাষে কৃষকদের মধ্যে চরম অনাগ্রহ তৈরী হয়। তবে গেল বছর পাটের বাজার কিছুটা ভাল পাওয়ায় এবার আবাদ কিছুটা বেড়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় কৃষি অফিস।
কৃষি অফিসের পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের দাবি,পাটের ক্ষেত প্রস্তুত ও বীজ বপন মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না মেলায় ও পরে আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিবেশেও পাটের আবাদ ভাল হয়েছে।
কৃষি অফিস জানায়,চলতি উৎপাদন মৌসুমে উপজেলায় মোট ৩৫৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছর এর পরিমাণ ছিল, ৩০৩ হেক্টর। এ বছর তোষা ৩শ ৫০ হেক্টর ও দেশী ৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। সুন্দরবন উপকূলীয় লবনাক্ত পাইকগাছার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি, রাড়–লী ও পৌর এলাকায় পাটের আবাদ হয়েছে।
উপজেলার কপিলমুনির কাশিমনগর এলাকার কৃষক ও জনপ্রতিনিধি শেখ রবিউল ইসলাম,হাফিজুর রহমান, জানান, আবাদ মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টির কারণে পাট চাষের জন্য জমিতে জো (রস) না থাকায় সময়মত পাট বীজ বপন করতে পারেননি তারা। তবে অনেক এলাকায় সেচ দিয়ে জমি উপযোগী করে পাট বুনন সম্পন্ন করেছেন তারা। তবে পরবর্তীতে বৃষ্টির দেখা মেলায় আবাদ ভাল হয়েছে পাটের।
কৃষক সবুর,আমিনুর রহমান,সাঈদুর রহমান জানান, পাট আবাদ করার পরে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কারণ দিন দিন ডোবা ও জলাশয়গুলি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পাট পচানোর জায়গা পাওয়া যায় না। একই স্থানে পর্যায়ক্রমে একাধিকবার পাট জাগ দিতে হয়।
সময়মত পাট জাগ দিতে না পারায় পাটের আশ ভাল পাওয়া যায় না বলেও জানান কৃষকরা। ফলে আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় বলেও জানান ভূক্তভোগী কৃষকরা। কৃষকরা তোষাও ৯৮ ও ৯৭, দেবগ্রী ও বঙ্কিম জাতের বীজ বেশি বপন করেছে। ক্ষেত বিশেষ পাঠ প্রায় ৪ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত পাটের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, চলতি মৌসুমে ধানের আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটের আবাদ কমে গেছে। পাট বীজ বপনের সময় জমিতে জো না থাকায় কৃষকদের পাট চাষ করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। যদিও পরবর্তী পর্যায়ে বৃষ্টি হওয়ায় পাটের আবাদ ভাল হয়েছে এবং পাটকাঠি ও পাটের আশ থেকে কৃষকরা আশানারুপ মূল্য পাবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।