পরিবেশ দিবসে জনউদ্যোগের আলোচনা সভা

0
268

খবর বিজ্ঞপ্তি:
ধরিত্রীর পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য, বন ও বন্যপ্রাণীকে সুরক্ষার মাধ্যমে বাসযোগ্য বিশ্ব গড়তে মানুষকে সচেতন করা। বন ও বন্যপ্রাণীর সঙ্গে মানুষের জীবন ও জীবিকার যেমন প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে, তেমনি বন রক্ষার সঙ্গে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষাও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বিশ্বব্যাপী নির্বিচারে বনভূমি ধ্বংসের পাশাপাশি শিল্পোন্নত দেশগুলো কর্তৃক অনিয়ন্ত্রিত শিল্পায়নের মাধ্যমে অবাধে কার্বন নিঃসরণের ফলে শুধু জলবায়ু পরিবর্তনই হয়নি, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বন ও বন্যপ্রাণী হুমকির মুখে পড়েছে। নির্বিচারে বন ধ্বংসের ফলে বন্যপ্রাণী বিশেষ করে হাতি, বাঘসহ অনেক প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্তির হুমকির মুখে পড়ছে। পাশাপাশি শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে একের পর এক প্রাকৃতিক বনাঞ্চল উজাড় করায় ক্রমেই বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের ফলে সার্বিকভাবে কৃষি বিশেষ করে ধানসহ পানিনির্ভর কৃষির রোপণ প্রক্রিয়া এবং এর উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে প্রকৃতির ওপর নিভর্রশীল বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এভাবে বললেন জনউদ্যোগ,খুলনার আলোচনা সভায় বক্তারা।
বুধবার বেলা ১১টায় বিএমএ মিলনায়তনে জনউদ্যোগ,খুলনার উদ্যোগে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএমএ’র সভাপতি ডা: শেখ বাহারুল আলম। সঞ্চালন করেন এ্যাড: শামীমা সুলতানা শীলু। প্রবন্ধ পেশ করেন একুশে টেলিভিশনের বিভাগীয় প্রতিনিধি মহেন্দ্রনাথ সেন। ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে আলোচনায় যোগ দেন ঢাকা থেকে ডা. লেলিন চৌধুরী, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার ম জাভেদ ইকবাল, কালের কন্ঠের ব্যুরো প্রধান গৌরাঙ্গ নন্দী, মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান মোস্তফা জামাল পপলু। আলোচনা করেন নাগরিক সমাজের আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড: আ ফ ম মহসীন, সাবেক ছাত্রনেতা শরীফ শফিকুল হামিদ চন্দন, মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল নূর মোহাম্মদ, শেখ মফিদুল ইসলাম, খালিদ হোসেন, এফ এম ইকবাল, সৈয়দ আলী হাকিম, নরেশ চন্দ্র দেবনাথ, ডা: সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, এ্যাড: আফম মুস্তাকুজ্জামান মুক্তা প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন , খুলনায় পরিবেশ আদালত ছাড়া পরিবেশ সুরক্ষা করা কঠিণ। উপক‚লীয় অঞ্চলের জন্য গড়তে হবে স্থায়ী বাধ। যাতে করে সিডর আইলা আম্ফানের মত ঘূর্ণিঝড় উপক‚লকে না লন্ডভন্ড করতে পারে। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে সক্ষম পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন নির্বিচারে গাছ নিধন, উজান থেকে মিষ্টি পানিপ্রবাহে ঘাটতির কারণে লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এরই মধ্যে হুমকির সম্মুখীন; লবণাক্ততার ফলে সুন্দরী গাছের আগা মরে যাচ্ছে ব্যাপকভাবে। এ রোধ করতে হলে নিতে হবে নানা উদ্যোগ। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সুন্দরবনকে ঝুঁকিতে ফেলার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব বহুগুণে বৃদ্ধির সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব কারণে ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অভিযোজন ব্যয় আরো বেড়ে যেতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য কখনই কাম্য হতে পারে না। বক্তারা বলেন, কৃষিকাজ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানুষের জীবন-জীবিকার সুরক্ষা ও বিকাশে সীমিত বনভূমিসহ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনকে রক্ষা; খাবার পানির অন্যতম উৎস নদী, খাল-বিল রক্ষার পাশাপাশি কার্যকর জলবায়ু অভিযোজনের জন্য চাহিদা জোরদার করতে হবে।