আম্ফান: কিছু শিক্ষা, ভ্রাতৃত্ববোধ, মানবতা ও একখন্ড নিরব প্রতিবাদ
শেখ নাদীর শাহ্ :
প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ২২নং পোল্ডারের কালিনগর এলাকার বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তরমুজসহ কৃষি ক্ষেত, ঘর-বাড়ী, পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়। প্রায় দুু’হাজারেরও বেশী এলাকাবাসী ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে দু’দফায় বিকল্প বাঁধ দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ছুটে যায় বাঁধ। এমন পরিস্থিতিতে চরম ভোগান্তিতে দুর্বিসহ হয়ে পড়ে সেখানকার জনজীবন। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তায় সবাই যখন দিকবেদিক ছুটছিল ঠিক তখনই দেবদূত হয়ে এগিয়ে এসেছেন পাশের সোলাদানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মানবতার অগ্রদূত এস,এম, এনামুল হক। সাথে নিজ ইউনিয়নের ৫শ’ লোক নিয়ে নিজেই নেতৃত্ব দিয়ে ছুটে আসেন ভাঙ্গনকবলিত বাঁধ এলাকায়।
সাথে আনেন রান্না করা ৫ ডেগ খিচুড়ী যা খাওয়ানো হয় সংশ্লিষ্টদের। রক্ষা পায় বাঁধটি। স্থানীয়দের সহযোগীতায় সাথে আনা ৫ শ’ লোকের যৌথ সমন্বয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত বিরতিহীন কাজ করে সম্পন্ন হয়েছে বিকল্প বাঁধ নির্মাণের কাজ।
সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত জনপদের রমণীরা উলধ্বনি দিয়ে এসময় তাদেরকে অভিভাদন জানান। প্রাণ ভরে দোয়া ও আশীর্বাদ করেন জনপদের সর্বস্তরের মানুষ।
এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান এস,এম, এনামুল হক জানান, ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়নটি তার পাশের। আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর দুর্বিসহ জীবন-যাপন দেখে তিনি খুবই মর্মাহত। যেহেতু স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে দু’বার বাঁধ দিয়েও তারা তা টেকাতে পারেনি,তাই ভ্রাতৃত্ববোধ ও বিবেকের তাড়নায় তিনি তাদের সহযোগীতায় এগিয়ে এসেছেন। এ সময় দ্বিজেন মন্ডল, ইউপি সদস্য সুপদ রায়, বিশ্বজিৎ মন্ডল, আশিষ হালদার,নিরাপদ কবিরাজ, ডালিম রায়, রাম টিকাদার, প্রশান্ত, উত্তমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল জানান, ছোটভাই পাশের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমার ইউনিয়ানের পানিবন্দি মানুষকে বাঁচাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি তার ঋণ কোনদিন শোধ করতে পারবোনা।